ইনসাইড পলিটিক্স

নিম্নমুখী জনপ্রিয়তায় শরিকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ১৯ নভেম্বর, ২০১৮


Thumbnail

আওয়ামী লীগ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রার্থী মনোনয়ন মোটামুটি চূড়ান্ত করে ফেলেছে। জাতীয় সংসদে নিজেদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখতে সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে মনোনয়ন বিন্যাস করছে দলটি। কিন্তু বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকায় শরিকদের নড়বড়ে অবস্থান আওয়ামী লীগের জন্য দুশ্চিন্তা কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বর্তমানে দেশীয় রাজনীতিতে আওয়ামী নেতৃত্বাধীন দুটি জোটের অস্তিত্ব রয়েছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে ১৪ দলীয় জোট এবং আরেকটি সাবেক প্রেসিডেন্ট এরশাদের জাতীয় পার্টিসহ আরও কয়েকটি দল নিয়ে মহাজোট । আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, দুই জোটের শরিক দলের প্রার্থীদের কেউই শক্তিশালী অবস্থানে নেই যা নিয়ে আওয়ামী লীগ বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছে।

এবার আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে জনমতকে। একটি নির্দিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় যার জনপ্রিয়তা বেশি তাঁকেই মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা অনুযায়ী মনোনয়ন দিতে গিয়ে শরিক দলগুলোর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নেতাকে বিবেচনা করতে পারছে না আওয়ামী লীগ। দলটির একাধিক নীতিনির্ধারক জানিয়েছেন, ১৪ দলের শরিকদের মধ্যে যাঁরা বর্তমানে নির্বাচিত এমপি হিসেবে আছেন তাঁদের প্রত্যেকের অবস্থাই নাজুক। আওয়ামী লীগ পরিচালিত জরিপে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। জরিপ অনুযায়ী, এই নেতাদের জনপ্রিয়তা আগের তুলনায় তো বাড়েইনি বরং কমেছে। বিশেষ করে সংশ্লিষ্ট এলাকায় শরিক দলের হেভিওয়েট নেতাদের অবস্থান সবচেয়ে শোচনীয় বলে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন জরিপে উঠে এসেছে।

এই হেভিওয়েট নেতাদের মধ্যে অন্যতম আওয়ামী লীগের অন্যতম শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। মেনন গত নির্বাচনে ঢাকা- ৮ আসন থেকে মনোনয়ন পান এবং বিজয়ী হন। কিন্তু সর্বশেষ জরিপে দেখা যাচ্ছে, মেনন যে শুধু এবার জনপ্রিয়তার দৌড়ে পিছিয়ে আছেন তাই নয়, তিনি এই আসনের আলোচিত প্রার্থীও নন। একাদশ নির্বাচনে যদি তাঁকে মনোনয়ন দেওয়া হয় তাহলে তাঁর সম্বল হবে শুধু নৌকা প্রতীক। নৌকা প্রতীক না পেলে এই আসনে তাঁর জামানত থাকবে কিনা তা নিয়েও সন্দেহ আছে।

ওয়ার্কার্স পার্টির আরেক নেতা ফজলে হোসেন বাদশা রাজশাহী- ২ আসনের বর্তমান এমপি। তিনি ছাত্রজীবনে রাকসুর ভিপি ছিলেন। রাজশাহীতে এক সময় তাঁর ব্যাপক জনপ্রিয়তা ছিল। কিন্তু সেদিন এখন অতীত। বাদশার জনপ্রিয়তায় এখন ভাটার টান। টানা দুই মেয়াদে এমপি থাকার পরও ওয়ার্কার্স পার্টির এই নেতার জনপ্রিয়তা বাড়েনি বরং স্থানীয় আওয়ামী লীগের সঙ্গে নানারকম কোন্দল ও গ্রুপিংয়ে জড়িয়ে পড়ে নিজ এলাকায় তাঁর অবস্থান এখন সংশায়চ্ছন্ন।

