নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০২ এএম, ১৯ নভেম্বর, ২০১৮
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট যখন গঠিত হয়েছিল তখন একে বলা হয়েছিল মাহাথির ফর্মুলা। আধুনিক মালয়েশিয়ার জনক মাহাথির মোহাম্মদ অবসরে গিয়েছিলেন, কিন্তু পরে তিনি আবার রাজনীতিতে ফিরে আসেন। ফিরে এসে তিনি তাঁর দলের অনাচার, অনিয়ম, দুর্নীতির বিরুদ্ধে দাঁড়ান এবং নিজেরই এক সময়ের শীষ্য নাজিব রাজাকের বিরুদ্ধে দাঁড়ান। আর এটি করতে গিয়ে মাহাথির তাঁর সময়ের প্রতিপক্ষের সঙ্গে হাত মেলান। কারান্তরীণ আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে হাত মেলানোর সময় তাঁদের মধ্যে একটি চুক্তি হয়েছিল যে জয়ী হলে দুই বছর মাহাথির প্রধানমন্ত্রী থাকবেন, এর মধ্যেই তিনি আনোয়ার ইব্রাহিমকে কারাগার থেকে মুক্ত করে আনবেন এবং তাঁর কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন।
বাংলাদেশে যখন রাজনৈতিক মেরুকরণ হলো, ড. কামাল হোসেনের কাছে বিএনপির নেতারা গিয়ে ধরনা দিলেন। তখন এটাকে ‘মাহাথির ফর্মুলা’বলা হলো। ‘মাহাথির ফর্মুলা’ বলা হচ্ছিলো কারণ ড.কামাল হোসেনের যে দলের মাধ্যমে রাজনীতিতে উত্থান সেই দলের বিরুদ্ধে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এবং খালেদা জিয়াকে আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে, যে তিনি জনপ্রিয় এবং এজন্য তাঁকে আটক করে রাখা হয়েছে। সরকারের নানা অনিয়ম, মানবতা বিরোধী কাজ, দুর্নীতি ইত্যাদির বিরুদ্ধে মাহাথির হিসেবে ড. কামাল হোসেনকে প্রতিস্থাপন করা হলো। অবশ্য ভিতরে ভিতরে তাঁদের যে যোগসাজশ এবং সমঝোতা সেখানে বলা হয়েছে যে ঐক্যফ্রন্ট যদি ক্ষমতায় আসে তাহলে ড. কামাল হোসেন দুই বছরের জন্য প্রধানমন্ত্রী হবেন এবং তিনি তখন খালেদা জিয়ার মুক্তির ব্যবস্থা করবেন। তারপর খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী হবেন।
কিন্তু, আমরা যদি মালয়েশিয়ার সঙ্গে তুলনা করি, মাহাথির মোহাম্মদ ছিলেন আধুনিক মালয়েশিয়ার জনক, প্রতিষ্ঠাতা এবং তাঁর হাত ধরেই মালয়েশিয়ায় একটা বিপ্লব ঘটেছিল এবং তুমুল জনপ্রিয়তার মধ্য দিয়ে তিনি অবসর নিয়েছিলেন। ড. কামাল হোসেনের ক্ষত্রে ঘটনাটা তা নয়। ড. কামাল হোসেন রাজনীতিতে অভিষিক্ত হয়েছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে। বঙ্গবন্ধুর ছেড়ে দেওয়া একটি আসনে নির্বাচনে জয়ী হওয়া ছাড়া তাঁর রাজনৈতিক জীবনে কোনো সাফল্য নেই। এরপর তিনি তিনটি নির্বাচন করেছেন, তবে তিনবারই তাঁর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। কাজেই ফর্মুলা যেটাই হোক না কেন, ড. কামাল হোসেন মাহাথির না, তাঁর রাষ্ট্রক্ষমতা পরিচালনা করার কোনো অভিজ্ঞতাই নেই। তিনি জাতির পিতার সাড়ে তিন বছরের শাসনামলে অর্ধেক সময় ছিলেন আইনমন্ত্রী, অর্ধেক সময় ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। জাতির পিতার মৃত্যুর পরও তাঁর কোনো বলিষ্ঠ ভূমিকাও চোখে পড়েনি।
আবার যে আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে খালেদা জিয়ার তুলনা করা হচ্ছে সেই তুলনাও ভিত্তিহীন। আনোয়ার ইব্রাহিম মাহাথিরের দল করত এবং মাহাথির তাঁকে উত্তরাধিকার শীষ্যের মর্যাদা দিয়েছিলেন এবং তাঁকে উপপ্রধানমন্ত্রীও করেছিলেন। কাজেই আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গেও খালেদা জিয়ার তুলনা করাটাও অবান্তর। বরং রাজনীতিতে এখন যে ঘটনা প্রবাহগুলো চলছে সে ঘটনা প্রবাহে শেখ হাসিনাকেই এখন মাহাথিরের সঙ্গে তুলনা করা যায়। কারণ:
১. মাহাথির যেমন ব্যর্থ, একটি অনুন্নত রাষ্ট্র থেকে মালয়েশিয়াকে উন্নয়নের মহাসড়কে নিয়ে গিয়েছিলেন, দেশটিকে আকর্ষণীয় করে তুলেছিলেন, একই ভাবে শেখ হাসিনাও বাংলাদেশকে একটি ক্ষুধা, দারিদ্রের রাষ্ট্র থেকে, মোটামুটি ব্যর্থ একটি রাষ্ট্র থেকে আজ বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন।
