নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:০৮ পিএম, ০৬ ডিসেম্বর, ২০১৮
২৮ অক্টোবর, ২০১২। সাতদিনের সফরে ভারতে এলেন বাংলাদেশের বিরোধী দলের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। ২০০১-০৬ সালে ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে ভারতের সঙ্গে বিএনপির যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছিল তা দূর করাই এই সফরের প্রধান লক্ষ্য ছিল। ভারত সরকারও বাংলাদেশে সব দলের সঙ্গে বন্ধুত্ব নীতিতে বেগম জিয়াকে আমন্ত্রণ জানায়। বেগম জিয়াও সফরের আগে এক নিবন্ধে দুই দেশের অটুট বন্ধুত্বকে এগিয়ে নেওয়ার আশাবাদ জানান।
বেগম জিয়ার বৈঠক শুরু হয় তৎকালীন বিরোধী দলের নেতা সুষমা স্বরাজের সঙ্গে বৈঠকের মধ্যে দিয়ে। প্রধানমন্ত্রী, সোনিয়া গান্ধী সহ অনেকের সঙ্গেই বৈঠক করেন বিএনপি চেয়ারপারসন। তবে এই সফরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক ছিল জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিবশংকর মেননের সঙ্গে সাক্ষাৎ। এই বৈঠক ছিল বিএনপির জন্য সবথেকে চ্যালেঞ্জিং। ২০০৪ সালে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জে এন দীক্ষিত আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপির বিরুদ্ধে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মদদ দেওয়ার অভিযোগ আনেন। ডিসেম্বরের দীক্ষিত কমিশন, ১০ ট্রাক অস্ত্রের ঘটনায় সরাসরি তারেক রহমানকে অভিযুক্ত করে। কমিশনের ওই রিপোর্টে তারেককে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। প্রতিবেদনে তারেক জিয়াকে ‘বিশ্বাসঘাতক, লোভী এবং মিথ্যাবাদী’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। কারণ, ২০০০ সালে তারেক জিয়া ভারত সফর করেন। ওই সময় ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা এবং গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ এর সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছিল। যাতে তারেক ভারতে গ্যাস রপ্তানি, ট্রানজিট সুবিধা প্রদান এবং বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মদদ না দেওয়ার অঙ্গীকার করেছিলেন। কিন্তু ২০০১ সালে বিএনপি-জামাত জোট ক্ষমতায় আসার পর একটি প্রতিশ্রুতিও পূরণ করেননি। উল্টো, বাংলাদেশকে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহারের সুযোগ দেয়। তারেক জিয়া ওই সময়ে নিয়মিত পাকিস্তানি গোয়েন্দাদের সঙ্গে বৈঠক করতো বলেও ভারতের কাছে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ রয়েছে।
বেগম জিয়ার সঙ্গে বৈঠকের শুরুতেই শিবশংকর মেনন একান্তে বেগম জিয়ার সঙ্গে কিছু কথা বলার ইচ্ছা পোষণ করেন। আনুষ্ঠানিক বৈঠকে বিএনপির প্রতিনিধিরা ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তাঁরা স্পষ্ট বলেন, ‘বিএনপিকে ক্ষমতায় গেলে বাংলাদেশকে বিচ্ছিনতাবাদীদের আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহৃত হতে দেবেন না।‘ মেনন সবই শোনেন। এরপর একান্ত বৈঠকে মেনন জানতে চান ‘হোয়াটস অ্যাবাউট তারেক রহমান, ইওর সান।‘ বেগম জিয়া প্রথমে বুঝতে পারেন নি। তিনি ধারনা করেছিলেন, তারেক জিয়ার স্বাস্থ্যগত খবর জানতেই বোধহয় মেনন এ প্রশ্ন করেছেন। কিন্তু আস্তে আস্তে তাঁর কাছে পরিস্কার হয়, তারেকের খবর নয়, বিএনপিতে তাঁর প্রভাব ও ক্ষমতাবলয় সম্পর্কেই আগ্রহী জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা। আলোচনা বেশ খানিকটা গড়ায়। ভারত চায়, তারেক বিযুক্ত বিএনপি। বিএনপি থেকে তারেককে আলাদা করতে। কিন্তু বেগম জিয়া কিছুতেই তাতে রাজি নন। আলোচনা শেষ হয়। পরে শিবশংকর মেননের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন শমসের মুবিন চৌধুরী। শমসের মুবিনের সঙ্গে শিবশংকর মেননের পূর্ব বন্ধুত্ব। অনানুষ্ঠানিকভাবে মেনন জানান, তাঁরা তারেক জিয়াকে বিশ্বাস করেন না। এই বার্তাটি যেন বেগম জিয়াকে জানিয়ে দেওয়া হয়। শমসের মুবিন বার্তাটি গোপন রেখেছিলেন। কিন্তু ২০১৫ তে বিএনপির লাগাতার আন্দোলন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবার পর অক্টোবরে তিনি বেগম জিয়াকে তারেকের ব্যাপারে ভারতের অবস্থান জানান । বেগম জিয়া এই বক্তব্যে সাবেক এই কূটনীতিকের উপর বেজায় ক্ষেপে যান। ওই মাসেই ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন শমসের মুবিন চৌধুরী। বিএনপিও হয়ে যায় ভারত বিরোধী।