নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:২৪ পিএম, ০৯ ডিসেম্বর, ২০১৮
চাঁদপুর-১ আসনে বিএনপির সাবেক শিক্ষামন্ত্রী এহসানুল হক মিলনকে বাদ দিয়ে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে মালয়েশিয়া বিএনপির সভাপতি মোশাররফ হোসেনকে। এবার বিএনপির মেনোনয়ন নিয়ে অনেক বিতর্ক হয়েছে, মনোনয়ন বাণিজ্যেরও অনেক অভিযোগ, তবে সবচেয়ে বড় বিতর্ক হলো মিলনকে বাদ দিয়ে মোশাররফকে মনোনয়ন দেওয়া। এহসানুল হক মিলন শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে ব্যাপক আলোচিত ছিলেন, এলাকায়ও তুমুল জনপ্রিয় তিনি। অনেক মামলাও তাঁর বিরুদ্ধে এবং অনেক হয়রানির শিকারও হতে হয়েছে তাঁকে। তাই, এহসানুল হক মিলনেরও চরম শত্রুও তাঁর মনোনয়ন না পাওয়ায় অবাক হয়েছেন। বিএনপির চূড়ান্ত মনোনয়ন মিলনের বদলে অপরিচিত মোশাররফ হোসেনের মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকেই প্রশ্ন উঠেছে কে এই মোশাররফ হোসেন? আর কীভাবে তিনি বিএনপির ওপর এত প্রভাবশালী হলেন মিলনকে সরিয়ে তাঁকে মনোনয়ন দেওয়া হলো?
চাঁদপুর-১ আসনে এহসানুল হক মিলনের বদলে বিএনপির চূড়ান্ত মনোনয়ন পাওয়া মোশাররফ হোসেন হলেন মালয়েশিয়া বিএনপির সভাপতি। আর বর্তমান বিএনপির ওপর তাঁর প্রভাবের বিষয়টি বুঝতে হলে একটু পেছনে ফিরে তাকাতে হবে।
২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি মালয়েশিয়ায় মারা যান জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদার জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো। তাঁর মৃত্যু নিয়ে অনেক রহস্য দেখা যায়। মৃত্যুর কিছুদিন আগে বড় ভাই লন্ডনে পলাতক বিএনপির তৎকালীন সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সঙ্গে কোকোর বড় ধরনের বিরোধ হয়েছিল।
কোকোর মৃত্যুর পর মালয়েশিয়ায় মামলা হয়, যেখানে কোকোর মৃত্যুকে হত্যাকাণ্ড বলে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়। আর এর সঙ্গে তারেক জিয়াসহ অনেকের জড়িত থাকার কথা বলা হয়েছে।
ওই মামলার কারণেই লন্ডনে আশ্রয় নেওয়া তারেক জিয়া বিশ্বের অনেক জায়গায় যেতে পারলেও মালয়েশিয়া যেতে পারেন না।
কোকোর মৃত্যুর পর মামলা ধামাচাপা দেওয়ার জন্যই মালয়েশিয়া বিএনপির সভাপতি মোশাররফ হোসেনকে নিযুক্ত করেন তারেক জিয়া।
মৃত্যুর আগে দীর্ঘদিন স্ত্রী কন্যাদের নিয়ে মালয়েশিয়ায় বসবাস করেছেন কোকো। মালয়েশিয়ায় তাঁর বিপুল সম্পদ, ব্যবসা-বাণিজ্য ছিল, যা তাঁর মা বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কাছ থেকে পাওয়া বলেই মনে করা হয়। কোকোর মৃত্যুর ১৫ দিনের মধ্যেই মালয়েশিয়া থেকে তাঁর সব ব্যবসা-বাণিজ্য গুটিয়ে ফেলা হয়। বিক্রি করে দেওয়া হয় কোকোর সব সম্পত্তিও। আর ব্যবসা ও সম্পদ বিক্রির সব অর্থই চলে যায় লন্ডনে। তারেকের লন্ডনের অ্যাকাউন্টেই সব অর্থ জমা হয়।
মালয়েশিয়ায় থাকা কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিঁথি তাঁর কন্যাদের নিয়েও কিছুদিনের মধ্যে লন্ডনে পারি জমান। অথচ ওই সময় তাঁর দুই মেয়েরই মালয়েশিয়ার স্কুলে মাঝামাঝি সময় চলছিল। এরপর থেকে লন্ডনে তারেকের দয়ার ওপরই চলছেন কোকোর স্ত্রী, সন্তানরা।
জানা গেছে, মালয়েশিয়ায় কোকোর সব সম্পত্তি দখলে তারেক জিয়াকে সহায়তা করেছেন সেই মোশাররফ হোসেন। মালয়েশিয়ার মোশাররফ তারেক জিয়ার সব কিছুরই খবর জানেন। কোকোর হত্যাকাণ্ড, সম্পদ কুক্ষিগত করা সবকিছুরই সাক্ষী মোশাররফ।
প্রায় ১৯ বছর ধরে মালয়েশিয়ায় আছেন মোশাররফ হোসেন। চাঁদপুরের সঙ্গে তেমন কোনো সম্পর্কই নেই তাঁর। কিন্তু শুধুমাত্র মালয়েশিয়া-কাণ্ডের কারণেই এহসানুল হক মিলনের মতো বিএনপির হেভিওয়েট ও তুমুল জনপ্রিয় নেতাকে বাদ দিয়ে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে মোশাররফ হোসেনকে।
নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, মোশাররফকে খুশি রাখা তারেক জিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আর তারেক জিয়া ব্লাকমেইলেরও সুযোগ আছে মোশাররফের। কারণ, মোশাররফই জানে কোকোর মৃত্যুর রহস্য এবং সেখানে তারেক জিয়ার সংশ্লিষ্টতা। সে ভালোভাবেই জানে কোকোর সম্পদ বিক্রির বিপুল অংকের টানা কীভাবে লন্ডনে গেল, তারেকের মাধ্যমে আত্মসাৎ হলো। মোশাররফকে ম্যানেজ করা তারেক জিয়ার জন্য জরুরি ছিল বলেই মিলনকে বাদ দিয়ে চাঁদপুর-১ দেওয়া হয়েছে মোশাররফকে।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।
আওয়ামী লীগ দলগতভাবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট এবং কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলায় মন্ত্রী, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাই ব্রাদার বা স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না। যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।