নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ২৫ নভেম্বর, ২০১৮
নির্বাচন উপলক্ষে আওয়ামী লীগে পক্ষ থেকে কয়েকটি মাঠ জরিপ চালানো হয়। সর্বশেষ ৬ টি মাঠ জরিপেই শতাধিক এমপির জনপ্রিয়তার নিম্নমুখীতার কথা বলা হয়েছিল। দেখা গিয়েছিল, এদের মধ্যে অন্তত ৭৩ জন এমপি-মন্ত্রী এলাকায় কেবল অজনপ্রিয়ই নন, এলাকায় যাওয়ার মতো অবস্থাও তাঁদের নেই। আজ বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ঘোষিত চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, মনোনয়ন প্রাপ্তদের পেয়েছেন চিঠি। আর এতে দেখা যাচ্ছে ২০১৪ সালের নির্বাচনের প্রার্থী তালিকা থেকে আওয়ামী লীগ খুব একটা বড় ধরনের পরিবর্তন করেনি। প্রার্থী তালিকায় কেন পরিবর্তন করল না আওয়ামী লীগ- এ নিয়ে দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা গেছে। তবে দলের নীতি নির্ধারকরা বলছেন, কতগুলো যৌক্তিক কার্যকারণ থাকার কারণেই প্রার্থিতায় পারতপক্ষে কোনো পরিবর্তন করা হয়নি।
আওয়ামী লীগের একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা বলেছেন, আমরা জরিপ ও বাস্তবতার বিবেচনা করে, মনোনয়ন দিয়েছি। আমরা যে মনোনয়ন দিয়েছি, সেটা মনে করি যে সঠিক ভাবেই দেওয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, মোটা দাগে পাঁচটি কারণে প্রার্থী বদলে কোনো ঝুঁকি নেওয়া হয়নি। কারণগুলো হলো:
১. সংসদ সদস্য থাকার সুবিধা: বর্তমানে সংসদ সদস্য থাকা অবস্থায়ই নির্বাচন করার সুযোগ পাচ্ছেন অনেকে। দায়িত্বে থাকার কারণে একজন সংসদ সদস্য এলাকায় কিছুটা বাড়তি সুবিধা পাবেন বলেই মনে করে আওয়ামী লীগ। এলাকায় নিজস্ব অবস্থান ধরে রেখেই নির্বাচন করতে পারবেন সংসদ সদস্যরা। তাই, একজনের বিরুদ্ধে গুরুতর কোনো অভিযোগ না থাকলে প্রার্থী বদল করা হচ্ছে না।
২. জনগণ যেন ভুল না বোঝে: যদি ঢালাও ভাবে প্রার্থী বদল হতো তাহলে, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অপশাসনের অভিযোগ উঠতো। অভিযোগ উঠতে পারত, আওয়ামী লীগের যারা এমপি ছিল তারা দুর্নীতি করেছে, লুটপাট করেছে, সেজন্যই প্রার্থী বদল করা হয়েছে। এমন বদনামের ভাগিদার হতে হতো আওয়ামী লীগকে। তাই আওয়ামী লীগ ইচ্ছা করেই প্রার্থী পরিবর্তন তেমন-একটা করেনি।
৩. কোন্দল: আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল বিশ্লেষণে দেখা যায় যে, বর্তমানে এলাকায় যিনি এমপি আছেন তিনিই শক্তিশালী। যাঁরা এমপির বিরুদ্ধে কাজ করছেন তারাই দুর্বল। প্রার্থী বদল করা হলে এবং এমপি ওই প্রার্থীর বিরুদ্ধাচরণ করলে নাজুক হয়ে পড়তো বদল প্রার্থীর অবস্থান। বিভক্ত অবস্থায় মাঠে নামতে হতো নতুন প্রার্থীকে। আর এ কারণেই বর্তমানে সংসদ সদস্যরাই খুব খারাপ অবস্থায় না থাকলে, প্রার্থিতার কোনো পরিবর্তন করা হয়নি।
৪. জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি: তফসিল ঘোষণার পরপরই দেখা গেছে যে, জরিপগুলোতে নাটকীয় পরিবর্তন হচ্ছে, যাঁরা পিছিয়ে ছিলেন, তাঁরা এলাকায় জনসংযোগ বাড়িয়ে, মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে দ্রুত জনপ্রিয়তাকে একটি জায়গায় নিয়ে এসেছেন। জনপ্রিয়তার ধারা উর্ধ্বমুখী হওয়ার কারণেই তাঁদের বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।
৫. এমপি হওয়ার প্রভাব: যাঁরা এমপি ছিলেন তাঁদের সঙ্গে প্রশাসন, পুলিশসহ সংশ্লিষ্টদের নেটওয়ার্ক তৈরি হয়েছে। পদাধিকার বলেই এমপিরা কিছু সুবিধা ভোগ করছেন। আর নির্বাচনে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সম্পর্ক বর্তমান মনোনয়ন প্রাপ্তরা কাজে লাগাতে বলে মনে করে আওয়ামী লীগ। আর এ কারণেই আওয়ামী লীগ প্রার্থী বদলের ঝুঁকি নিতে চায়নি।
আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, প্রার্থী বদলের ক্ষেত্রে একাধিক প্রস্তাব বিবেচনায় থাকলেও, শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ রক্ষণশীল পদেই হেঁটেছে। আওয়ামী লীগ মনে করেন, নির্বাচন যেহেতু প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে, তাই বর্তমান এমপিরা নির্বাচনের ক্ষেত্রে একটি ইতিবাচক বড় ভূমিকা রাখতে পারবে।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।
আওয়ামী লীগ দলগতভাবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট এবং কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলায় মন্ত্রী, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাই ব্রাদার বা স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না। যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।