একই অবস্থা আওয়ামী লীগের আরেক শরীক দল জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদেরও। ২০০৮ সালে জাসদ যখন ১৪ দলে যোগ দেয় তখন হাসানুল হক ইনুর নেতৃত্ব একটিই জাসদ ছিল। কিন্তু সময়ের আবর্তনে জাসদ ভেঙে গিয়ে বর্তমানে শরীফ নুরুল আম্বিয়ার নেতৃত্বে একটি এবং হাসানুল হক ইনুর নেতৃত্বে আরেকটি জাসদের সৃষ্টি হয়েছে। উল্লেখ্য যে, ভোটের মাঠের জনপ্রিয়তায় দুই জাসদের হেভিওয়েট প্রার্থীদের অবস্থাই খারাপ। এর মধ্যে কুষ্টিয়া- ২ আসনের এমপি হাসানুল হক ইনু এলাকায় জনপ্রিয়। কিন্তু এলাকায় তাঁর বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচারণা করছেন আওয়ামী লীগেরই একজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। ওই যুগ্ম সম্পাদক তাঁর ভাইকেও ওই আসনে মনোনয়ন পত্র কিনিয়েছেন। জরিপে দেখা গেছে, তথ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বগ্রহণ করার পর ইনু অনেকবার এলাকায় গেছেন এবং ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছেন। কিন্তু তারপরও তাঁর জনপ্রিয়তায় ভাটার টান কাটেনি । সব মিলিয়ে তাই তথ্যমন্ত্রীর আসনও এখন পর্যন্ত নিশ্চিত নয়।

জাসদের আরেক নেত্রী বেগম শিরীন আখতার গতবার ফেনী- ১ আসন থেকে মনোনয়ন পান এবং এমপি নির্বাচিত হন। কিন্তু বর্তমানে এলাকায় তাঁর অবস্থান অত্যন্ত দুর্বল, স্থানীয় আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট নেতাকর্মীদের তুলনায় জনপ্রিয়তার দৌড়ে অনেক পেছনে আছেন তিনি।

জাসদ বিভক্ত হওয়ার পর শরীফ নুরুল আম্বিয়ার নেতৃত্বাধীন জাসদের আরেক নেতা মইন উদ্দীন খান বাদল চট্টগ্রাম- ৮ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হন। তবে শারীরিক অসুস্থতা ও অন্যান্য নানা কারণে এখন এলাকায় তাঁর কর্মী বাহিনী নেই। একথা ঠিক যে, এলাকায় মইন উদ্দীন খান বদলের ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা আছে। কিন্তু একক ক্ষমতায় নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার মতো ক্ষমতা তাঁরও নেই।

জাসদের এই অংশের আরেকজন নেতা নাজমুল হক প্রধান বর্তমানে পঞ্চগড়- ১ এলাকার এমপি। কিন্তু প্রধানের নির্বাচনী এলাকায় জাসদ আওয়ামী লীগের কাছে কোণঠাসা। এছাড়া এলাকায় বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য তাঁর জনপ্রিয়তা তো বাড়েইনি বরং কমে এসেছে বলে আওয়ামী লীগের জরিপে উঠে এসেছে।

উপরে উল্লেখিত নেতারা সবাই ১৪ দলীয় জোটের অংশ। এছাড়া আওয়ামী লীগ মহাজোটের নেতৃত্বেও রয়েছে। গত ১০ বছরে মহাজোটের প্রধান দল জাতীয় পার্টি বিরোধী দলের ভূমিকায় থেকেও সরকারের সব সুযোগ সুবিধা ভোগ করেছে। এই বাস্তবতা জনগণের মধ্যে প্রচণ্ড নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এছাড়া রংপুর অঞ্চল ও সিলেটের কিছু অঞ্চল ছাড়া এরশাদের জাপার কোথাও কোনো অস্তিত্ব সেরকমভাবে নেই। ফলে গত এক দশকে এরশাদের জাপা এক রকম আঞ্চলিক দলে পরিণত হয়েছে বলা যায়। বিশেষ করে সংসদে জাতীয় পার্টি সরকারের চেয়ে আলাদা কোন অবস্থান নিতে না পারা, সরকারের সঙ্গে দলটির সম্পর্ক নিয়ে অস্পষ্টতা, জাপা সভাপতি এরশাদের বিভিন্ন ইস্যুতে একেকবার একেকরকম অবস্থান এবং পরস্পর বিরোধী কথাবার্তা জাতীয় পার্টির জনপ্রিয়তা অনেক কমিয়ে দিয়েছে। কিন্তু জাতীয় পার্টি আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কাছে সর্বোচ্চ ১০০টি ও সর্বনিম্ন ৫০টি আসন দাবি করেছে। অথচ সর্বশেষ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে যে জরিপ করা হয়েছে তাতে দেখা গেছে, জাপার প্রার্থীদের ১৫ থেকে ২০টির বেশি আসনে জয়ের সম্ভাবনা নেই।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এবার ভাগ-বাটোয়ারার ভিত্তিতে শরিকদের আসন দিতে আগ্রহী নন। তিনি চান, এবার শরিকদের আসন দেওয়া হবে জনপ্রিয়তার ভিত্তিতে। যাঁরা নিজ এলাকায় জনপ্রিয়, যাঁরা নির্বাচনে বিজয়ী হতে পারবেন এমন প্রার্থীদেরই মনোনয়ন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতির এমন সিদ্ধান্তে অনেক শরিক দলই সম্ভবত বিপদে পড়তে যাচ্ছেন।