২. মাহাথির যখন মালয়েশিয়ায় রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল তখন তাঁকে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে যুদ্ধ করতে হয়েছিল। বিশ্বব্যাংক মালয়েশিয়ায় অর্থায়ন বন্ধ করেছিল এবং মাহাথিরও মালয়েশিয়ায় বিশ্বব্যাংকের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছিলেন। ঠিক তেমনিভাবে বাংলাদেশের উন্নয়নের ক্ষেত্রেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বব্যাংককে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিলেন। বিশ্বব্যাংক যখন পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির অভিযোগ এনেছিল, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তখন বিশ্বব্যাংককে চ্যালেঞ্জ করে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর কাজ শুরু করেছিলেন।
৩. মাহাথির যেমন একটি মুসলিম প্রধান রাষ্ট্রের প্রধান হয়েও সেদেশে জঙ্গিবাদ এবং সন্ত্রাসবাদ দমনের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছিলেন ঠিক সেরকমক ভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ দমনে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন।
৪. মালয়েশিয়ায় যেমন মাহাথিরের এত উন্নয়ন এবং ভালো কাজের পরও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মাহাথির ফোবিয়ায় ভুগত এবং মাহাথির কঠোর, নিষ্ঠুর, বিরোধী দলের প্রতি দমননীতি গ্রহণ করেন, সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা নেই ইত্যাদি নানারকম সমালোচনা ও অভিযোগ করত পশ্চিমা বিশ্ব। ঠিক তেমনি ভাবে ইদানীংকালে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ উত্থাপন করার চেষ্টা করে কেউ কেউ। কাজেই মাহাথির যেমন শেষ বিচারে দলের উর্ধ্বে উঠে গিয়েছিলেন, দলের চেয়ে তাঁর একক জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বী ছিল, মালয়েশিয়ায় তিনি অবিসংবাদিত নেতায় পরিণত হয়েছিলেন ঠিক তেমনি ভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন দলের উর্ধ্বে উঠে গেছেন। যে কোনো বিচারে, যে কোনো জরিপে তিনিই বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যক্তি এবং দলের উর্ধ্বে তিনি বাংলাদেশের একজন অবিসংবাদিত নেতা হয়েছেন। শেখ হাসিনার চরম শত্রুও বিশ্বাস করে বাংলাদেশের উন্নয়নের যে ধারা তিনি ছাড়া তা ব্যাহত হতেই পারে। বিশেষ করে সম্প্রতি রাজনৈতিক সংলাপ এবং কয়েকটি ঘটনাতে তিনি একটি বিষয় প্রমাণ করেছেন, দলের উর্ধ্বে উঠে একজন রাষ্ট্রনায়োকোচিত নেতায় পরিণত হয়েছেন। মাহাথির যেমন, জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থেকে অবসর গ্রহণ করেছিলেন সেরকম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও ঘোষণা করেছেন যে, ‘এই নির্বাচনই আমার শেষ নির্বাচন। এই নির্বাচনের পরে আমি অবসরে যাবো।’ মাহাথির যেমন রাজনীতিতে অবসরের পরে জাতির বিবেক এবং অভিভাবক হিসেবে সবকিছু পর্যবেক্ষণ করেছেন, সবকিছুর উপর নজর রেখেছেন, যখন প্রয়োজন হয়েছে তিনি আবার ফিরে এসেছেন। তেমনি, শেখ হাসিনাও এই নির্বাচনের পর টুঙ্গিপাড়ায় চলে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেছেন। অবশ্য, চলে গেলেও তিনি জনগণের কণ্ঠস্বর হিসেবেই থাকবেন বলে আশা সবার।
ড. কামাল হোসেন নাকি শেখ হাসিনা এই দুই বিবেচনায় বাংলাদেশের মানুষকে যদি নির্বাচন করতে বলা হয় তাহলে বাংলাদেশের মানুষ শেখ হাসিনাকেই মাহাথির হিসেবে নির্বাচন করবে। মাহাথিরের মতই জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও রাজসিক একটা অবসর নিবেন আগামী মেয়াদের দায়িত্ব পালন শেষে এবং বাংলাদেশের প্রকৃত অভিভাবক হিসেবেই তিনি থাকবেন সবসময়।
বাংলা ইনসাইডার/এসআর/জেডএ
মন্তব্য করুন
ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন শাজাহান খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি যেকোনো উপায়ে ক্ষমতায় আসার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। তাদের নেতারা হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খানের স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। বিবৃতিতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিবৃতির নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি।
