নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১২ ডিসেম্বর, ২০১৮
ডিসেম্বর মাস বাঙালির জাতীর আবেগ এবং বিজয়ের মাস। দুইদিন পরেই শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। বাঙালি জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তান এইসব শহীদ বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে জামাতকে অভিযুক্ত করা হয়। সেই ডিসেম্বর মাসের নির্বাচনে জামাত শক্তিশালী দল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। আসন্ন একাদশ জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে জামাত দেশের তৃতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশের সম্ভাবনা প্রবল হয়ে উঠেছে। এবারের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামাত ২২টি আসনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করার ফলে জামাত আরও বাড়তি সুবিধা পাবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
এবারের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে লাভবান যে দল, তার নাম হচ্ছে জামাতে ইসলাম। দলটির নিবন্ধন বাতিল হয়েছে। রাজনৈতিক দল হিসেবে জামাতের অস্তিত্ব সংকটে পরেছে। জামাতের শীর্ষ নেতারা যুদ্ধাপরাধের দায়ে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড পেয়েছে। জামাতের একজন শীর্ষ নেতা যুদ্ধাপরাধের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্ত হয়ে কারাগারে আছেন। জামাতের আরেকজন শীর্ষ নেতা যুদ্ধাপরাধের মামলা এড়াতে পালিয়ে লন্ডনে অবস্থান করছেন। জামাতের এই নেতার নাম হচ্ছে ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক। শীর্ষ নেতৃত্ববিহীন এমন ক্ষত-বিক্ষত হয়েও জামাত এখন সবচেয়ে বেশি লাভবান হচ্ছে। জামাত নেতারা এখন প্রকাশ্যে বলছেন, আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামাত ন্যুনতম ১৫টি আসনে জয়লাভ করবেন।
নিবন্ধন না থাকায় বিএনপি জামাত ইসলামকে আশ্রয় দিয়েছে। বিএনপি শুধু জামাতকে আশ্রয়ই দেয়নি, ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে দিয়েছে ২২টি আসন ছেড়ে দিয়েছে। দেখা যাচ্ছে কোন নির্বাচনেই জামাত এতগুলো আসনে জয়ী হতে পারেনি। কিন্তু তারপরেও জামাতের প্রতি বিএনপির যে বদান্যতা, সে বদ্যানতার কারণে বিএনপি জামাতের সম্পর্ক আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে এবারের নির্বাচনে মাধ্যমে। জামাতের একাধিক নেতা বলছে ধানের শীষ প্রতীক নেবার কারণে জামাতের লাভই হয়েছে, কারণ দাঁড়িপাল্লা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করলে জামাতকে অনেকে ভোট দিত না। জামাতের বিষয়ে অনেকের আপত্তি ছিল। কিন্তু ধানের শীষ প্রতীক নেবার কারণে বিএনপির ভোটারদের জামাতকে সহজেই ভোট দিতে হচ্ছে।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে এবারের নির্বাচনে একটা বিস্ময়কর বিষয় দেখা যাছে যে, জামাত নামের যে রাজনৈতিক দলটি নিঃশেষ হয়ে যাবার কথা, সেই রাজনৈতিক দল কিভাবে নির্বাচনে তৃতীয় বা চতুর্থ রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে, সেটাই এখন রাজনীতিতে একটি রহস্যময় প্রশ্ন।
দেখা যাছে এবারের নির্বাচনের মাঠে জামাত অনেক সক্রিয়। নির্বাচনের শুরুর দিক থেকেই জামাতকে তাঁদের নির্বাচনী প্রচারণায় দেখা যাচ্ছে। জামাতকে নিয়ে অনেকে আশঙ্কা করেছিল দলটি অচিরেই বিলীন হয়ে যাবে। সেই জামাত যেভাবে শক্তিশালী দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলো। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করে এবারের নির্বাচনে জামাতের তৃতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশেরও একটা সম্ভাবনা রয়েছে। কিভাবে জামাতের এমন উত্থান ঘটলো সে সম্বন্ধে রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহল বেশ কিছু বিষয়ের উল্লেখ করছেন। বিষয়গুলো হল:
১. বিএনপির বদান্যতা: জামাতের উপর দিয়ে যে এত ঝড় গেছে, তাদের শীর্ষ নেতারা যুদ্ধাপরাধের দায়ে দণ্ডিত হয়েছে তারপরও বিএনপি জামাতকে ত্যাগ করেনি। জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে বিএনপি জামাতের সঙ্গে গাঁটছড়া বাধার কারণে সমালোচিত হয়েছে। অনেকেই বিএনপিকে জামাতের সঙ্গ ত্যাগ করার কথা বলেছে। কিন্তু বিএনপি সকল সমালোচনা উপেক্ষা করে জামাতকে আগলে রেখেছে। যার ফলে জামাত আজ নির্বাচন করতে পারছে এবং তাদের পুনরুজ্জীবনের একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
২. সেক্যুলার রাজনৈতিক দলগুলোর ব্যর্থতা: দেশের বাম প্রগতিশীল রাজনৈতিক দলগুলো যতটা আওয়ামী লীগের সমালোচনা করেছে, ততটা জামাত এবং যুদ্ধাপরাধীদের সমালোচনা করেনি। জামাতের রাজনীতি নিয়ে তাঁরা কোন সুস্পষ্ট বক্তব্য রাখেনি। বরং তাঁরা সরকারের বিরুদ্ধে গালভরা বক্তব্য দিয়েই রাজনীতির মাঠ উত্তপ্ত করেছে। যার ফলে জামাত আড়ালে থেকে সংগঠন গুছিয়েছে। তাদের যে সমস্ত কর্মীরা বাইরে ছিল তাদের একাট্টা করেছে। নির্বাচনের মাঠে জামাত এখন বামদের চেয়েও যে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে তা আজ স্পষ্ট বোঝা যায়।
৩. জামাতের দৃঢ় সাংগঠনিক ভিত্তি: এটা প্রমাণিত সত্য যে যেকোনো রাজনৈতিক দল যদি জামাতের মত অবস্থায় পড়ত তাহলে সে সংগঠনটির অস্তিত্ব থাকতো কিনা সন্দেহ। জামাতের প্রথম সারির শীর্ষ নেতারা কারাভোগ করছেন অথবা যুদ্ধাপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন। তারপরেও সংগঠনটিকে টিকিয়ে রাখাই হলো একটি ক্যাডারভিত্তিক সংগঠনের মূল বৈশিষ্ট্য। তাদের ভুল আদর্শকে লালন করে তাদের ক্যাডাররা সব কিছু উপেক্ষা করে সংগঠনকে টিকিয়ে রেখেছে।
৪. আন্তর্জাতিক সহযোগিতা: জামাত সবসময়ই একটি দক্ষিনপন্থী ইসলামী রাজনৈতিক দল। পাকিস্তান জামাতকে প্রকাশ্যে সমর্থন করে। জামাতের যুদ্ধাপরাধীদের যখন ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল, তখন পাকিস্তানের পার্লামেন্টে এর বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব আনা হয়েছিল। জামাতকে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন এবং পাকিস্তান প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ আর্থিক সাহায্য ছাড়াও অন্যান্য সহায়তা দিয়েছে। একারণে জামাতের অস্তিত্ব টিকে আছে বলে অনেকে মনে করেন।
৫. রাজনৈতিক ব্যর্থতা: জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট যখন গঠিত হয় তখন ঐক্যফ্রন্টের সবগুলো দলই বলেছিল যে, জামাতকে আমরা জোটে নেবো না। কিন্তু বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভোটের হিসেবে আদর্শ জলাঞ্জলি দেওয়ার যে সংস্কৃতি তাঁর উদাহরণ হলো জামাতকে নিয়ে ড. কামাল, আ স ম আব্দুর রব এবং সুলতান মোহাম্মদ মনসুরের মত নেতাদের নির্বাচন করা। রাজনীতিতে যেকোনো মূল্যে জয়ী হতে হবে এবং এখানে আদর্শ বা নৈতিকতা যে মূল্যহীন সেটাই এবারের নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এবং বিএনপির ঐক্যের মধ্যদিয়ে প্রমাণিত হয়েছে। যখন রাজনীতি থেকে আদর্শ বিবর্জিত হয় তখন জামাতের মত ধর্মান্ধ, মৌলবাদী এবং সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দলগুলোর উত্থান ঘটবে এটাই স্বাভাবিক।
বাংলা ইনসাইডার/আরকে
মন্তব্য করুন
ভারত বিরোধী বিএনপি রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
বিএনপি নেতারা জিয়াউর রহমানকে নিয়ে যেসব কথা বলে তা শুনলে জিয়াউর
রহমানও কবরে শুয়ে লজ্জা পেয়ে যেতেন বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
শুক্রবার (২৯ মার্চ) রাজধানীর প্রেসক্লাবে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
এ সময় তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান জীবদ্দশায় কখনো শুনেননি তিনি স্বাধীনতার ঘোষক।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, স্কুল ঘণ্টা যেমন দপ্তরি বাজায়, তেমনি জিয়াউর
রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেছিলেন বঙ্গবন্ধুর পক্ষে। আজকে বিএনপি নেতা আব্দুল মঈন
খান অনেক কথা বলেন। মঈন খানের বাবা আব্দুল মোমেন খান ৭৪ সালে খাদ্য সচিব ছিলেন। তিনি
ষড়যন্ত্র করে মার্কিন খাদ্যবাহী জাহাজ ফেরত পাঠিয়েছিলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমান আব্দুল মোমেন খানকে মন্ত্রী
বানিয়েছিল। মঈন খান নিজেও সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছিল, দরকার পড়লে দেশ বিক্রি করে দেব।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান
মাহমুদ বলেন, দেশ সমৃদ্ধির দিকে যখনই এগিয়ে যাচ্ছিল তখনই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়।
বিএনপি জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক বানানোর জন্য যেভাবে দাবি করে জিয়াও সেভাবে
কখনো দাবি করেনি। জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের ছত্রছায়া পাকিস্তানিদের পক্ষে কাজ করেছে।
জিয়াউর রহমান আওয়ামী লীগের অধীনেই মুক্তিযুদ্ধের সময় বেতন ভুক্ত কর্মচারী ছিলেন।
তিনি বলেন, বিএনপি নেতাদের কথা হাস্যরসের সৃষ্টি করে। বিএনপির নেতা মঈন খানের বক্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, যার বাবার জন্য এদেশে দুর্ভিক্ষ হয়েছে তার মুখে এসব কথা মানায় না। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর থেকে ইতিহাস বিকৃতি করে বিএনপি নেতারা বিশদকার বিষোদগার করছে কিন্তু এখন সঠিক ইতিহাস জনগনের সামনে আসার পর তাদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। বিএনপির ইতিহাস বিকৃতির পাশাপাশি দেশের জনগণকেও বিভ্রান্তি করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
বিএনপি ড. হাছান মাহমুদ আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
বিএনপি ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করে, অপপ্রচার করে, মিথ্যাচার করছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। শুক্রবার (২৯ মার্চ) আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপ-কমিটির উদ্যোগে ইফতার ও ঈদসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ নেত্রী নির্দেশ দিয়েছেন ইফতার পার্টি না করে, সাধারণ মানুষের মাঝে ইফতার বিতরণ করতে। আর বিএনপি বড় বড় হোটেলে ইফতার পার্টির আয়োজন করে। আর সেই ইফতার পার্টিতে তারা আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করে, অপপ্রচার করে, মিথ্যাচার করে।
তিনি বলেন, বিএনপি নেতারা বলে দিল্লির শাসন মেনে নেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগ পাকিস্তানে সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। আসলে বিএনপির হৃদয়ে এবং চেতনায় পাকিস্তান। আওয়ামী লীগের চেতনা এবং হৃদয়ে বাংলাদেশ, কোনো বিদেশিদের দাসত্ব নয়।
তিনি বলেন, বিএনপির চারদিকে অন্ধকার, শেখ হাসিনার জনকল্যাণমুখী বিচক্ষণ রাজনীতি বিএনপিকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিয়েছে। বিএনপি নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করেছিল। ব্যর্থ হয়ে এখনো অসংলগ্ন কথা বলছে। আশি ভাগ বিএনপি নেতাকর্মীকে দমন-পীড়ন করা হচ্ছে বলে তারা মিথ্যাচার করছে।
এসময় মির্জা ফখরুলকে মিথ্যাচার করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, তাদের মিথ্যাচারের রাজনীতি কেউ গ্রহণ করছে না বলেই তারা সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে। বিশ্ব সংকটের প্রভাবের পরও শেখ হাসিনার বিচক্ষণ নেতৃত্বের কারণে অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশের মানুষ এখনো ভালো আছে।
ওবায়দুল কাদের রাজনীতি সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী
মন্তব্য করুন
ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি সভাপতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন