নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৮
নির্বাচনী প্রচারণায় ‘হামলা’ কৌশল নিয়েছে বিএনপি। বিভিন্ন স্থানে বিএনপি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ঠাকুরগাঁও এ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গাড়ি বহরে হামলার ঘটনা ঘটে। এর আগে চুয়াডাঙ্গা এবং মুন্সিগঞ্জেও বিএনপি প্রার্থীদের গাড়ি বহরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় সাধারণ মানুষের মধ্যে বিএনপির প্রতি সহানুভূতি সৃষ্টি হচ্ছে। আওয়ামী লীগের ব্যাপারে নেতিবাচক মনোভাব প্রকাশ পাচ্ছে। অনেক সাধারণ মানুষ একটু বিরক্ত হয়েই প্রশ্ন তুলছে কেন এই ঘটনা ঘটাচ্ছে আওয়ামী লীগ?
বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থীদের গাড়ি বহরের হামলার ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করলে এসবে কিছু একই বৈশিষ্ট্য পাওয়া গেছে। যেমন:
১. গাড়ি বহরে হামলা হয়েছে অতর্কিত। সংঘবদ্ধভাবে নয়।
২. কিছু বিক্ষুব্ধ মানুষ হঠাৎ ই এসে এলোপাথাড়ি ভাবে গাড়ি বহরে হামলা করেই চলে গেছে।
৩. হামলার ঘটনায় কোনো পরিচিত দলীয় কর্মী উপস্থিত ছিলেন না। কোন ঘটনাতেই আক্রমণকারীদের দলীয় পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি।
৪. প্রত্যেক ঘটনার পর আওয়ামী লীগকে ঘটনার জন্য দায়ী করে বিএনপি তাৎক্ষণিক বিবৃতি দিয়েছে।
৫. প্রতিটি ঘটনাতেই বিএনপির মূল প্রার্থী সম্পূর্ণ অক্ষত ছিলেন।
প্রশ্ন হচ্ছে, আওয়ামী লীগ কি জানে না যে ভোটের সময় এ ধরনের ঘটনা তাদের বিপক্ষে যাবে? আওয়ামী লীগ নিজেরা কেন নিজেদের পায়ে কুড়াল মারবে?
অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রতিটি ঘটনার পরই স্থানীয় আওয়ামী লীগ ঘটনার বিব্রত এবং বিচলিত। এই ঘটনা কারা ঘটাচ্ছে, কীভাবে ঘটাচ্ছে, এ সম্পর্কে তারা কোনো কুল কিনারাই পাচ্ছে না। ঠাকুরগাঁওয়ে মির্জা ফখরুলের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন। তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমরা তো আমাদের প্রচারণায় ব্যস্ত। আওয়ামী লীগ কেন এরকম হামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত হবে?’
বাংলা ইনসাইডারের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এইসব হামলাগুলো একই সূত্রে গ্রথিত। বিএনপি তার নির্বাচনী প্রচারণায় এই ‘হামলা’র ঘটনাকে ব্যাবহার করছে। অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, প্রতিটি ঘটনায়, বিএনপির একটি অংশ এই হামলার সঙ্গে জড়িত। মুন্সিগঞ্জে শাহ মোয়াজ্জেমের গাড়ি বহরের হামলার পর তদন্তে দেখা যায় যে, বিএনপির একটি পক্ষ এই হামলার ঘটনায় জড়িত ছিল। জানা গেছে, বিভিন্ন স্থানে বিএনপি এধরনের হামলা ঘটানোর জন্য নিজস্ব একটি টিম করেছে। এই টিম বিভিন্ন স্থানে তাঁদের দলের প্রার্থীদের গাড়ি বহর, সমাবেশস্থল, প্রচারণা কেন্দ্র, ইত্যাদিতে আক্রমণ করবে। এই আক্রমণের ফলে, বিএনপির জনপ্রিয়তা বাড়বে, আওয়ামী লীগ কোণঠাসা হয়ে পরবে। বিএনপির নেতারাই বলছেন, ‘নির্বাচনের আগে বিএনপির অনেক প্রার্থীর উপরই হামলার আশঙ্কা রয়েছে।’ তিনি কীভাবে এরকম তথ্য পেলেন, জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে খবর আছে।’ কিন্তু একাধিক সূত্র বলছে, এরকম হামলার পরিকল্পনা লন্ডন থেকেই এসেছে। এটাই বিএনপির কৌশল।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।