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দেশবিরোধী একটি অপশক্তি নানা ভাবে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। তারা নির্বাচন, শান্তি ও উন্নয়নের বিরোধীতায় লিপ্ত। সারাদেশে তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকালে গুলিস্তানের ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটি আয়োজিত প্রচারপত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, গণতন্ত্র, শান্তি, উন্নয়ন নির্বাচনবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। আমাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বান মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের ও প্রগতিশীল শক্তির কাছে, দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব বিরোধী অপশক্তি আমাদের ভিত্তিমূলে আঘাত করতে যাচ্ছে। তাদের আমাদের প্রতিহত করতে হবে, সেজন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
উপজেলা নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটের মাধ্যমে সাংবিধানিক অধিকার প্রয়োগের জন্য জনগণকে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা আহ্বান জানিয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ভোট দিয়ে আপনার নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করুন। আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে জনগণ সব শক্তির উৎস।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, দেশবিরোধী অপশক্তি জাতির পিতার পরিবারকে হত্যা করে জনগণকে সামরিক স্বৈরশাসনের জাঁতাকলে দীর্ঘকাল পিষ্ঠ করেছে। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে হত্যার রাজনীতি বন্ধ করেছেন।
আওয়ামী লীগ ওবায়দুল কাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোটে আগামী ৮ মে। গতকাল সোমবার (২২ এপ্রিল) ছিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। এদিন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা সরে দাঁড়ানোয় তিন উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ কয়েকজন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।
জানা গেছে, নোয়াখালীর হাতিয়া ও ফেনীর পরশুরাম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন। এ ছাড়া বান্দরবানে উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপে রোয়াংছড়ি উপজেলায় আওয়ামী লীগের সমর্থিত প্রার্থী চহ্লামং মারমা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হচ্ছেন। সোমবার ( ২২ এপ্রিল ) মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা সরে দাঁড়ানোয় তিন উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ বেশ কয়েকজন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।
হাতিয়া উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে তিনজন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। তাঁরা হলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলীর ছেলে আশিক আলী, স্ত্রী আয়েশা ফেরদাউস ও জাতীয় পার্টির নেতা মুশফিকুর রহমান। গতকাল আশিক আলী ছাড়া বাকি দুজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন। হাতিয়া উপজেলা পরিষদের বাকি দুটি পদে একজন করে প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন।
জানতে চাইলে মুশফিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর রাজনীতির হাতেখড়ি সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলীর হাতে। তিনি ওই পরিবারের একজন সদস্যের মতো। মাঝখানে কিছু ভুল–বোঝাবুঝির কারণে দূরত্ব থাকলেও তা ঘুচে গেছে। আশিক আলীর সমর্থনে তিনি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন।
