নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৮
নির্বাচন পরবর্তী রাজনীতি নিয়ে একটি সমঝোতার উদ্যোগ দৃশ্যমান। সমঝোতার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশস্থ ভারতীয় দূতাবাস। সমঝোতার মূল উদ্দেশ্য হলো একটি রাজনৈতিক দল বিজয়ী হলে, তাঁরা যেন অন্যদলের উপর প্রতিহিংসামূলক ব্যবস্থা না নেয়। রাজনৈতিক সমঝোতা এবং সৌহার্দ্যের এক পরিবেশ যেন সৃষ্টি হয়। জানা গেছে, ভারতীয় দূতাবাসের পক্ষ থেকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।
সূত্রমতে, বিএনপিকে অনুরোধ করা হয়েছে তাঁরা যেন নির্বাচন থেকে সরে না যায়। নির্বাচনে থাকলে পরাজিত হলেও বিএনপি অনেক কিছু পাবে বলে আশ্বস্ত করা হচ্ছে। বিএনপি যদি নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল হিসেবেও আবির্ভূত হয় তবুও তাঁরা যা পাবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে। এগুলো হলো-
১. নির্বাচনের পরপরই বেগম খালেদা জিয়ার দ্রুত জামিনের ব্যবস্থা করা হবে। নতুন মামলাগুলো ধীরগতিতে চলবে বা বন্ধ রাখা হবে।
২. বিএনপির নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলাগুলোর ব্যাপারে সরকার পুনঃমূল্যায়ন করবে। বেশকিছু মামলা সরকারের পক্ষ থেকে প্রত্যাহার করা হবে।
৩. নাশকতা ও সন্ত্রাসের অভিযোগে গ্রেপ্তার বিএনপি নেতাদের দ্রুত মুক্তির ব্যবস্থা করা হবে।
৪. বিএনপির রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের উপর সব বিধি নিষেধ তুলে নেওয়া হবে। গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হিসেবে সব অধিকার ভোগ করবে বিএনপি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এছাড়াও আরো কিছু বিষয় নিয়ে সমঝোতার চেষ্টা চলছে। অন্যদিকে বিএনপি নির্বাচনে জয়ী হলেও কি কি করা উচিত তা নিয়েও আলোচনা চলছে। বিএনপি এবং ঐক্যফ্রন্ট যদি নির্বাচনে জয়ী হয় সেক্ষেত্রে তাঁদের যা করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে তার মধ্যে রয়েছে:
১. প্রতিপক্ষের উপর সহিংসতা বা কোন রকমের প্রতিহিংসা করা যাবে না।
২. যুদ্ধাপরাধী, স্বাধীনতা বিরোধী দল বা ব্যক্তির কাউকে মন্ত্রীসভায় অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না।
৩. জিয়া পরিবারের বিতর্কিত ব্যক্তিদের সরকারে আনা যাবে না।
৪. আইনী প্রক্রিয়ার বাইরে বেগম জিয়া বা তারেক জিয়ার মামলা নিষ্পত্তি করা যাবে না।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ভারত বাংলাদেশে কোনো ‘পাতানো’ বা ‘নির্ধারিত’ নির্বাচন চায় না। তবে নির্বাচনের পর যেন রাজনৈতিক পরিস্থিতি অসহিষ্ণু না হয়ে ওঠে সেজন্য এখন থেকেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলছে ভারত। তারা চায় বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের যে সম্পর্কের সূচনা হয়েছে সেটা অব্যাহত থাকুক। আর এটা অব্যাহত রাখার জন্য প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যে সমঝোতা থাকা জরুরি। নির্বাচনে যারাই বিজয়ী হোক, গণতন্ত্র আইনের শাসন এবং মানবাধিকার যেন অক্ষুণ্ন থাকে সেটা নিশ্চিত করাই জরুরি। ভারতীয় দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘নির্বাচন পরবর্তী অস্থিরতা গণতন্ত্রের জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি গ্রহণ দরকার।
বাংলা ইনসাইডার/এমআর
মন্তব্য করুন
ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি সভাপতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বেগম খালেদা জিয়া শামীম ইস্কান্দার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার জন্য নতুন করে তৎপরতা শুরু করেছে তার পরিবারের সদস্যরা। বিশেষ করে বেগম জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার ইতোমধ্যে বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার জন্য সরকারের বিভিন্ন মহলের সঙ্গে নতুন করে যোগাযোগ শুরু করেছেন। বেগম জিয়া আর ভবিষ্যতে রাজনীতি করবেন না, রাজনীতি থেকে অবসর নেবেন এ রকম একটি বক্তব্য সামনে নিয়ে আসছেন শামীম ইস্কান্দার।
আওয়ামী লীগের তৃণমূল ক্রমশ ভেঙ্গে পড়ছে। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের তৃণমূল সংগঠিত করা এবং বিভেদ-বিভক্তির দূর করার জন্য যে ডাক দেওয়া হয়েছিল তারপর একটু পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছিল বলে বটে। কিন্তু এখন আবার উপজেলা নির্বাচনের প্রাক্কালে সারাদেশে তৃণমূল বিভক্ত হয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগের তৃণমূলকে সামাল দেওয়াই এখন কঠিন হয়ে পড়ছে। একদিকে নির্বাচন কেন্দ্রীক বিরোধ অন্যদিকে দলের চেইন অব কমান্ড ভেঙ্গে যাওয়া আর কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তদারকির অভাবে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ এখন সবচেয়ে সঙ্কটের মুখে পড়েছেন বলেই মনে করছেন আওয়ামী লীগের নেতারাই।