নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ০৩ ডিসেম্বর, ২০১৮
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে যে নির্বাচনী ইশতেহার তৈরি করা হয়েছে তার বেশ কিছু বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে বিএনপি। আজ নির্বাচনী ইশতেহার নিয়ে ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সভায় বিএনপি এই আপত্তি তোলে। বিএনপি তাদের নিজস্ব নির্বাচনীয় ইশতেহারে এই বিষয়গুলো রাখবে না বলে মত দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, ইশতেহারে কয়েকটি বিষয়ের সঙ্গে বিএনপি একমত নয় বলে জানিয়েছে। গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে নির্বাচনীয় ইশতেহার চূড়ান্ত করার জন্য এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। জানা গেছে, কাল মতিঝিলে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে এ ব্যাপারে ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা আবার বৈঠক করবেন। সূত্রমতে, যৌথ ইশতেহারে যেসব বিষয়ে বিএনপি আপত্তি জানিয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে:
১. ঐক্যফ্রন্টের খসড়া নির্বাচনী ইশতেহারে বলা হয়েছে, একজন ব্যক্তি পরপর দুবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ এটাকে সংসদীয় গণতন্ত্রের রীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে মন্তব্য করেছেন। বৈঠকে তিনি বলেছেন, রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ব্যবস্থায় এটা থাকে। তিনি মনে করেন, সংসদীয় গণতন্ত্রে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের আস্থাভাজন ব্যক্তি। এটা কোনো ব্যক্তির ইচ্ছায় হয় না। তাই তিনি মনে করেন, এটা থাকা উচিত নয়। বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, এই ধারার ব্যাপারে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া আপত্তি করেছেন।
২. জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে তার খসড়া নির্বাচনীয় ইশতেহারে বলেছে, ‘কেবল অনাস্থা প্রস্তাব এবং অর্থবিল ছাড়া অন্য সবক্ষেত্রে সংসদে ভোটাভুটিতে সংসদ সদস্যগণ দলের সিদ্ধান্তের বাইরে ভোট দিতে পারবেন। বর্তমানে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদে দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ভোট প্রদানের ক্ষেত্রে তার আসন শূন্য হবার বিধান আছে। বিএনপির পক্ষ থেকে এ ব্যাপারেও আপত্তি আছে। বিএনপি বলেছে, ৭০ অনুচ্ছেদ না থাকলে সংসদ সদস্যদের কেনাবেচা হবে, দুর্নীতি বাড়বে।
৩. জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের খসড়া ইশতেহারে সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে। কিন্তু বিএনপি বলছে, এটা রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ। এটা ধর্মীয় বৈষম্য এবং বিভেদ সৃষ্টি করবে।
৪. ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনী ইশতেহারের খসড়ায় সরকারি চাকরীতে বয়সসীমা উঠিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। বিএনপি এর আপত্তি জানিয়েছে। বিএনপি বলছে, এই প্রস্তাব বাস্তবসম্মত নয়। এর ফলে নিয়োগ শৃঙ্খলা ভেঙে পড়বে।
৫. ঐক্যফ্রন্ট তাদের খসড়া ইশতেহারে নারী আসনের জন্য সরাসরি ভোটের প্রস্তাব করেছে। বিএনপি বলেছে, এখনই এই প্রস্তাব বাস্তবায়নযোগ্য নয়।
উল্লেখ্য, এই মতপার্থক্য রেখেই খসড়া ইশতেহারটি ফ্রন্টের শীর্ষ ফোরামে আলোচনার জন্য পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তকে
উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে উপজেলার বিএনপিপন্থি দুই প্রার্থীকে
শোকজ করা হয়েছে।
বিএনপি থেকে শোকজ করা দুই প্রার্থী হলেন, চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী
উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর
রহমান তুষার (কাপ পিরিচ প্রতীক) ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসা (চশমা প্রতীক)।
গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র অফিসিয়াল
প্যাডে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর
নোটিশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৫ এপ্রিল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির
সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিএনপি নেতা হিসেবে
আপনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। নির্বাচনে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার এহেন মনোবৃত্তি সম্পূর্ণরূপে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং দলের
প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা।
দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে জালিয়াতির নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য
আপনার বিরুদ্ধে কেন দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা
হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যকোনো মাধ্যমে পত্র প্রাপ্তির কিংবা ফোনে অবহিত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার
মধ্যে যথাযথ কারণ দর্শিয়ে একটি লিখিত জবাব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় বরাবর
নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাচনে
চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়নের সাবেক
চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান তুষার বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলীয়ভাবে কারণ
দর্শানোর নোটিশ হাতে পেয়েছি। যথাযথ সময়ে আমি নোটিশের জবাবও দেব। তবে ৮ মে উপজেলা পরিষদ
নির্বাচনে আমি জনগণের চাপে পড়ে প্রার্থী হয়েছি। দলীয় সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, জনগণের
ভালোবাসা, দোয়া ও সমর্থন নিয়ে শেষ পর্যন্ত আমি নির্বাচনী মাঠে থাকব। আমি টানা ১৯ বছর
বয়ড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবা করেছি। যার ফলে পুরো উপজেলায় আমার
একটা অবস্থান রয়েছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ আমাকে ভালোবাসে। তাদের ভালোবাসা ও দোয়া
নিয়েই আমি আগামীতে পথ চলতে চাই। আশা করি, এ নির্বাচনে আপামর জনগণ আমার পাশে থাকবে এবং
নির্বাচনে ভালো কিছু হবে, ইনশাআল্লাহ।
তবে বিএনপিপন্থি ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসাকে একাধিকবার মুঠোফোনে
কল দিলেও রিসিভ হয়নি।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।