গত এক দশকে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা বেড়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা বেড়ে হয়েছে আকাশচুম্বী। কিন্তু এই এক দশকের পুরো সময়টাতে ১৪ দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকলেও ওই দলগুলোর হেভিওয়েট প্রার্থীদের জনপ্রিয়তা ক্রমশ নিম্নমুখী। এত সুযোগ সুবিধা পাওয়ার পরও এবং এত দীর্ঘ সময় জনগণের সেবা করার সুযোগ পাওয়ার পরও কেন শরিক দলগুলোর হেভিওয়েট প্রার্থীদের জনপ্রিয়তা কমেছে তা নিয়ে আওয়ামী লীগ তো বটেই শরিকরাও উদ্বিগ্ন।

বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি/জেডএ  



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপিতে গণ বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত

প্রকাশ: ১০:৩০ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। 

অবশ্য এসব প্রার্থীর অনেকে এটি ‘দলীয় নির্বাচন নয়’ বলে দাবি করছেন, আবার কেউ কেউ ‘জনগণ তাদের চাচ্ছে’– এমন অজুহাত দেখাচ্ছেন। এমনকি দল থেকে বহিষ্কার হতে পারেন– সেই ভয় উপেক্ষা করেই নিজেদের এ অবস্থান জানান দিচ্ছেন তারা। আবার অনেকের দলে কোনো পদপদবিও নেই। অনেকে বহিষ্কৃত। এর পরও যারা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন, তাদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিএনপি হাইকমান্ড। শিগগির এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হবে বলেও জানা গেছে।

বিএনপির সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এ সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না বিএনপি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের মতো দলের এমন সিদ্ধান্ত স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও বাস্তবায়ন করছে দলটি। এ জন্য দফায় দফায় তৃণমূল নেতাকর্মী ছাড়াও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গেও দফায় দফায় বৈঠক করেন নেতারা। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে নেতারা এই নির্বাচনে না যাওয়ার পক্ষে মত তুলে ধরেন। সেখানে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী ইচ্ছুকদের প্রথমে কাউন্সেলিং, নির্বাচনে না যাওয়ার আহ্বানের পাশাপাশি দলের কঠোর অবস্থানের বিষয়টি তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নেন নেতারা। এর পরও যারা সিদ্ধান্ত অমান্য করবেন, তাদের বিষয়ে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি আগেই উচ্চারণ করেছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা। 

এদিকে গত সোমবার রাতে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয়। সেখানে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারীদের বহিষ্কারের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়। তবে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী নেতারা বলছেন, স্থানীয় জনগণের চাপে তারা নির্বাচনে অংশ নিতে বাধ্য হয়েছেন। তাছাড়া যেহেতু এবার দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হচ্ছে না তাই তারা স্বতন্ত্র ভাবে নির্বাচন করছেন। আর তাই বহিষ্কারের বিষয়টি তারা আমলে নিচ্ছে না। তবে দল তাদের ব্যাপারে নমনীয় সিদ্ধান্ত নেবেন এমনটাও প্রত্যাশা নেতাকর্মীদের।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দিনাজপুর জেলার একটি উপজেলার বিএনপির প্রার্থী বলেন, মনোনয়নপত্র দাখিল করার পরে দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে নির্বাচনে না যাওয়ার। সে ক্ষেত্রে নির্বাচন করব, দল যদি কোনো সিদ্ধান্ত নেয় নেবে।

বিএনপি   গণ বহিষ্কার   উপজেলা নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ওবায়দুল কাদেরের পদত্যাগ চাওয়ায় থানায় জিডি

প্রকাশ: ০৮:৪০ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের পদত্যাগ চাওয়ায় যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগের সভাপতি মোহাম্মদ হানিফ ওরফে খোকন এ জিডি করেন।

