নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:৩২ পিএম, ০৯ ডিসেম্বর, ২০১৮
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের `অসুস্থতা’ এখনো স্পষ্ট নয়, তিনি চিকিৎসায় সিঙ্গাপুর যাবেন কি? এই প্রশ্নের জবাব মিলবে বলে মনে হয় না। আর সদ্য বিদায়ী রুহুল আমিন হাওলাদারের অবস্থান পার্টিতে কী হবে, তা আগের দিন আর পরের দিন হলো দু’ধরনের। তবে তিনি জাপা চেয়ারম্যানের বিশেষ সহকারী থাকছেন। আর তার মনোনয়নপত্র অবৈধ হয়ে গেছে ঋণখেলাপীর কারণে। কিন্তু তার স্ত্রী নাসরিন জাহান রত্না মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে লড়াইয়ে থাকবেন বরিশাল-৬ আসনে।
বরিশাল-৬ আসনের মত আরও ২৮টি আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে ভোটযুদ্ধে নামছেন। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদও রংপুর-৩ আসনে লাঙ্গল প্রতীকে প্রার্থী হচ্ছেন, আওয়ামী লীগের নৌকা থাকছে না এই আসনে। জাতীয় পার্টির দুই কো-চেয়ারপারসন বর্তমান সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদও মহাজোটের প্রার্থী ময়মনসিংহ-৪ আসনে। আর জাতীয় পার্টির অপর একজন কো-চেয়ারপারসন জি এম কাদেরও লালমনিরহাট-৩ আসনে লড়বেন লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে। এখানেও বলি হয়েছেন নৌকার প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগ নেতারা। জাতীয় পার্টির মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা মহাজোটের প্রার্থী হচ্ছেন রংপুর-১ আসনে। ওয়ান ইলেভেন সরকারের প্রভাবশালী সামরিক কর্মকর্তা লে. জেনারেল (অব) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীও এবার জাতীয় পার্টির কোটায় মহাজোটের প্রার্থী হলেন ফেনী-৩ আসনে। জাতীয় পার্টির হেভিওয়েট নেতা কিন্তু ভোটে মহাজোটের প্রার্থীদের মধ্যে আরও আছেন পরিবেশ ও বন মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ (চট্টগ্রাম-৫), শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু (কিশোরগঞ্জ-৩), কাজী ফিরোজ রশীদ (ঢাকা-৬) এবং সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা ( ঢাকা-৪) প্রমুখ।
৩০০ আসনের মধ্যে আরও ১৩২টি আসনে থাকছে লাঙ্গল প্রতীক। এসব আসনে থাকবে নৌকা নিয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থীরাও। এগুলোতে বিএনপির প্রতীক থাকবে, ফলে ত্রিমুখী লড়াই হবে এসব আসনে। ২০০৮ সালেও আমরা এমন ত্রিমুখী লড়াই দেখেছিলাম বেশ কয়েকটি আসনে। তখন নীলফামারী-৪ আসনে ছিল নৌকা, লাঙ্গল ও ধানের শীষের প্রার্থী। এই আসনে আওয়ামী লীগের মারুফ সালায়েন জয়ী হয়েছিলেন। দ্বিতীয় হয়েছিলেন জাতীয় পার্টির শওকত চৌধুরী এবং তৃতীয় স্থানে ছিলেন বিএনপির আমজাদ হোসেন চৌধুরী। রংপুর-৪ আসনেও ত্রিমুখী লড়াইয়ে জয়ী হয়েছিলেন আওয়ামী লীগের টিপু মুন্সী, দ্বিতীয় জাতীয় পার্টির করিম উদ্দিন ভরসা এবং তৃতীয় বিএনপির রহিম উদ্দিন ভরসা। গাইবান্ধা-৫ আসনে সেবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বীর কাছে হেরেছিলেন বর্তমান বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ। এখানে তৃতীয় হয়েছিলেন বিএনপির হাসান আলী। অবশ্য ত্রিমুখী লড়াইয়ে রওশন এরশাদ জয়ী হয়েছিলেন ময়মনসিংহ- ৪ আসন থেকে। এখানে আওয়ামী লীগের অধ্যক্ষ মতিউর রহমান দ্বিতীয় এবং বিএনপির এ কে এম মোশারফ হোসেন তৃতীয় হয়েছিলেন। কুষ্টিয়া-৩ সহ আরও কয়েকটি আসনেও নৌকা-ধানের শীষ ও লাঙ্গলের ত্রিমুখী লড়াই হয়েছিল।
২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয়নি, কিন্তু সেই নির্বাচনে জাতীয় পার্টি অংশ নিয়ে হাসপাতালে যাওয়া থেকে শুরু করে নানা নাটক করেছিলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ। এবারো তেমন নাটক সাজানো হলেও তা খুব বেশি জমেনি। বরং দলের অভ্যন্তরীণ নাটকে বদলে গেছে মহাসচিব। আগের রাতে ঋণখেলাপির অভিযোগে মনোনয়ন বাতিল এবং পরেরদিন মহাসচিবের পদ হারিয়েছিলেন রুহুল আমিন হাওলাদার। এরপর জাপা চেয়ারম্যানের বিশেষ সহকারী হয়ে হাইকোর্টে রিট করেছেন নিজের মনোনয়নের বৈধতার চেয়ে।
বাংলা ইনসাইডার/এমআর/জেডএ
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।