নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ০৫ ডিসেম্বর, ২০১৮
তিনি নিজে নির্বাচন করছেন না। তাঁর দলেরও নির্বাচনে আসন সংখ্যা নিশ্চিত না। ক্ষমতায় গেলে তাঁকে পাত্তাও দেবে না বিএনপি। তাঁর বয়স ৮০’র উপর। নানা রোগশোকে কাবু। নিজে ঠিকমতো হাঁটতে চলতেও পারেন না। তারপরও তিনিই এখন বিএনপি-জামাতের মূল অভিভাবক। বিএনপি-জামাতের জন্য নিয়মিত মিটিং করছেন। সংবাদ সম্মেলনে গলা ফাটাচ্ছেন। বিদেশি কূটনীতিকদের কাছে বিএনপি-জামাতের পক্ষে সাফাই গাইছেন। কি তাঁর উদ্দেশ্য? কেন তিনি বিএনপির জন্য নিজেকে এভাবে উজাড় করে দিচ্ছেন? তিনি ড. কামাল হোসেন। সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, আজ বেগম জিয়ার মনোনয়ন বাতিলের বিরুদ্ধে যে আপিল হয়েছে, সেই আপিলের আইনি পরামর্শ দিয়েছেন ড. কামাল হোসেন। গতরাতে বেইলী রোডের বাসায় বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের ব্রিফিং দিয়েছেন। আশ্বাস দিয়েছেন কমিশন যদি শেষ পর্যন্ত আপিল গ্রহণ না করে তাহলে হাইকোর্টে তিনিই দাঁড়াবেন।
রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রশ্ন, একদা আওয়ামী লীগ নেতা কেন আজ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে মরিয়া হয়ে উঠেছেন? বঙ্গবন্ধুর সাহচর্যে রাজনীতিতে আসা ড. কামাল কেন এখন বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পরিকল্পনাকারী দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক?
অনুসন্ধানে পাওয়া গেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, ভোটের অধিকার এসব মিষ্টি কথার আড়ালে রয়েছে এখন আইনজীবীর অর্থলিপ্সা আর লোভ। ড. কামাল হোসেন একজন পেশাদার খ্যতিসম্পন্ন আইনজীবী। অর্থের জন্য তিনি সবার মামলাই নেন। সবাইকেই আইনি পরামর্শ দেন। সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির পক্ষে তাঁর দৌড়ঝাঁপও অর্থের বিনিময়েই বলে একাধিক সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে। আর এবারের অর্থপ্রাপ্তি হলো তাঁর আইনি পেশায় সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সঙ্গে এক গোপন চুক্তি অনুযায়ী ড. কামাল কাজ করছেন। প্রতিদিনের জন্য তাঁর পারিশ্রমিক বাংলাদেশি টাকায় এক কোটি টাকা। এই টাকা পরিশোধিত হচ্ছে লন্ডনে। পারিশ্রমিকের টাকা গ্রহণ করছেন ড. কামাল হোসেনের জামাতা ডেভিড বার্গম্যান।
বিএনপির দায়িত্বশীল একাধিক সূত্রগুলো বলছে, প্রতিদিনই ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে কথা হয় তারেক জিয়ার। তারেক জিয়া তাঁকে যেভাবে নির্দেশ এবং পরামর্শই দেন সেভাবেই কাজ করেন ড. কামাল হোসেন। এ প্রসঙ্গে একটি উদাহরণ দিলেন বিএনপির এক নেতা। তিনি জানালেন,‘গত মঙ্গলবার এনডিআই প্রতিনিধিদের সঙ্গে ঐক্যফ্রন্টের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিএনপির মহাসচিবসহ তিন নেতার যাবার কথা ছিল। কিন্তু রাতে দলের মহাসচিবকে ফোন করে তারেক বলেন, এনডিআই এর সঙ্গে বৈঠকে শুধু ড. কামাল হোসেন যাবেন। অন্য কারও যাওয়ার দরকার নেই।’ বিএনপির মহাসচিব এরপর ড. কামাল হোসেনের কাছে ফোন করে কিছু পয়েন্ট দিতে চান। উত্তরে ড. কামাল বলেন, পয়েন্ট লাগবে না। ওনার সঙ্গে কথা হয়েছে।’ উনি বলতে ড. কামাল তারেককে বুঝিয়েছেন।’ শুধু এটা নয়, গতকাল মঙ্গলবার তারেক আইনজীবী কায়সার কামালকে ফোন করে ড. কামাল হোসেনের বাসায় যেতে বলেন। এ সময় কায়সার বলেন, ঠিক আছে আমি ওনাকে ফোন করছি।’ জবাবে তারেক বলেন, ‘ফোন করার দরকার নেই। উনি তোমার অপেক্ষায় আছেন। বিএনপির মধ্যেই এখন কানাঘুষা চলছে, ড. কামাল আর তারেক জিয়ার মধ্যে কোটি টাকার কাবিন হয়েছে।’
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।