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের কাতারে দাঁড়িয়ে রাজনীতি করে; জনকল্যাণে পরিকল্পনা গ্রহণ ও কর্মসূচি নির্ধারণ করে। আমরা সর্বদা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ। অন্যদিকে বিএনপি গণবিরোধী রাজনীতি করে আসছে। রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকাকালে তারা জনগণকে শত্রুজ্ঞান করে শাসন-শোষণ ও অত্যাচারের স্টিম রোলার চালিয়েছিল। সন্ত্রাস ও উগ্র-জঙ্গিবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করে সারাদেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। আর এখন সাংবিধানিকভাবে বৈধ ও গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগারের মাধ্যমে বিভ্রান্তি ও নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা করে জনগণকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে ক্ষমতায় যাওয়ার অপচেষ্টা করছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি গণবিরোধী রাজনীতি করে আসছে। রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকাকালে তারা জনগণকে শত্রুজ্ঞান করে শাসন-শোষণ ও অত্যাচারের স্টিম রোলার চালিয়েছিল। সন্ত্রাস ও উগ্র-জঙ্গিবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে সারা দেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। আর এখন সাংবিধানিকভাবে বৈধ ও গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগারের মাধ্যমে বিভ্রান্তি ও নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা করে জনগণকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে ক্ষমতায় যাওয়ার অপচেষ্টা করছে।
বিএনপি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে সরকারবিরোধী তথাকথিত আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস-সহিংসতার পথ বেছে নেয় বলে দাবি করে কাদের বলেন, বিএনপি ও তার দোসরদের সন্ত্রাসী ও ক্যাডারবাহিনী সরকারের সুসমৃণ পথচলা এবং দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত করার লক্ষ্যে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের মাধ্যমে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে। তাদের প্রধান লক্ষ্যবস্তু দেশের জনগণ ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা প্রত্যক্ষ করেছি, পূর্বের ধারাবাহিকতায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচালের নামেও তারা অগ্নি সন্ত্রাসের মাধ্যমে নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করেছে। আর দেশের আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী ও মহামান্য আদালত জনগণের নিরাপত্তা ও শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় পদক্ষেপ গ্রহণ করলে বিএনপি নেতারা সেটাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা চালায়।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি প্রকৃতপক্ষে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন, সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়া তাদের নীতিগত সিদ্ধান্ত। বিএনপি ক্ষমতায় থেকে নিজেদের সন্ত্রাসী ও ক্যাডারবাহিনীর পাশাপাশি বাংলা ভাইয়ের মতো দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীর সৃষ্টি করেছিল এবং তাকে রক্ষা করার জন্য’ বাংলা ভাই মিডিয়ার সৃষ্টি’ বলে উড়িয়ে দিয়েছিল। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিচালিত সরকার জনগণের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নিতে বদ্ধপরিকর।
বিবৃতিতে কাদের বলেন, শেখ হাসিনা জগদ্দল পাথরের মতো জেঁকে বসা বিচারহীনতার সংস্কৃতির অর্গল ভেঙে বিচারের সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। সন্ত্রাসী বা অপরাধী যে-ই হোক তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। রাজনৈতিক বক্তব্যের আড়ালে সন্ত্রাসীদের রক্ষার অপকৌশল সফল হবে না।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ক্ষমতা বিএনপি