স্থানীয় সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী বলেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা জোড় করাতে তাঁর ছেলে প্রার্থী হয়েছেন। দলের অন্য কেউ আগ্রহ দেখাননি। ছেলের প্রতিদ্বন্দ্বীরা নিজ থেকেই প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন।
ফেনীর পরশুরাম উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রার্থীর মধ্যে দুজন গতকাল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন। এতে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন কেবল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ফিরোজ আহমেদ মজুমদার। প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন উপজেলা পরিষদের তিনবারের চেয়ারম্যান ও পরশুরাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল উদ্দিন মজুমদার ও উপজেলার বক্সমাহমুদ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান আবুল হাসেম চৌধুরী।
ভাইস চেয়ারম্যান পদের চারজনের মধ্যে তিনজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন। বর্তমানে একক প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন পরশুরাম উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক নুর মোহাম্মদ শফিকুল হোসেন। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন ইকরামুল করিম মজুমদার, নজরুল ইসলাম ও আবদুল রসুল মজুমদার।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেত্রী শামসুন নাহার পাপিয়া। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন নিলুফা ইয়াসমিন।
এদিকে বান্দরবানে উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপে রোয়াংছড়ি উপজেলায় আওয়ামী লীগের সমর্থিত প্রার্থী চহ্লামং মারমা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। গতকাল চারজন প্রার্থীর মধ্যে তিনজন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করায় চহ্লামং মারমা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন বলে রিটার্নিং এস এম কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন জানিয়েছেন।
তবে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা চেয়ারম্যান প্রার্থীরা বলেছেন, আওয়ামী লীগ নেতাদের অনুরোধ ও প্রচ্ছন্ন চাপে তাঁরা প্রার্থিতা প্রত্যাহারে সম্মত হয়েছেন। রোয়াংছড়ি উপজেলা থেকে আওয়ামী লীগের তিনজন ও জনসংহতি সমিতির সাবেক এক নেতা চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। চারজনের মনোনয়নই রিটার্নিং কর্মকর্তা বৈধ ঘোষণা করেছিলেন। প্রার্থীরা নিজেদের মতো করে প্রস্তুতিও নিয়েছেন। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের পর প্রার্থীরা জানিয়েছেন, গতকাল প্রত্যাহারের শেষ দিনে হঠাৎ করে আওয়ামী লীগের নেতারা তৎপর হয়ে ওঠেন। প্রার্থিতা তুলে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করে এবং প্রচ্ছন্নভাবে চাপ দিতে থাকেন।
মন্তব্য করুন
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জুনাইদ আহমেদ পলক নাটোর তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দেশবিরোধী একটি অপশক্তি নানা ভাবে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। তারা নির্বাচন, শান্তি ও উন্নয়নের বিরোধীতায় লিপ্ত। সারাদেশে তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকালে গুলিস্তানের ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটি আয়োজিত প্রচারপত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
জুনাইদ আহমেদ পলক টানা তিনবারের প্রতিমন্ত্রী। কিন্তু রাজনীতিতে তার পদ পদবী তেমন নেই। রাজনীতিতে এখনও তিনি তরুণ এবং পিছনের সারির নেতা হিসেবে পরিচিত। স্থানীয় পর্যায়ের নেতৃত্ব এবং প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে তিনি বিভিন্ন সময়ে সুনাম কুড়িয়েছেন। কখনও বিতর্কিত হয়েছেন। তবে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে তার পরীক্ষা হলো এবার এবং সেই পরীক্ষায় তিনি শুধু কৃতকার্যই হননি, এ প্লাস পেয়েছেন বলেও অনেকে মনে করছেন।