নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ০৬ ডিসেম্বর, ২০১৮
মনোনয়ন বঞ্চিত আওয়ামী লীগের নেতারা শান্ত, কিন্তু কর্মীরা বিক্ষুব্ধ। দলের হাইকমান্ড মনোনয়ন না পাওয়া নেতাদের বশে আনতে পারলেও মাঠের বিরোধ কমেনি। বরং কর্মীরা মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রচারণা করছে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কাছে এ ধরনের বেশ কিছু তথ্য আসছে। দলের শীর্ষ পর্যায়ে নেতৃত্ব থেকে বার্তা পাঠানো হয়েছে কর্মীদের সামলানোর। আর এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মনোনয়ন বঞ্চিত নেতাদেরই।
ঢাকা-১৩ আসনে মনোনয়ন পাননি দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক। কষ্ট পেলেও তিনি তা মেনে নেন। এক সভা করে আবেগ আপ্লুত কণ্ঠে কর্মীদের নৌকার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ থাকার অনুরোধ জানান। কিন্তু কর্মীরা শুনছে না তাঁর কথা। নানকপন্থীরা মাঠে সাদেক খানের বিরুদ্ধে জোরে সোরেই সক্রিয়। নানকের কর্মীরা চায়ের আড্ডায়, সামাজিক অনুষ্ঠানে সাদেক খানের নানা অপকীর্তির গল্প ছড়াচ্ছেন। নানকের লোকজন এখনো নৌকার পক্ষে নেই।
এরচেয়েও করুণ অবস্থা ঢাকা-৪ এ। এই আসনটি মহাজোটের অন্যতম শরিক জাতীয় পার্টির সৈয়দ আবু হোসেন বাবলাকে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু স্থানীয় আওয়ামী লীগ বিষয়টা মেনে নিতে পারেনি। দফায় দফায় তাঁরা দেখা করছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে। তাঁদের একটাই কথা, যাঁকে ইচ্ছা মনোনয়ন দেন, কিন্তু নৌকা মার্কা যেন থাকে। সর্বশেষ বৈঠকে তাঁরা দলের সাধারণ সম্পাদককে জানিয়ে দিয়েছেন, লাঙ্গলের পক্ষে আওয়ামী লীগের কর্মীরা মাঠে নামবে না। ঢাকা-৭ এর অবস্থাও ভালো না। আওয়ামী লীগ এখানে মনোনয়ন দিয়েছে হাজী সেলিমকে। এই আসনে মনোনয়ন চেয়েছিলেন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) `র সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন। ২০১৪ তে জালাল এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছিলেন। হাজী সেলিম স্বতন্ত্র নির্বাচন করে হারিয়ে দিয়েছিলেন মোস্তফা জালালকে। দুই প্রতিদ্বন্দ্বী কর্মীদের সম্পর্ক তাই যুদ্ধংদেহী। এখানেও মোস্তফা জালালের কর্মীরা হাজি সেলিমের পরাজয় দেখতে চায়।
জামালপুরের দুটি আসনে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষ মুখোমুখি। যে কোনো সময়ে এখানে সহিংসতার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় প্রশাসন। জামালপুর-১ আসন থেকে দুজনকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। এদের একজন সাবেক তথ্যমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ অন্যজন নূর মোহাম্মদ। জানা গেছে, নূর মোহাম্মদই শেষ পর্যন্ত নৌকা প্রতীক পেতে পারেন। কিন্তু পাঁচবারের এমপি আবুল কালাম আজাদের কর্মীরা এটা মানতে নারাজ। জামালপুর-৫ আসনে চারবারের এমপি রেজাউল করিম হীরার বদলে মোজাফফর হোসেনকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। কিন্তু হীরার কর্মীরা বলছে মাঠ আমাদের দখলে। এখানেও নৌকার পক্ষে দলকে ঐক্যবদ্ধ করা অসম্ভব বলে মনে করছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা।
একই অবস্থা মাদারীপুর, ফরিদপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। বহিষ্কারের ভয়ে নেতারা নৌকা প্রতীকের পক্ষে আনুষ্ঠানিকতা করছেন। কিন্তু কর্মীরা ব্যস্ত আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে বিপর্যস্ত করতে। দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা বলছেন, শিগগিরই কেন্দ্রীয় টিম ঐ নির্বাচনী এলাকাগুলোতে যাবে এবং কর্মীদের সঙ্গে কথা বলবে।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি সভাপতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বেগম খালেদা জিয়া শামীম ইস্কান্দার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার জন্য নতুন করে তৎপরতা শুরু করেছে তার পরিবারের সদস্যরা। বিশেষ করে বেগম জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার ইতোমধ্যে বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার জন্য সরকারের বিভিন্ন মহলের সঙ্গে নতুন করে যোগাযোগ শুরু করেছেন। বেগম জিয়া আর ভবিষ্যতে রাজনীতি করবেন না, রাজনীতি থেকে অবসর নেবেন এ রকম একটি বক্তব্য সামনে নিয়ে আসছেন শামীম ইস্কান্দার।
আওয়ামী লীগের তৃণমূল ক্রমশ ভেঙ্গে পড়ছে। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের তৃণমূল সংগঠিত করা এবং বিভেদ-বিভক্তির দূর করার জন্য যে ডাক দেওয়া হয়েছিল তারপর একটু পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছিল বলে বটে। কিন্তু এখন আবার উপজেলা নির্বাচনের প্রাক্কালে সারাদেশে তৃণমূল বিভক্ত হয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগের তৃণমূলকে সামাল দেওয়াই এখন কঠিন হয়ে পড়ছে। একদিকে নির্বাচন কেন্দ্রীক বিরোধ অন্যদিকে দলের চেইন অব কমান্ড ভেঙ্গে যাওয়া আর কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তদারকির অভাবে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ এখন সবচেয়ে সঙ্কটের মুখে পড়েছেন বলেই মনে করছেন আওয়ামী লীগের নেতারাই।