জিডিতে বলা হয়েছে, গত ২০ এপ্রিল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ঈদ যাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। এই সংবাদ সম্মেলনে সাংগঠনটির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেছেন, ‘সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ২০ বছর যাবৎ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু তিনি পরিবহন সেক্টরে কোনো কাজ করেন নাই।’ 

একপর্যায়ে মোজাম্মেল হক চৌধুরী আরও বলেন, ‘যেহেতু আমাদের দেশে পদত্যাগের সংস্কৃতি নেই। সেহেতু মন্ত্রী ইচ্ছা করলে ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে পদত্যাগ করতে পারেন।’

জিডিতে শ্রমিক লীগের ওই নেতা আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি যাত্রীদের কল্যাণ করবে এটাই তাদের কাজ। কিন্তু সুপরিকল্পিতভাবে মোজাম্মেল হক চৌধুরী সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। এতে মন্ত্রীর সম্মান ক্ষুণ্ন হয়েছে। কারণ বর্তমান সরকার টানা চতুর্থবারের মতো রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আছেন। এখন সরকারের ক্ষমতা থাকার বয়স ১৫ বছর ৩ মাস। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী সেখানে ২০ বছর মন্ত্রী থাকেন কীভাবে? মোজাম্মেল হক চৌধুরী সুপরিকল্পিতভাবে মন্ত্রী ও সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করেছেন। এই মিথ্যাচারের বক্তব্যগুলো দেশের স্যাটেলাইট টেলিভিশনসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছে। তার এই মিথ্যা ও বানোয়াট বক্তব্যে সরকারের সুনাম ক্ষুণ্ন ও মন্ত্রীর মানহানি হয়েছে। তাই বিষয়টি ভবিষ্যতের জন্য জিডি করে রাখা একান্ত প্রয়োজন।’

ওবায়দুল কাদের  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

‘আপনি কখনোই কোনো কথা শোনেন না, এটা ঠিক না’

প্রকাশ: ০৭:৪০ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের। 

গতকাল সন্ধ্যার পর ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে দেখা করতে তার কক্ষে যান শাজাহান খান। এ সময় তার উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আপনি তো কথা শুনলেন না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তও মানলেন না।’

এ সময় সেখানে উপস্থিত কেন্দ্রীয় নেতারা তিরস্কার করেন শাজাহান খানকে।

জানা গেছে, শাজাহান খান এক পর্যায়ে দলের সাধারণ সম্পাদকের উদ্দেশে বলেন, রাজনীতির ধারাবাহিকতায় ছেলে আসিবুর রাজনীতিতে এসেছে। এ জন্যই সে প্রার্থী হয়েছে। জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী ও এমপির স্বজনের নির্বাচন না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। প্রতিউত্তরে শাজাহান খান বলেন, অনেকেরই নিকটাত্মীয় রাজনীতিতে আছেন।

ওবায়দুল কাদের এ সময় শাজাহান খানকে বলেন, ‘আপনি কখনোই কোনো কথা শোনেন না। এটা ঠিক না।’ এর জবাবে শাজাহান খান বলেন, ‘আপনার সিদ্ধান্ত দেরিতে জানিয়েছেন। আগে জানালে ভালো হতো।’ তখন ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সিদ্ধান্তটি আমার নয়। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) কোন সিদ্ধান্ত কখন দেবেন, সেটা কি আমাদের জিজ্ঞাসা করে দেবেন?’

শাজাহান খানের উচ্চস্বরে কথা বলা নিয়ে উপস্থিত নেতাকর্মীরা বিস্ময় প্রকাশ করেন। এ নিয়ে বিরক্ত হন ওবায়দুল কাদেরও। তিনি শাজাহান খানের উদ্দেশে বলেন, ‘এখানে দলের অনেক নেতাকর্মী রয়েছেন। এর পরও আপনি সবার সামনে এসব অপ্রিয় কথা কেন বলছেন?

এ সময় নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দুই সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, কার্যনির্বাহী সংসদের দুই সদস্য আনিসুর রহমান ও সাহাবুদ্দিন ফরাজী, মশিউর রহমান হুমায়ুন, মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী লোটন, বলরাম পোদ্দার এবং শাহজাদা মহিউদ্দিন।

ওবায়দুল কাদের   শাজাহান খান  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ভিডিও ভাইরাল হওয়া সেই চামেলীকে অব্যাহতি