মন্তব্য করুন
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তকে
উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে উপজেলার বিএনপিপন্থি দুই প্রার্থীকে
শোকজ করা হয়েছে।
বিএনপি থেকে শোকজ করা দুই প্রার্থী হলেন, চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী
উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর
রহমান তুষার (কাপ পিরিচ প্রতীক) ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসা (চশমা প্রতীক)।
গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র অফিসিয়াল
প্যাডে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর
নোটিশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৫ এপ্রিল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির
সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিএনপি নেতা হিসেবে
আপনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। নির্বাচনে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার এহেন মনোবৃত্তি সম্পূর্ণরূপে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং দলের
প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা।
দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে জালিয়াতির নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য
আপনার বিরুদ্ধে কেন দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা
হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যকোনো মাধ্যমে পত্র প্রাপ্তির কিংবা ফোনে অবহিত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার
মধ্যে যথাযথ কারণ দর্শিয়ে একটি লিখিত জবাব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় বরাবর
নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাচনে
চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়নের সাবেক
চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান তুষার বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলীয়ভাবে কারণ
দর্শানোর নোটিশ হাতে পেয়েছি। যথাযথ সময়ে আমি নোটিশের জবাবও দেব। তবে ৮ মে উপজেলা পরিষদ
নির্বাচনে আমি জনগণের চাপে পড়ে প্রার্থী হয়েছি। দলীয় সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, জনগণের
ভালোবাসা, দোয়া ও সমর্থন নিয়ে শেষ পর্যন্ত আমি নির্বাচনী মাঠে থাকব। আমি টানা ১৯ বছর
বয়ড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবা করেছি। যার ফলে পুরো উপজেলায় আমার
একটা অবস্থান রয়েছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ আমাকে ভালোবাসে। তাদের ভালোবাসা ও দোয়া
নিয়েই আমি আগামীতে পথ চলতে চাই। আশা করি, এ নির্বাচনে আপামর জনগণ আমার পাশে থাকবে এবং
নির্বাচনে ভালো কিছু হবে, ইনশাআল্লাহ।
তবে বিএনপিপন্থি ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসাকে একাধিকবার মুঠোফোনে
কল দিলেও রিসিভ হয়নি।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে ফেঁসে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান। তবে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেও নীতিমালার কারণে বেঁচে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন এবং যারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি যেকোনো উপায়ে ক্ষমতায় আসার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। তাদের নেতারা হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খানের স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। বিবৃতিতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিবৃতির নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি।
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।