নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩:২৪ পিএম, ০৩ ডিসেম্বর, ২০১৮
জাতীয় পার্টিতে নানা নাটকীয়তায় অবশেষে মহাসচিবের পদ হারালেন এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার।দ্বিতীয় বারের মত তিনি মহাসচিবের পদ থেকে পদচ্যুত হলেন। রুহুল আমিন হাওলাদারের পরিবর্তে পার্টি চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ নতুন মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব দিলেন ক্ষমতাসীন সরকারের আস্থাভাজন স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন সমবায় প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গাকে। সম্পর্কে এরশাদের ভাগিনা তিনি। রংপুরের গঙ্গাচড়া আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য তিনি।
কয়েকদিন ধরেই জাতীয় পার্টির অভ্যন্তরে মনোনয়ন বাণিজ্য নিয়ে সকল স্তরের নেতা-কর্মীদের মাঝে ক্ষোভের আগুন জ্বলছিল। মূলত: দলের নেতা-কর্মীরা এজন্য সরাসরি অভিযুক্ত করেন মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারকে। বিশেষকরে ঢাকা-১ আসনে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট সালমা ইসলামকে মনোনয়ন না দিয়ে সেখানে জোটের প্রার্থী হিসেবে শিল্পপতি সালমান এফ রহমানকে সমর্থন করে জাতীয় পার্টি। আর এতেই চরম ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে সালমা ইসলামের মিডিয়া হাউজ দৈনিক যুগান্তর এবং যমুনা টেলিভিশন। এই দুটি মিডিয়াতে ধারাবাহিকভাবে এবিএম রুহুল আমিনকে নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। জাতীয় পার্টির বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা বনানীতে পার্টির চেয়ারম্যান এর কার্যালয় তালাবদ্ধ করে দেয় এবং মহাসচিবের গুলশানের বাড়িতেও বিক্ষোভ করে বিক্ষুব্ধরা। সারাদেশের তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা মনোনয়ন বাণিজ্যে এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদের দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তুলেন। জাতীয় পার্টির একাধিক সূত্র জানায়, যমুনা গ্রুপের নুরুল ইসলাম বাবুল প্রাণপণ প্রচেষ্টা চালান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারকে মহাসচিবের পদ থেকে সরাতে। বিভিন্ন মহলের মাধ্যমেও তিনি বিষয়টি নিয়ে দেনদরবার করেন বলে জানা যায়।
জাপার এক প্রভাবশালী প্রেসিডিয়াম সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলা ইনসাইডারকে জানান, যমুনা গ্রুপ এর বাবুল জাতীয় পার্টির সবচেয়ে বড় ডোনার। পার্টি চালানোর সিংহভাগ অর্থই তিনি দিয়ে থাকেন। সেখানে তার স্ত্রী যদি জাতীয় পার্টির মনোনয়ন না পায় তাহলে বিষয়টি অবশ্যই তার জন্য প্রেস্টিজ এর। তিনি বলেন, মহাসচিব পরিবর্তনে নুরুল ইসলাম বাবুলের কোনো না কোনো ভাবে হাত থাকতে পারে। তবে সরকারের ইচ্ছাতেই মহাসচিব পরিবর্তন সহজ হয়েছে বলে অভিমত তার।
এদিকে, জাতীয় পার্টি থেকে তড়িঘড়ি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম। বিএনপির টিকেটে তিনি ঢাকা-১ আসনে প্রার্থী হতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। বিএনপি থেকেও এ বিষয়ে সবুজ সংকেত দেয়া হয় অ্যাডভোকেট সালমা ইসলামকে। গতকাল রাতে বিষয়টি গণমাধ্যমে ব্যাপক চাউর হয়ে গেলে এরশাদ নড়েচড়ে বসেন। কথা বলতে চান বাবুলের সঙ্গে। গোপন সূত্র জানায়, নুরুল ইসলাম বাবুল এরশাদকে আল্টিমেটাম দেন, মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারকে পরিবর্তন করলেই তিনি জাপার সঙ্গে আলোচনায় আগ্রহী। গতকাল রাতেই এরশাদ সিদ্ধান্ত নেন মহাসচিব পরিবর্তনের। আর কৌশলী এরশাদ শেষ পর্যন্ত দলকে পুনরায় ভাঙ্গনের হাত থেকে বাঁচাতে তারই ভাগ্নে পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এলজিইডি প্রতিমন্ত্রী রাঙ্গাকে নতুন মহাসচিব করার সিদ্ধান্ত নেন।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।
আওয়ামী লীগ দলগতভাবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট এবং কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলায় মন্ত্রী, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাই ব্রাদার বা স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না। যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।