প্রকাশ: ০৭:৩১ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর শৃঙ্খলার পরিপন্থি কর্মকাণ্ডের অভিযোগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ২০ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের নারী কাউন্সিলর ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য সৈয়দা রোকসানা ইসলাম চামেলীকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজের স্বাক্ষর করা এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়েছে, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ একটি সুসংগঠিত ও সুশৃঙ্খল সংগঠন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফী ও সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির গঠনতন্ত্রের ৪৭(৯) ধারা মোতাবেক ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য সৈয়দা রোকসানা ইসলাম চামেলীকে সংগঠনের শৃঙ্খলার পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার কারণে পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন।
 
এর আগে ওই নারী কাউন্সিলরের একটি নগ্ন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। কয়েকদিন ধরে নগর আওয়ামী লীগ ও কেন্দ্রীয় নেতাদের হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিওটি ঘুরপাক খায়। যা নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

আওয়ামী লীগ   ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন   রাজনীতি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ভুল কৌশলের মাশুল গুনছে আওয়ামী লীগ?

প্রকাশ: ০৬:২৬ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আওয়ামী লীগের অতীতে নেয়া কিছু সিদ্ধান্ত বা ঘটনা এর জন্য দায়ী হতে পারে। উদাহরণ দিয়ে কেউ কেউ বলছেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে একাধিকবার দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছিল। কিন্তু পরে আবার তাকে দলে ফিরিয়ে আনা হয়। জাহাঙ্গীর আলমকে প্রথমবার বহিষ্কার করার পর যখন দলে ফিরিয়ে আনা হয় পরে দ্বিতীয়বার তিনি আবার একই ভুল করলেও তাকে সাধারণ ক্ষমা দিয়ে দলে ফেরত আনা হয়। বিষয়টি সে সময় আওয়ামী লীগের অনেক তৃণমূল নেতাকর্মীই ভালো ভাবে নেয়নি। 

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, মেয়র জাহাঙ্গীরের মতো একাধিক ঘটনা অতীতে আওয়ামী লীগে ঘটেছে। ফলে নেতাকর্মীদের মধ্যে এক ধরনের ধারণা তৈরি হয়েছে যে, প্রথমে দল তাদেরকে বহিষ্কার করলেও পরে তারা সাধারণ ক্ষমা পেয়ে আবার দলে ফেরত আসার সুযোগ পাবেন। আর সে কারণেই দলের নির্দেশনা থাকলেও সেটা অমান্য করে তারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি বলে মনে করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাছাড়া স্থানীয় রাজনীতিও নিয়ন্ত্রণ করে এমপিরা। সেখানে এমপিরাই যখন তাদের পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের মনোনয়ন দিচ্ছেন তাহলে তো কোন কথাই নাই। অতীতে আওয়ামী লীগ শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য কঠোর পদক্ষেপ নিলে দলের চেইন অব কমান্ড এভাবে ভেঙে পড়ত না। আওয়ামী লীগকে এখন ভুল কৌশলের মাশুল গুনছে হচ্ছে।

এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বাংলা ইনসাইডারকে বলেন, দলীয় নির্দেশনার পরও যেসব এমপি-মন্ত্রীর আত্মীয়স্বজনরা নিজেদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেননি, তাদের নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার সময় কিন্তু এখনো শেষ হয়ে যায়নি। আমরা বিশ্বাস করি, দলীয় নির্দেশনা মেনে তারা নিজেদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেবেন। তবে কেউ যদি শেষ পর্যন্ত দলীয় নির্দেশনা না মানেন তাহলে অবশ্যই দল তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। দলের নিয়মনীতি ও গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাদের (এমপি-মন্ত্রীদের আত্মীয়দের) বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এটাই আওয়ামী লীগের দলীয় সিদ্ধান্ত।

তিনি আরও বলেন, কেউ যদি জাহাঙ্গীর আলমের বিষয়টি থেকে অনুপ্রাণিত হন তাহলে তিনি ভুল করছেন। এরা অচিরেই রাজনীতিতে হারিয়ে যাবে। দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে বা গঠনতন্ত্র উপেক্ষা করে কেউই এখন পর্যন্ত রাজনীতির চরম শিখরে পৌঁছাতে পারেনি। বরং যিনি দলের প্রতি অবিচল থেকেছেন, দলের সিদ্ধান্তকে মান্য করেছেন, দলের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি তারা ধাপের ধাপে রাজনীতিতে উন্নতি করেছেন দেশের জন্য অবদান রাখতে পেরেছেন, জনগণের নেতাতে পরিণত হয়েছেন, রাজনীতিতে অমরত্ব লাভ করেছেন। 

আওয়ামী লীগ   উপজেলা নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন