নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৮
বিএনপি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এখনও নির্বাচনী প্রচারণায় নামেনি। কোথাও কোথাও কিছু কিছু প্রচারণা চোখে পড়লেও অধিকাংশ নির্বাচনী এলাকায় বিএনপির প্রার্থীরা হাত পা গুটিয়ে বসে আছে। এর কারণ কী জানতে চাওয়া হলে, বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘মামলা, হামলায় কর্মীরা এলাকা ছাড়া। যারাও বা এলাকায় আছে তারাও মাঠে নামতে পারছে না আওয়ামী লীগের বাধায়।’ শুধু নজরুল ইসলাম খান নয়, অধিকাংশ বিএনপি নেতাই একই রকম মন্তব্য করেন।
কিন্তু বিএনপির বিভিন্ন নেতার সঙ্গে ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় বোঝা যায়, প্রচারণা নিয়ে তাদের অন্য কৌশল রয়েছে। বিএনপির একাধিক নেতা বলেছেন, ‘সেনাবাহিনী নামতে দিন, তারপর প্রচারাভিযান দেখবেন।’ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বলেছেন, ‘২৪ ডিসেম্বর থেকে সেনাবাহিনী স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে নামবে। সেনাবাহিনী মাঠে নামলে দুষ্টরা পালাবে। নির্বাচনী প্রচারণায় তখন বাধা প্রদানের ঘটনা কমবে।’
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদের সঙ্গে একমত পোষণ করেন জেএসডির নেতা আ.স.ম. আবদুর রব। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জনগণের বিশ্বাস এবং আস্থার প্রতীক। দেখা গেছে যখনই তাদের যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সে দায়িত্ব সেনাবাহিনী নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করেছে। বিগত সব নির্বাচনে সেনাবাহিনী মানুষের ভোট প্রদানের সাহস হিসেবে কাজ করেছে।’
বিএনপির নেতারা মনে করছেন, সেনাবাহিনী মাঠে নামলে নির্বাচনে কতগুলো গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা পাবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। বিভিন্ন নেতাদের সঙ্গে কথা বলে তারা যে সুবিধাগুলোর কথা বলেছেন, সেগুলো মোটা দাগে এরকম-
১. সেনাবাহিনী স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে নামলে নির্বাচনে প্রচারণায় বাধা দিতে আওয়ামী লীগের কর্মী ভয় পাবে। কারণ, সেনাবাহিনীর সামনে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করতে যে কেউ ভয় পায়।
২. সেনাবাহিনীর উপস্থিতি মাঠে আইন প্রয়োগকারী বাহিনীও কিছুটা নিরপেক্ষ আচরণ করবে। অন্তত সেনাবাহিনীকে দেখানোর জন্য হলেও।
৩. সেনা উপস্থিতি নির্বাচনে জড়িত কর্মকর্তাদের মধ্যে সাহস সঞ্চার হবে। তারা নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে উৎসাহী হবে। বিএনপি নেতারা মনে করছেন, এটা তাদের পক্ষে যাবে।
৪. সেনা উপস্থিতিতে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে সাহস সঞ্চার হবে। তাদের মধ্যে এরকম বিশ্বাস তৈরি হবে যে তারা নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারবে।
৫. সেনাবাহিনীর উপস্থিতি চিহ্নিত সন্ত্রাসী, দুর্বৃত্তদের ঘরে ঢুকিয়ে দেবে। এতে বিএনপি তার কাঙ্ক্ষিত লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড পাবে বলে মনে করছে।
বিএনপির নেতা নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘আমরা নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের কথা বার বার বলেছি। কারণ সেনাবাহিনী হলো রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বের প্রতীক। নিরপেক্ষতার প্রতীক। তাই আমরা মনে করি, সেনাবাহিনী নির্বাচনের মাঠে মোতায়েন করা হলে আমাদের যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি তার আংশিক পূরণ হবে।’
অবশ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন,‘আওয়ামী লীগ চায় অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন। প্রধানমন্ত্রী সবসময়ই সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য যা যা করা দরকার করেছেন। নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্তকে আমরা তাই সবসময়ই স্বাগত জানিয়েছি।’
বাংলা ইনসাইডার/এমআর
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।
আওয়ামী লীগ দলগতভাবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট এবং কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলায় মন্ত্রী, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাই ব্রাদার বা স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না। যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।