নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ২২ ডিসেম্বর, ২০১৮
নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন টানটান উত্তেজনা। বিএনপি কি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন থাকবে? নির্বাচনের পর দেশের পরিস্থিতি কী হবে? ইত্যাদি নানা শঙ্কার প্রশ্নের ডালপালা মেলছে সারাদেশে। কিন্তু কিছু রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং পর্যবেক্ষক বলছেন, শঙ্কার কিছু নেই। যা হচ্ছে সবই সাজানো চিত্রনাট্য। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে সমঝোতার ভিত্তিতেই সবকিছু ঘটছে। শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে সব দলই থাকবে। নির্বাচনে জয়ী হবে আওয়ামী লীগই। বিএনপি বিরোধী দলে থেকে সংসদ উত্তপ্ত করবে। ২০২৩ সালের নির্বাচনের জন্য বিএনপি দল গোছাবে। এর মধ্যে দৃশ্যমান হবে সমঝোতার অবয়ব।
এসব আশাবাদী রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের বক্তব্যের পেছনে যুক্তিও কম নেই। এরা বলছেন, ৬ মাস আগেও কি কেউ ভেবেছিল, আওয়ামী লীগ আর বিএনপির মধ্যে সংলাপ হবে? ড. কামাল হোসেন চিঠি দিলেন আর প্রধানমন্ত্রী সঙ্গে সঙ্গে সংলাপের দিনক্ষণ চূড়ান্ত করলেন-এমন সহজ সরল বাংলাদেশের রাজনীতি নয়। এই রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নেপথ্যে সরকার এবং বিরোধী পক্ষের মধ্যে একটি সমঝোতা আগে হয়েছে। সেই সমঝোতার অংশ হিসেবেই জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হয়েছে। কারণ যেহেতু বিএনপি জামাতের পৃষ্ঠপোষক, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার সঙ্গে সরাসরি জড়িত, তাই আওয়ামী লীগ সরাসরি বিএনপির সঙ্গে সংলাপ চায়নি। ড. কামাল হোসেন তাই যখন প্রধানমন্ত্রীকে সংলাপের জন্য চিঠি দেন। তখন তা মেনে নেওয়া প্রধানমন্ত্রীর জন্য সহজ হয়। আবার অন্যদিকে নির্বাচনে যেতে বিএনপির জন্যও একটি মুখরক্ষার সংলাপ প্রয়োজন ছিল।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির এই সমঝোতার মূল উদ্যোক্তারা জানেন যে, বিএনপিতে নির্বাচনের বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী মত আছে। তাই ধরপাকড় যা হচ্ছে তা সবই সমঝোতার ভিত্তিতে। এই ধরপাকড়ের মাধ্যমে বিএনপিতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে শক্তিশালী এবং নিরঙ্কুশ করা হচ্ছে। সমঝোতার অংশ হিসেবেই বিএনপি নির্বাচন নিয়ে নানা রকম চেচামেচি করছে। এর ফলে বিএনপিতে ‘জিয়াভক্ত’রা ফখরুলকে সন্দেহের চোখে দেখছে না। নির্বাচন শেষ হলেও বিএনপি নির্বাচনে কারচুপিসহ নানা অভিযোগ তুলবে। বাংলাদেশসহ তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে নির্বাচনে কারচুপি কোন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নয়। অভিযোগ তুললেও বিএনপি সংসদে যাবে। এখানেই সমঝোতার দ্বিতীয় পর্যায় শুরু হবে। বেগম খালেদা জিয়া জামিনে মুক্ত হবেন। বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের উপর মামলাগুলো আস্তে আস্তে প্রত্যাহার হতে থাকবে। আটকদের মুক্তির ব্যাপারেও সরকার নমনীয় হবে। একাদশ জাতীয় সংসদ হবে প্রাণবন্ত, উত্তপ্ত। এসময় বিএনপি ধীরে ধীরে সংগঠন গোছাবে।
সমঝোতার অংশ হিসেবে জাতির পিতা, মুক্তিযুদ্ধ ইত্যাদি মৌলিক বিষয় নিয়ে দু’পক্ষের ঐক্যমত হবে। জিয়া পরিবারের হাত থেকে মুক্তি মিলবে বিএনপির। ক্রমশ: জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট হবে বিএনপির চালক। নির্বাচনে জামাতের ভরাডুবির পর বিএনপিও জামাত বিমুখ হবে। নতুন সরতার , নতুন রাজনীতি, নতুন মেরুকরণ নিয়ে দেশ এগুবে ২০২৩ সালে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছে, এরকম সমঝোতার মূল পরিকল্পনাকারী হলো প্রতিবেশী এক রাষ্ট্র। কিন্তু বাংলাদেশ কি সবসময় চিত্রনাট্য অনুযায়ী চলে? এ প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে ৩০ ডিসেম্বর।
বাংলা ইনাসইডার/এমআর
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।