নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৪ নভেম্বর, ২০১৮
নির্বাচনে সময় যতই এগিয়ে আসছে, ততই প্রধান দুটি প্রতিপক্ষের মধ্যে ব্যবধান কমছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন জমজমাট ভোটের লড়াইয়ের পূর্বাভাস দিচ্ছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে মার্কিন দূতাবাস এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন সারাদেশে নির্বাচনের পরিবেশ, জনমত ইত্যাদি নিয়ে জরিপ করছে। মার্কিন দূতাবাসের পক্ষ থেকে এই জরিপটি করেছে, দেশের বৃহত্তম একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা। গত ১৫ নভেম্বর উন্নয়ন সংস্থাটি এই জরিপ রিপোর্টটি মার্কিন দূতাবাসকে দিয়েছে। নির্বাচনের আগে, এই উন্নয়ন সংস্থা আরও দু-দফা জরিপ করবে বলে জানা গেছে। জরিপে, এখন নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট (জাতীয় পার্টিসহ) ১৬৩ টি আসন পেতে পারে। অন্যদিকে, বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দল ও ঐক্যফ্রন্টের জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে ১২৭ টি আসনে। বাকি ২০ টি আসন অনিশ্চিত।
জরিপে বলা হয়েছে, বিএনপি নির্বাচনে আসার সিদ্ধান্তে জনমত উৎসাহিত। নির্বাচনে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দল/জোটের মধ্যে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হয়েছে কিনা জানতে চাওয়া হলে ৫৩ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, এখনো সমান সুযোগ সৃষ্টি হয়নি। ৩৭ ভাগ উত্তরদাতা মনে করেন, সমান সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। ১০ ভাগ উত্তরদাতা এ নিয়ে মন্তব্য করেননি। নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ কিনা এ প্রশ্নের উত্তরেও ৫৪ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন কমিশন এখনো নিরপেক্ষ ভাবে দায়িত্ব পালন করছে না। অবশ্য, ৩৮ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন, কমিশন নিরপেক্ষ ভাবে দায়িত্ব পালন করছে। ৮ ভাগ উত্তরদাতা মনে করছে, এ ব্যাপারে এখনই মন্তব্য করার সময় হয়নি। সরকার নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করছে কিনা, এর উত্তরে অবশ্য ৬৭ ভাগ উত্তরদাতাই বলেছে, সরকার এখনো প্রভাব বিস্তার করছে না। ২৭ ভাগ উত্তরদাতা মনে করেন, সরকার প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে। ৬ ভাগ উত্তরদাতা এ নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
নারী ভোটারদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছিল এবারের নির্বাচনে তারা ভোট দেবেন কিনা, এই প্রশ্নের উত্তরে ৭১ ভাগ উত্তরদাতাই বলেছেন, নির্বাচনে তারা ভোট দেবেন। নারীরা কি স্বেচ্ছায় ভোট দেবেন নাকি স্বামী/অভিভাবকের নির্দেশে ভোট দেবেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে মাত্র ৪১ ভাগ নারী উত্তরদাতা বলেছেন, তারা স্বেচ্ছায় ভোট দেবেন। এক্ষেত্রে ৩৮ ভাগ বলেছেন তারা পরিবারে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন। ২১ ভাগ নারী এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
জরিপে প্রশ্ন ছিল তরুণ ভোটারদের জন্য। জরিপে এবার তরুণ ভোটারদের ভোটদানের উৎসাহ দেখা গেছে। উত্তরদাতা ৮২ ভাগই বলেছেন, তারা ভোট দেবেন। ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্ত কীভাবে নেবেন সে প্রশ্নের উত্তরেও ৬৯ শতাংশ বলেছেন, তারা নিজেরা বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে আলোচনা আলোচনা করে ভোটের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন। তরুণদের উৎসাহ থাকলেও এবার নির্বাচনে প্রতিবন্ধী ভোটারদের উৎসাহ কম। উত্তরদাতা প্রতিবন্ধীদের মধ্যে মাত্র ১৬ ভাগ বলেছেন তারা ভোট দেবেন। অবশ্য ৩২ ভাগ বলেছেন ভোট দেবেন কিনা এখনো সিদ্ধান্ত নেননি। ৫২ ভাগই বলেছেন, তারা ভোট দিতে যাবেন না। এক্ষেত্রে তাদের সমস্যাগুলোর মধ্যে রয়েছে পরিবেশগত সমস্যা, ভোটকেন্দ্র প্রতিবন্ধী বান্ধব না হওয়া ইত্যাদি।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তকে
উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে উপজেলার বিএনপিপন্থি দুই প্রার্থীকে
শোকজ করা হয়েছে।
বিএনপি থেকে শোকজ করা দুই প্রার্থী হলেন, চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী
উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর
রহমান তুষার (কাপ পিরিচ প্রতীক) ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসা (চশমা প্রতীক)।
গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র অফিসিয়াল
প্যাডে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর
নোটিশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৫ এপ্রিল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির
সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিএনপি নেতা হিসেবে
আপনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। নির্বাচনে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার এহেন মনোবৃত্তি সম্পূর্ণরূপে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং দলের
প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা।
দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে জালিয়াতির নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য
আপনার বিরুদ্ধে কেন দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা
হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যকোনো মাধ্যমে পত্র প্রাপ্তির কিংবা ফোনে অবহিত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার
মধ্যে যথাযথ কারণ দর্শিয়ে একটি লিখিত জবাব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় বরাবর
নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাচনে
চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়নের সাবেক
চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান তুষার বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলীয়ভাবে কারণ
দর্শানোর নোটিশ হাতে পেয়েছি। যথাযথ সময়ে আমি নোটিশের জবাবও দেব। তবে ৮ মে উপজেলা পরিষদ
নির্বাচনে আমি জনগণের চাপে পড়ে প্রার্থী হয়েছি। দলীয় সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, জনগণের
ভালোবাসা, দোয়া ও সমর্থন নিয়ে শেষ পর্যন্ত আমি নির্বাচনী মাঠে থাকব। আমি টানা ১৯ বছর
বয়ড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবা করেছি। যার ফলে পুরো উপজেলায় আমার
একটা অবস্থান রয়েছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ আমাকে ভালোবাসে। তাদের ভালোবাসা ও দোয়া
নিয়েই আমি আগামীতে পথ চলতে চাই। আশা করি, এ নির্বাচনে আপামর জনগণ আমার পাশে থাকবে এবং
নির্বাচনে ভালো কিছু হবে, ইনশাআল্লাহ।
তবে বিএনপিপন্থি ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসাকে একাধিকবার মুঠোফোনে
কল দিলেও রিসিভ হয়নি।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।