নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ০৯ ডিসেম্বর, ২০১৮
বিএনপির দুঃসময়ের কাণ্ডারি খন্দকার দেলোয়ার হোসেন। তাঁর ছেলে খন্দকার আবদুল হামিদ ডাবলু। গত সেপ্টেম্বর মাসে তাঁর কাছে একটি ক্ষুদে বার্তা আসে। এতে বলা হয়, মনোনয়ন চাইলে যেন লন্ডনে তারেক জিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করে। এই বার্তা পেয়ে ডাবলু দেখা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে। জানতে চান মনোনয়নের জন্য তাঁকে লন্ডনে যোগাযোগ করতে হবে কিনা। মির্জা ফখরুল এটাকে ‘ভুয়া বার্তা’ বলে উড়িয়ে দেন। ডাবলুকে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘তুমি দেলোয়ার ভাইয়ের ছেলে, আমি মনোনয়ন পেলে তুমিও পাবে।’ অক্টোবরে ডাবলুকে স্থানীয় কয়েকজন কর্মী জানান, এস. এ জিন্নাহ কবির মনোনয়ন চূড়ান্ত করতে লন্ডন গেছেন। দামদর রফা হলে জিন্নাহ কবিরই হবেন মানিকগঞ্জ-১ থেকে বিএনপির প্রার্থী। ডাবলু আবার যোগাযোগ করেন মির্জা ফখরুলের সঙ্গে। এবার মির্জা ফখরুল একটু বিরক্তই হন। এসব ফালতু কথায় কান না দিয়ে এলাকা গোছানোর পরামর্শ দেন ডাবলুকে। নভেম্বরের শুরুতে জিন্নাহ মানিকগঞ্জে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন, ‘ভাইয়া তাঁকে মনোনয়ন দিয়েছে।’ তখন থেকেই মাঠে জিন্নাহ কবির। বিএনপির চূড়ান্ত মনোনয়নে দেখা যায়, ডাবলু নেই, জিন্নাহ আছে। খন্দকার দেলোয়ার পুত্র দাবি করছেন, জিন্নাহ বিভিন্ন জায়গায় দাবি করেছেন যে, তারেক জিয়াকে ১০ কোটি টাকা দিয়ে মনোনয়ন কিনেছেন। শুধু ডাবলু একা নয়, তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে মনোনয়ন বাণিজ্যের এখন বিএনপিতে প্রকাশ্যেই চর্চা হচ্ছে। গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের সামনে, নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের রাস্তায় দাঁড়ালেই শোনা যায় কোন আসন কত টাকায় বিক্রি হয়েছে।
এহসানুল হক মিলনের ঘনিষ্ঠ চাঁদপুর বিএনপির সহ-সভাপতি বললেন, ‘মিলন ভাইয়ের কাছে তারেক ১০ কোটি টাকা চেয়েছিল। কিন্তু গ্রেপ্তার হয়ে যাওয়ার কারণে তিনি টাকা দিতে পারেননি, তাই তাঁকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। শামসুজ্জামান দুদু বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা। তাঁকে লন্ডনে যেতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তিনি পাত্তা দেননি, মনোনয়নও পাননি।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বিএনপির মনোনয়ন পাওয়াদের মধ্যে ১০৬ জনই এক বছরের মধ্যে অন্তত একবার লন্ডনে গেছেন। যেমনটি বলছিলেন বিএনপির ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতা তৈমুর আলম খন্দকার। তিনি নারায়ণগঞ্জ-১ আসন থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলেন। তাঁর শুভাকাঙ্ক্ষীরা তাঁকে তারেক জিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিয়েছিল। কিন্তু এসবে কান দেননি তৈমুর। বলছিলেন, ‘লন্ডনে যোগাযোগ করি নাই, তাই মনোনয়ন পাইনি।’ বললেন, ‘এই রাজনীতিকে ঘৃণা করি।’ এভাবেই বিএনপিতে ছড়িয়ে পড়েছে তারেকের মনোনয়ন বাণিজ্যের খবর। বিএনপির একজন সিনিয়র নেতা বলেছেন, ‘তারেক জিয়া এবার কোনো রাখঢাক না রেখেই মনোনয়ন বাণিজ্য করেছেন।’ উল্লেখ্য, শেষ পর্যন্ত দলের সিনিয়র নেতাদের চাপে দেলোয়ার পুত্র ডাবলুকে মনোনয়ন দেওয়া হলেও মনোনয়ন বাণিজ্যের খবর ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।
আওয়ামী লীগ দলগতভাবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট এবং কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলায় মন্ত্রী, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাই ব্রাদার বা স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না। যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।