নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০১ পিএম, ৩০ নভেম্বর, ২০১৮
এবারের নির্বাচনের আগে আগে বিএনপি অনেকগুলো চমক দেখিয়েছে। ২০ দল রেখেই ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ঐক্যফ্রন্ট গঠন করা হয়েছে। ড. কামাল বলেছিলেন যে, জামাতের সঙ্গে তিনি ঐক্য গড়বেন না এবং জামাত যাদের সঙ্গে থাকবে তাদের সঙ্গেও ঐক্যে যাবেন না। সেই ড. কামালই পরে বিএনপির সঙ্গে ঐক্যে রাজি হয়েছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে যে, ঐক্যফ্রন্টের বেশ কয়েকজন নেতাকে বিপুল পরিমান আর্থিক সহায়তা দিয়ে তারেক ঐক্যফ্রন্ট গঠন করার ক্ষেত্রে সফল হয়েছেন। এক্ষেত্রে ঐক্যফ্রন্টের গুরুত্বপূর্ণ তিন নেতা- ড. কামাল হোসেন, আ. স. ম. আবদুর রব এবং মাহমুদুর রহমান মান্নার সঙ্গে তারেক জিয়া ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ করেছিলেন। তিনজনকেই তিনি সন্তুষ্ট করেছিলেন। এর ফলেই জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সহজে গঠিত হয়েছিল।
একাধিক সূত্র বলছে যে, তারেক জিয়া চাননি বলেই বিকল্প ধারা ঐক্যফ্রন্টে যুক্ত হতে পারেনি। এই ক্ষোভ, দুঃখ এবং অপমানেই অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী আওয়ামী লীগের দিকে ঝুঁকেছেন। বিএনপির একাধিক সূত্র বলছে যে, নির্বাচনের আগে তারেকের মূল পরিকল্পনা হলো আওয়ামী লীগের মধ্যে যারা ক্রিয়াশীল শক্তি, নির্বাচনে যারা আওয়ামী লীগের জন্য কাজ করবে এবং যারা নির্বাচনে প্রভাবশালী ভূমিকা পালন করবে- তাদেরকে কিনে ফেলা। যারা আওয়ামী লীগের পক্ষের শক্তি হিসেবে নির্বাচনের মাঠে কাজ করবে বলে হিসাব করেছে আওয়ামী লীগ তাদেরকে কিনে ফেলে নির্বাচনে চমক দেখাতে চায় তারেক জিয়া। এ লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই কাজ শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের যেসব গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে এখনো আসন নিয়ে মীমাংসা হয়নি সেগুলোতে শক্তিশালী আওয়ামী প্রার্থীরা যেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হন এবং মনোনয়ন দৌড়ে টিকে থাকেন সেজন্য তাদেরকে পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যেই অন্তত তিনজন প্রার্থীর খবর পাওয়া গেছে যারা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়াও মাঠ প্রশাসন, কেন্দ্রীয় প্রশাসন ও আইনশৃংখলা বাহিণীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি যারা নির্বাচনের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকবেন তাদের সঙ্গে তারেক জিয়া যোগাযোগের চেষ্টা করছেন বলে জানা গেছে। তাদেরকে নির্বাচনের আগেই ড. কামাল হোসেনের মতোই বশীভূত করার প্রকল্পও হাতে নেওয়া হয়েছে।
বিএনপির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, নির্বাচনে যাদের আওয়ামী লীগের পক্ষে প্রতিক্রিয়াশীল থাকার কথা তারা যদি এই সময়ে বিএনপির পক্ষে বা তারেক জিয়ার নির্দেশিত পথে কাজ করে তাহলে নির্বাচনে নাটকীয় ফলাফল হতে পারে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, তারেক জিয়া ২০০১ সালের মডেল অনুসরণ করার চিন্তা ভাবনা করছেন। ২০০১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হওয়ার বহু আগেই তারেক জিয়া হাওয়া ভবন থেকে নির্বাচনের সঙ্গে সম্পৃক্ত একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগসাজশ করেছিলেন। তত্তাবধায়ক সরকার গঠিত হবার পরপরই ওই সমস্ত কর্মকর্তারা প্রকাশ্যে বিএনপির পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। বিএনপি যেন নির্বাচনে জয়ী হয় সেজন্যেও তারা কাজ করেছিলেন। এবারো নির্বাচনের ক্ষেত্রে তারেক জিয়া সেরকম একটা নেটওয়ার্ক তৈরি করতে চেষ্টা করছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।