নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০৩ পিএম, ২৫ নভেম্বর, ২০১৮
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়া শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে দলীয় প্রার্থীদের চিঠি দেওয়া শুরু হয়। প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আওয়ামী লীগই এবার সবার আগে দলীয় প্রার্থীদের মনোনয়ন চূড়ান্ত করেছে। আর বিএনপি চেয়েছিল এটাই। আগে আওয়ামী লীগ তাদের প্রার্থীদের মনোনয়ন চূড়ান্ত করুক, এটাই প্রত্যাশা ছিল তাদের। কেননা এক্ষেত্রে প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের চূড়ান্ত প্রার্থীদের তালিকা যাচাই করে নিজেদের আসন বিন্যাস চূড়ান্ত করার সুযোগ থাকছে তাদের। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের চূড়ান্ত মনোনয়ন প্রকাশে বিএনপি এবং বিএনপির নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা-কর্মীরা খুশিই হয়েছে, সেইসঙ্গে চাপা উল্লাস লক্ষ্য করা গেছে তাদের মধ্যে। তাদের খুশির প্রধান কারণগুলো হলো:
১. আওয়ামী লীগ তার প্রার্থী তালিকায় তেমন বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন আনেনি। অধিকাংশ পুরনো প্রার্থীদেরকেই এবারও মনোনয়নের প্রার্থী তালিকায় রাখা হয়েছে। যা বিএনপির জন্য একটি ইতিবাচক দিক। কেননা, এবার বিএনপির নির্বাচনী প্রচারণার কৌশল হবে ২০১৪’এর ভোটার বিহীন নির্বাচনের কথা উল্লেখ করা এবং এই সব এমপি’রা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন তা ফলাও করে প্রচার করা। এদিকে কিছু কিছু এমপি’র বিরুদ্ধে বিগত সময়ে বিভিন্ন কারণে বিতর্কিত হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এসব এমপি’রা পুনরায় মনোনয়নের তালিকায় থাকায়, নির্বাচনের মাঠে বিএনপি বাড়তি সুবিধা পাবে বলে মনে করছে বিএনপির নীতি নির্ধারকরা।
২. আওয়ামী লীগের কিছু কিছু আসনে আছে দলীয় কোন্দল। এসব কোন্দল মীমাংসা হওয়ার সম্ভাবনাও নেই। এক্ষেত্রে যারা মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছেন, তারা নির্বাচনের মাঠে বিরোধিতা না করলেও নিষ্ক্রিয় থাকার সম্ভাবনা রয়েছে, যেটিকে ইতিবাচক দিক হিসেবে দেখছে বিএনপি। যেমন: এবার মনোনয়ন পাননি আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী জাহাঙ্গীর কবির নানক। ঢাকা- ১৩ আসনের বর্তমান এমপি আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক এবারও এ আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশা করেছিলেন। কিন্তু তাঁর বদলে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খানকে বেছে নিয়েছে আওয়ামী লীগ হাই কমান্ড। এক্ষেত্রে, নির্বাচনের মাঠে জাহাঙ্গীর কবির নানক যে নিষ্ক্রিয় থাকবেন তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। আবার কিছু কিছু আসনে দু’জন প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে একজনকেই চূড়ান্ত করা হবে। উদাহরণস্বরূপ: কিশোরগঞ্জ-১, জামালপুর-২ আসন। এসব আসনে একাধিক প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এসব আসনে যে প্রার্থী মনোনয়ন বঞ্চিত হবেন তিনি নির্বাচনের মাঠে দলের মনোনীত প্রার্থীকে সহযোগিতা করবেন না তা নিশ্চিত। এরফলে নির্বাচনে বিএনপির বাড়তি কিছু সুবিধা পাবে বলে মনে করছে দলটি।
৩. এবারের আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের চূড়ান্ত মনোনয়ন তালিকা প্রকাশের ফলে আওয়ামী লীগের প্রধান শরিক জাতীয় পার্টির সঙ্গে আওয়ামী লীগের সম্পর্কের টানাপোড়ন মীমাংসা হওয়া কঠিন হয়ে পড়বে। কারণ, ঢাকা-১, চট্টগ্রাম-৯সহ জাতীয় পার্টি যে আসনগুলোতে বেশি প্রত্যাশী ছিল সেখানেই প্রার্থী দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এই আসনগুলোর বিরোধ মীমাংসা যদি শেষ পর্যন্ত না হয়, তাহলে জাতীয় পার্টি জোটগত ভাবে নির্বাচন করবে কিনা, তা নিয়ে অনেকের সংশয় আছে। আর বিএনপি মনে করছে নির্বাচনের আগে জাতীয় পার্টির সঙ্গে এই বিরোধ আওয়ামী লীগকে বেকায়দায় ফেলে দেবে।
এসব প্রেক্ষাপটেই আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আজ যে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে বিএনপিতে আনন্দ, উচ্ছ্বাস দেখা গেছে।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।
আওয়ামী লীগ দলগতভাবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট এবং কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলায় মন্ত্রী, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাই ব্রাদার বা স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না। যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।