নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৮
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনী ইশতেহার চূড়ান্ত হয়েছে। আগামীকাল সোমবার সকাল ১১টায় স্থানীয় একটি হোটেলে এই ইশতেহার আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হবে। বিএনপি এবং জামাতের কিছু বিষয়ে আপত্তি সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত নির্বাচনী ইশতেহার আজ সন্ধ্যায় চূড়ান্ত করা হয়েছে। নির্বাচনী ইশতেহারে গণতন্ত্র পুন:প্রতিষ্ঠা, সংবিধানকে যুগোপযোগী করে সংশোধন এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঢেলে সাজানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। আগামীকাল জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক যে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষনা করবেন তাঁর প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো এরকম-
১. নির্বাচনে জয়ী হলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুন:প্রবর্তন করবে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ আলোচনার ভিত্তিতে সংবিধানে স্থায়ী ভাবে নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হবে।
২.জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ক্ষমতায় গেলে বর্তমান সংবিধানের অসামঞ্জস্যতা এবং অসঙ্গতিগুলো দূর করে ঐক্যমতের ভিত্তিতে সংবিধান পুন:লিখনের কাজ করবে। নতুন এবং আগামীর বাংলাদেশের উপযোগী একটি আধুনিক সংবিধান জাতিকে উপহার দেবে।
৩. ঐক্যফ্রন্ট তার নির্বাচনী ইশতেহারে একজন ব্যক্তি টানা দুবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী পদে থাকতে পারবেন না বলে প্রস্তাব করা হয়েছে। একই সঙ্গে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছে।
৪. এককক্ষ বিশিষ্ট সংসদের বদলে দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ গঠন করবে ঐক্যফ্রন্ট। উচ্চকক্ষে সমাজের গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের নিয়ে গঠিত হবে।
৫. জাতীয় সংসদের নারী আসনের সংরক্ষন ব্যবস্থা বাতিল করা হবে। সরাসরি ভোটের মাধ্যমে সংসদে নারী প্রতিনিধি নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হবে।
৬. ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ সকল ‘কালো আইন’ বাতিল করে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং অবাধ তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত করা হবে।
৭. চাকরীর বয়স সীমা ৩০ বছর বাতিল করা হবে। সরকারি চাকরীতে আবেদনের কোন বয়স সীমা থাকবে না।
৮. দুর্নীতি দমন কমিশনকে স্বাধীন, স্বতন্ত্র্য এবং সরকারের প্রভাবমুক্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা হবে। সরকারি চাকুরীজীবীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে তাদের গ্রেপ্তার করা যাবে।
৯. নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন এবং স্বাতন্ত্র্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা হবে।
১০. সরকারি চাকুরীজীবীদের দলবাজি এবং রাজনৈতিক দলের প্রতি আনুগত্য বন্ধ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে কাজ করবে।
১১. বিগত দশ বছরে ব্যাংকিং খাতে অনিয়ম এবং অর্থ আত্নসাতের ঘটনা তদন্তে কমিশন গঠিত হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনার তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
১২. বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, খুন এবং বিনা বিচারে গ্রেপ্তারসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় যথাযথ এবং কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
১৩. বিরোধী রাজনীতি দমন করা হবে না। সকলের সভা, সমাবেশ এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হবে।
১৪. রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পের পরিবেশ গত দিক পর্যালোচনা করা হবে। পরিবেশের ক্ষতি করলে রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প বন্ধ করা হবে।
১৫. দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, ঘুষ বাণিজ্য, টেন্ডার বাণিজ্য বন্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
১৬. অবিলম্বে ডাকসুসহ সকল ছাত্র সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা ও ব্যাবস্থা নেয়া হবে।
১৭. সকলের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রক্ষা করা হবে। বিশেষ করে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
১৮. রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক উদ্যোগ নেয়া হবে।
এছাড়াও আরো কিছু আকর্ষনীয় প্রস্তাব থাকছে। ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনী ইশতেহার বলে জানা গেছে।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।
আওয়ামী লীগ দলগতভাবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট এবং কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলায় মন্ত্রী, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাই ব্রাদার বা স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না। যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।