নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:১৫ এএম, ২৭ নভেম্বর, ২০১৮
আসন্ন নির্বাচনের জন্য বিএনপির চূড়ান্ত মনোনয়ন ঘোষণা করা হয়েছে গতকাল সোমবার। বিএনপির পক্ষ থেকে যে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে তাতে দেশি ও বিদেশি সুধীজনদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। বিএনপির প্রার্থী তালিকা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, জঙ্গি তৎপরতার সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু ব্যক্তি আবার মনোনয়ন পেয়েছেন। এছাড়া যুদ্ধাপরাধীদের সন্তানদেরও মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি। এতে বিভিন্ন মহল প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
গত রাতেই ভারতের রাষ্ট্রদূত হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে ফোন করে এ ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। শুধু ভারতীয় রাষ্ট্রদূতই নন, বিএনপির এ মনোনয়নে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মার্কিন দূতাবাসও। এছাড়া বাংলাদেশে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরাও এই তালিকা দেখে হতাশা প্রকাশ করেছেন। বিএনপির প্রার্থী তালিকায় স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, বিগত ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটেছিল যে ব্যক্তিদের পৃষ্ঠপোষকতায় সেই ব্যক্তিদেরই আবার মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এটাই সবার হতাশার মূল কারণ।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য রাজশাহী- ১ আসন থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন ব্যারিস্টার আমিনুল ইসলাম। বিএনপি-জামাত জোট সরকারের সময় দলের মধ্য থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে জঙ্গি সংগঠন জেএমবিকে পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়ার অভিযোগ ছিল।
বিএনপির সাবেক সাংসদ নাদিম মোস্তফাও জেএমবি গঠনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তিনি এবার রাজশাহী-৫ আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন।
সাবেক ভূমি উপমন্ত্রী এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুকে এবার নাটোর- ২ আসন থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। বিএনপির এই নেতার বিরুদ্ধেও জঙ্গি পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগ রয়েছে।
শুধু যে জঙ্গিবাদে সম্পৃক্তদেরই মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি তা নয়। যুদ্ধাপরাধীদের সন্তানদেরও বিএনপির মনোনয়ন তালিকায় দেখা গেছে। যুদ্ধাপরাধের দায়ে দণ্ডিত আবদুল আলিমের পুত্রকে জয়পুরহাট থেকে মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি।
বিএনপির এমন মনোনয়নে শুধু দেশ ও বিদেশের সুধী মহলে নয়, খোদ দলটির নেতৃত্বাধীন জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। গঠিত হওয়ার পর থেকে ঐক্যফ্রন্ট যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, সুশাসন ও গণতন্ত্রের কথা বলে আসছিল তা বিএনপির এই মনোনয়ন তালিকায় শুরুতেই হোঁচট খাবে বলে অনেকের ধারণা।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি/জেডএ
মন্তব্য করুন
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তকে
উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে উপজেলার বিএনপিপন্থি দুই প্রার্থীকে
শোকজ করা হয়েছে।
বিএনপি থেকে শোকজ করা দুই প্রার্থী হলেন, চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী
উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর
রহমান তুষার (কাপ পিরিচ প্রতীক) ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসা (চশমা প্রতীক)।
গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র অফিসিয়াল
প্যাডে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর
নোটিশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৫ এপ্রিল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির
সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিএনপি নেতা হিসেবে
আপনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। নির্বাচনে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার এহেন মনোবৃত্তি সম্পূর্ণরূপে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং দলের
প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা।
দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে জালিয়াতির নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য
আপনার বিরুদ্ধে কেন দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা
হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যকোনো মাধ্যমে পত্র প্রাপ্তির কিংবা ফোনে অবহিত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার
মধ্যে যথাযথ কারণ দর্শিয়ে একটি লিখিত জবাব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় বরাবর
নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাচনে
চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়নের সাবেক
চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান তুষার বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলীয়ভাবে কারণ
দর্শানোর নোটিশ হাতে পেয়েছি। যথাযথ সময়ে আমি নোটিশের জবাবও দেব। তবে ৮ মে উপজেলা পরিষদ
নির্বাচনে আমি জনগণের চাপে পড়ে প্রার্থী হয়েছি। দলীয় সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, জনগণের
ভালোবাসা, দোয়া ও সমর্থন নিয়ে শেষ পর্যন্ত আমি নির্বাচনী মাঠে থাকব। আমি টানা ১৯ বছর
বয়ড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবা করেছি। যার ফলে পুরো উপজেলায় আমার
একটা অবস্থান রয়েছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ আমাকে ভালোবাসে। তাদের ভালোবাসা ও দোয়া
নিয়েই আমি আগামীতে পথ চলতে চাই। আশা করি, এ নির্বাচনে আপামর জনগণ আমার পাশে থাকবে এবং
নির্বাচনে ভালো কিছু হবে, ইনশাআল্লাহ।
তবে বিএনপিপন্থি ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসাকে একাধিকবার মুঠোফোনে
কল দিলেও রিসিভ হয়নি।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।