নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১০ ডিসেম্বর, ২০১৮
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য দেশের ৩০০ সংসদীয় আসনে প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ শেষ। আজ সোমবার প্রতীক বরাদ্দ শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারণা। সারা দেশের অধিকাংশ আসনেই আনুষ্ঠানিক ভাবে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছে অংশগ্রহণকারী দলগুলো।
বেশ জোরেশোরেই নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। তবে উল্টো চিত্র দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপির প্রার্থীদের ক্ষেত্রে। বিএনপির মনোনয়নপ্রাপ্তদের মধ্যে তেমন কোনো নির্বাচনী প্রচারণার খবর পাওয়া যায়নি। দেশের বিভিন্ন আসনে বিএনপির যারা মনোনয়ন পেয়েছেন তারা বিএনপি সমর্থকদের দ্বারাই প্রতিরোধের মুখে পড়ছেন। এমন অনেক নেতাই আছেন যারা এলাকায় প্রবেশ করতে পারেননি এবং স্থানীয় বিএনপি দ্বারা তাদেরকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে।
বরিশাল-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন জহিরউদ্দিন স্বপন। কিন্তু তাঁকে সংস্কারবাদী চিহ্নিত করে বয়কটের আহ্বান জানিয়েছে বরিশাল বিএনপি। তাঁকে এলাকায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে এবং এলাকায় ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। চাঁদপুর-১ আসনে ধানের শীষের প্রতীক পেয়েছেন মালয়েশিয়া প্রবাসী মোশাররফ হোসেন। তাঁকেও বর্জন করেছে চাঁদপুর বিএনপি।
বিএনপির এমন দলীয় কোন্দল কোন খণ্ডচিত্র নয়, বরং দলটির অধিকাংশ আসনেই একই চিত্র পরিলক্ষিত। বেশিরভাগ আসনে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করতে পারেনি বিএনপির নেতারা।
এ বিষয়ে বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম খান বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন, ‘এটা সাময়িক সমস্যা। এমন মান অভিমান নেতাকর্মীদের মধ্যে থাকবে এটাই স্বাভাবিক। তবে খুব শিগগিরই আমরা এটা সামলে নিতে পারবো এবং খুব শিগগিরই বিএনপি প্রচারণায় নামতে পারবে।’
যদিও নজরুল ইসলাম খানের সঙ্গে একতম পোষণ করতে পারেননি বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আমাদের নেতারা মামলার খড়গ মাথায় নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের পক্ষে এই অবস্থায় নির্বাচনী প্রচারণা চালানো সম্ভব নয়। আদালত থেকে আমরা জামিন নেওয়ার চেষ্টা করছি। জামিনে বের হলেই আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করবো।’
তবে সারা দেশে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে যে, দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপির মূল সমস্যা হলো মনোনয়ন নিয়ে নৈরাজ্য ও অসন্তোষ। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মনোনয়নবঞ্চিতদের ক্ষোভ। এই অসন্তোষ ও ক্ষোভের কারণে নির্বাচনী প্রচারণায় নামতে পারছেন না মনোনীত প্রার্থীরা।
যদিও যে সকল আসনে মনোনয়ন নিয়ে কোনো কোন্দল নেই, সেরকম কিছু কিছু আসনে বিএনপি নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছে বলে দলটির কিছু কিছু নেতা বলেছেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান এ বিষয়ে জানান, ঠাকুরগাঁও-১ এ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, কুমিল্লা-১ এ ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। কিংবা ঢাকা-৮ এ আফরোজা আব্বাসের আসনগুলোতে ইতিমধ্যে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হয়েছে।
কিন্তু সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে দেখা গিয়েছে, এসব আসনে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর জন্য এখন পর্যন্ত কমিটি গঠন করা হয়নি।
অনেকের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে, বিএনপি শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার না করে নির্বাচনে থাকার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরও এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচার শুরু করছে কি না! নির্বাচনকে অন্যখাতে নিয়ে যাওয়ার কোনো চেষ্টা বিএনপির এখনো আছে কিনা তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে অনেক প্রশ্ন রয়েছে।
বাংলা ইনসাইডার/এমআর/জেডএ
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।
আওয়ামী লীগ দলগতভাবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট এবং কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলায় মন্ত্রী, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাই ব্রাদার বা স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না। যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।