নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ৩০ নভেম্বর, ২০১৮
আওয়ামী লীগ এবার বিদ্রোহী প্রার্থীদের ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহন করলেও এ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী প্রায় ৭৯ জন আওয়ামী লীগ নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। আওয়ামী লীগের জন্য এটা একটি বড় মাথাব্যাথার কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। যদিও আওয়ামী লীগ যেসমস্ত হেভিওয়েট প্রার্থীদের মনোনয়ন দেয়নি। তাদেরকে বুঝিয়ে-শুনিয়ে শান্ত করতে সক্ষম হয়েছে। হেভিওয়েট চার নেতা যারা মনোনয়ন পাননি, মনোনয়ন দেয়া শেষ হলে প্রধানমন্ত্রী তার পরেরদিনই গণভবনে তাদেরকে ডেকে বুঝিয়েছেন এবং এই চার নেতাকে এখন নির্বাচনের মাঠে সক্রিয় দেখা যাচ্ছে। যেমন জাহাঙ্গীর কবির নানক মোহাম্মদপুরে সাদেক খানের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। আব্দুর রহমান, বাহাউদ্দিন নাছিম এবং আ খ ম মোজাম্মেল হক ঢাকায় কেন্দ্রীয় নির্বাচনী প্রচারণা টিমের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। এই চারজনের জনপ্রিয়তা থাকা সত্বেও তাঁরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে আওয়ামী লীগের অসুবিধার কারণ হননি।
জানা গেছে, মাঠ পর্যায়ে আওয়ামী লীগের ৭৯ জন যে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। তাদেরকে ঢাকায় তলব করা হবে। প্রধানমন্ত্রী তাদের সঙ্গে আলাদা করে বৈঠক করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আওয়ামী লীগ চাচ্ছে আগামী ৯ ডিসেম্বর হচ্ছে মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষদিন। ৯ ডিসেম্বরের আগেই এ সমস্ত বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে ঢাকায় নিয়ে আসা হবে। ঢাকায় ডেকে স্বয়ং আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী নিজেই তাঁদের সঙ্গে কথা বলবেন। কথা বলে তাদেরকে নির্বাচন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাহারের নির্দেশনা দিবেন। একাধিক সূত্র বলছে যে, আওয়ামী লীগের যে ৭৯ জন বিদ্রোহী প্রার্থী, এদের মধ্যে কয়েকজন রয়েছেন যারা নির্বাচনে অত্যন্ত জনপ্রিয় ব্যক্তি। তারা যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন, তাহলে ওই আসনগুলো আওয়ামী লীগের জন্য ক্ষতিকারক হবে। প্রাপ্ত তথ্যে দেখা গেছে যে, নরসিংদী ৩ আসনে সিরাজুল ইসলাম মোল্লা। যিনি গতবারও স্বতন্ত্র হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এবারও তিনি মনোনয়ন পাননি। মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র হিসেবে দাড়িয়েছেন। নরসিংদী- ২ আসনের আলতামাস কবির, ফেনী -৩ আসনে আবুল বাশার, মেহেরপুর- ১ আসনে প্রফেসর আব্দুল মান্নান, যশোর ২- আসনের অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম, দিনাজপুর- ২ আসনে ডা. মানবেন্দ্র রায়সহ ফেনী ১, নারায়নগঞ্জ ৩, নারায়নগঞ্জ ৪ , শরীয়তপুর ২, মুন্সিগঞ্জ ৩, টাঙ্গাইল ৬ আসনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা আওয়ামী লীগের জন্য বড় মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাড়িয়েছেন। ফেনী ৩ আসনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আছেন তিনজন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২ আসনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন।
আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, আওয়ামী লীগ আগামী ২ ডিসেম্বর মনোনয়পত্র বাছাইয়ের পর দেখতে চান কতজন বিদ্রোহী প্রার্থী টিকে থাকলো। যাদের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যাবে, তাদের বাদ দিয়ে যাদের মনোনয়ন টিকবে, তাদেরকে ২ থেকে ৮ ডিসেম্বরের মধ্যে ঢাকায় তলব করা হবে। তাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মূলত ৩ টি বিষয় নিয়ে কথা বলবেন। এর মধ্যে প্রথমত, তাদেরকে বলা হবে। তারা যদি অবিলম্বে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে। যে প্রার্থীকে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিয়েছে। তাদের পক্ষে যদি কাজ করে। তাদের জন্য পুরস্কারের ব্যবস্থা করা হবে। ভবিষ্যতে তাদের সাংগঠনিক তৎপরতায় সম্পৃক্ত করা হবে।
দ্বিতীয়ত তাদেরকে বলা হবে, তারা যদি প্রার্থীতা প্রত্যাহার না করে। প্রার্থীতা প্রত্যাহারের পাশাপাশি যদি নৌকা প্রতীকে প্রার্থীদের পক্ষে কাজ না করে। তাদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তৃতীয় বিষয়টি হচ্ছে তারা যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনী দৌঁড়ে থাকে। তাহলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ থেকে তারা আক্রমনের লক্ষ্যবস্তুতে পরিনত হবে।
এই সমস্ত বিষয় নিয়ে আওয়ামী লীগের হাই কমান্ড বসবে। ইতিমধ্যে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সমস্ত বিদ্রোহী প্রার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তাদেরকে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের বাস্তবতা বলে, দলের সভাপতি হস্তক্ষেপ করা ছাড়া এ ধরনের মনোনয়ন বঞ্চিতদের বিদ্রোহ ও তাদের অসেন্তোষ দূর করা সম্ভব নয়।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।