নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:০০ পিএম, ২১ নভেম্বর, ২০১৮
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে সমস্যা ও সংকট কাটছেই না বিএনপির। বিএনপির অনেক নেতাকর্মী বিভিন্ন মামলায় দণ্ডিত হওয়ার কারণে নির্বাচনে অযোগ্য হয়ে পড়ায় এবং মামলা ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কারণে অনেকে পলাতক থাকায় এবারের নির্বাচনে ৩০০ প্রার্থী যোগাড় করা ছিল বিএনপির জন্য বড় একটি চ্যালেঞ্জ। এসব বিবেচনায় নির্বাচনে নিজেদের শক্ত অবস্থান তৈরি করার জন্য এবং যাঁরা নির্বাচনে অযোগ্য হয়ে পড়েছেন তাঁদের বদলে ভালো প্রার্থী দেওয়ার জন্য সংস্কারপন্থীদের জন্য দরজা উন্মুক্ত করে দিয়েছিল বিএনপির নীতিনির্ধারকরা। কিন্তু এই সংস্কারপন্থীদের ব্যাপারে তৃণমূল থেকে থেকে তীব্র আপত্তি আসায় সমাধানের বদলে সংকট আরও ঘনীভূত হয়েছে বিএনপির।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, গত তিন মাসে ১২৩ জন সংস্কারপন্থী বিএনপিতে যোগদান করেছেন। এদের মধ্য থেকে কমবেশি ৭২ জন মনোনয়ন পাবেন বলে বিএনপির একাধিক নেতা মনে করছেন। কিন্তু এই সংস্কারপন্থীদের দলে প্রবেশ ও মনোনয়ন দেওয়া নিয়ে বিএনপিতে নতুন সংকট সৃষ্টি হয়েছে। যেসব সংস্কারপন্থী মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন তাঁদেরকে সংশ্লিষ্ট এলাকায় নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন বিএনপির তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। তৃণমূলের নেতাকর্মীরা বলেছেন, যাঁরা দীর্ঘদিন বিএনপির বিরুদ্ধে কাজ করেছেন এবং যাঁরা ওয়ান-ইলেভেনের সময় খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়াকে মাইনাস করতে চেয়েছিলেন তাঁরা যদি এখন উড়ে এসে জুড়ে বসে দলের নেতৃত্ব নেয় কিংবা নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন পায়, তবে তাঁদের প্রতিহত করার জন্য কারও নির্দেশনার প্রয়োজন হবে না।
জানা গেছে, বিএনপির সংস্কারপন্থী নেতা বরিশালের জহিরউদ্দিন স্বপন, বগুড়ার গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ, পাবনার মঞ্জুর কাদের, বাকেরগঞ্জের শহীদুল আলম জামালকে এরই মধ্যে তাঁদের স্ব স্ব নির্বাচনী এলাকায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে।
তৃণমূলের নেতাকর্মীদের বক্তব্য, তাঁরা বিএনপির দুর্দিনে কষ্ট করেছেন, ঝড়-ঝাপটার মধ্যে বিএনপিকে আগলে রেখেছেন। এতদিন পর এসে এখন যদি সংস্কারপন্থীরা নেতৃত্ব পান সেটা বরদাশত করা হবে না। সংস্কারপন্থীদের সব জায়গায় কঠোরভাবে প্রতিহত করবেন তাঁরা। যেখানেই সংস্কারপন্থীদের মনোনয়ন দেওয়া হবে সেখানেই বিএনপির ত্যাগী ও পরীক্ষিত একজন নেতাকে বিকল্প প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করানো হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।
প্রার্থী সংকট সামলাতে গিয়ে দলে সংস্কারপন্থীদের যোগদানের অনুমতি দিয়েছিল বিএনপির হাই কমান্ড। কিন্তু সংস্কারপন্থীদের উপস্থিতির কারণে যে নতুন সংকট তৈরি হয়েছে তা সামাল দিতেই বিএনপির নীতিনির্ধারকরা এখন হিমশিম খাচ্ছেন।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি/জেডএ
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।