নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:৫৯ পিএম, ০৭ ডিসেম্বর, ২০১৮
ঢাকা ছেড়ে সিঙ্গাপুরে গিয়েই মহাজোট ত্যাগের ঘোষণা দিবেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ। সিঙ্গাপুরে তার জন্য অপেক্ষা করছিলেন তারেক জিয়ার তিন প্রতিনিধি। তারেক জিয়া তাকে ৫০ টি আসন দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলো,সঙ্গে নির্বাচনের যাবতীয় খরচ। এরশাদ-তারেকের সিঙ্গাপুর ষড়যন্ত্রের সব তথ্য সরকারের হাতে এসেছে। সিঙ্গাপুর যেতেই এরশাদ অসুস্থতার নাটক করেছেন বলে বলা হয়, বিদেশে চিকিৎসার জন্য যাওয়ার মতো অসুস্থ নন এরশাদ। সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে,৯ ডিসেম্বর মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহারের আগে তাকে বিদেশে পাঠানো হবে না। প্রয়োজনে এরশাদকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য বলা হয়েছে।
একাধিক সূত্রে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, এরশাদ তারেকের ষড়যন্ত্র শুরু হয় এ বছরের মার্চ মাস থেকে। এরশাদ ছাড়াও এই পরিকল্পনায় জড়িত ছিলেন সদ্য পদচ্যুত জাপা মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদারসহ জাপার প্রভাবশালী দুই নেতা। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর গেলে সেখানে তারেক জিয়ার প্রতিনিধিরা এরশাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ঐ সাক্ষাতে আওয়ামী লীগ সরকারকে হটাতে এরশাদের সহযোগিতা চান তারেক জিয়া। এরশাদকে রাষ্ট্রপতি করা, মঞ্জুর হত্যা মামলা প্রত্যাহার এবং নির্বাচনে মহাজোটের চেয়ে বেশী আসন দেয়ার প্রস্তাব দেয়া হয় এরশাদকে। এরশাদ প্রস্তাবে নীতিগতভাবে রাজী হলে, দুবাইয়ের একটি অ্যাকাউন্টে এরশাদের জন্য একশো কোটি টাকা রাখা হয়। সুত্রমতে, পরিকল্পনা ছিল এমন যে, মনোনয়ন নিয়ে জাপায় অসন্তোষ সৃষ্টি হবে। এরশাদ তখন অসুস্থ হয়ে সিঙ্গাপুরে আসবেন। সেখানে তিনি বিএনপির সঙ্গে ঐক্যের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন। তবে এরশাদ তারেকের ঐক্যের ব্যাপারে ডঃ কামাল হোসেনের আপত্তি ছিল। এজন্য শেষ পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক ঐক্য না করে আসন ভাগাভাগির ঐক্যের পরিকল্পনা দেয়া হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, আসন বণ্টন চূড়ান্ত করতে এরশাদের ঘনিষ্ঠ জাপা নেতা বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে বৈঠক করেন। যেখানে এরশাদের জাতীয় পার্টিকে যে ৫০টি আসন ছাড় দেয়া হবে তাঁর তালিকা তৈরি করা হয়। সূত্রমতে, বিএনপি-জাপা সমঝোতায় যে ৫০ টি আসন জাতীয় পার্টিকে দেয়ার কথা হয়েছিল, তাতে রওশন এরশাদের পছন্দের কেউ ছিল না। এটা জানাজানি হবার পর রওশন এরশাদ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে পুরো ঘটনা জানান। প্রধানমন্ত্রী অবশ্য ঘটনা গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে আগেই জেনেছিলেন। রওশন এরশাদ পুরো ঘটনা জানালে এরশাদকে পদত্যাগের চাপ দেন। এরশান তখন পদত্যাগ না করে মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদারকে সরিয়ে দেন। এদিকে, এরশাদের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার অপেক্ষায় বিএনপিও চূড়ান্ত তালিকা ঘোষণা পিছিয়ে দেয় দু’দফা। অবশ্য বিএনপির একজন নেতা বলেছেন, মহাজোটকে দূর্বল করার যে পরিকল্পনা তারেকের ছিলো তা বাস্তবায়ন হয়েছে। আর যাই হোক জাতীয় পার্টি এবার নির্বাচনেও পূর্ণ শক্তি নিয়ে থাকছে না।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তকে
উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে উপজেলার বিএনপিপন্থি দুই প্রার্থীকে
শোকজ করা হয়েছে।
বিএনপি থেকে শোকজ করা দুই প্রার্থী হলেন, চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী
উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর
রহমান তুষার (কাপ পিরিচ প্রতীক) ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসা (চশমা প্রতীক)।
গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র অফিসিয়াল
প্যাডে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর
নোটিশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৫ এপ্রিল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির
সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিএনপি নেতা হিসেবে
আপনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। নির্বাচনে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার এহেন মনোবৃত্তি সম্পূর্ণরূপে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং দলের
প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা।
দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে জালিয়াতির নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য
আপনার বিরুদ্ধে কেন দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা
হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যকোনো মাধ্যমে পত্র প্রাপ্তির কিংবা ফোনে অবহিত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার
মধ্যে যথাযথ কারণ দর্শিয়ে একটি লিখিত জবাব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় বরাবর
নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাচনে
চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়নের সাবেক
চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান তুষার বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলীয়ভাবে কারণ
দর্শানোর নোটিশ হাতে পেয়েছি। যথাযথ সময়ে আমি নোটিশের জবাবও দেব। তবে ৮ মে উপজেলা পরিষদ
নির্বাচনে আমি জনগণের চাপে পড়ে প্রার্থী হয়েছি। দলীয় সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, জনগণের
ভালোবাসা, দোয়া ও সমর্থন নিয়ে শেষ পর্যন্ত আমি নির্বাচনী মাঠে থাকব। আমি টানা ১৯ বছর
বয়ড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবা করেছি। যার ফলে পুরো উপজেলায় আমার
একটা অবস্থান রয়েছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ আমাকে ভালোবাসে। তাদের ভালোবাসা ও দোয়া
নিয়েই আমি আগামীতে পথ চলতে চাই। আশা করি, এ নির্বাচনে আপামর জনগণ আমার পাশে থাকবে এবং
নির্বাচনে ভালো কিছু হবে, ইনশাআল্লাহ।
তবে বিএনপিপন্থি ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসাকে একাধিকবার মুঠোফোনে
কল দিলেও রিসিভ হয়নি।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।