নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০৫ পিএম, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৮
অবশেষে নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়ন করা হয়েছে। নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনকে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি দুপক্ষই স্বাগত জানিয়েছে। লক্ষনীয় ব্যাপার হলো সেনাবাহিনীকে মোতায়েনে বিএনপি রীতিমতো উল্লাস প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশের নির্বাচনের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, ১৯৯১ সালে তৎকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রধান বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদের আমল থেকেই সেনাবাহিনী মোতায়েনের চল শুরু হয়েছে। সেনা মোতায়েনের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করলেও কখনো কখনো বিভিন্ন এলাকায় তাদের কার্যক্রম করো পক্ষে , কারো বিপক্ষে গেছে। ১৯৯১ সালের নির্বাচনকালীন সময়ে সেনাবাহিনীর ভূমিকা গেছে আওয়ামী লীগের বিপক্ষে। বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল সেনারা। আবার ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে সেনাবাহিনী বিএনপির বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। বিভিন্ন নেতাকর্মী ও দলের কার্যক্রমের বিপক্ষে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিয়েছিল। ২০০১ সালে আবার সেনাবাহিনীর অবস্থান গিয়েছিল আওয়ামী লীগের বিপক্ষে। ২০০৮ সালে সেনাবাহিনী মোতায়েন আবার আওয়ামী লীগের পক্ষে ছিল। সেনাবাহিনীর ভূমিকা নির্ভর করে মাঠের ভূমিকার উপর।
দেখা যাচ্ছে যে, সাধারণত যারা ক্ষমতাসীন থাকে। তাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম এবং দুর্ণীতি যখন সেনাবাহিনীর কাছে রিপোর্ট হয়। তখন সেনাবাহিনী এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়। সাধারন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং সেনাবাহিনীর মৌলিক পার্থক্য হলো, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপক্ষে পক্ষপাতের অভিযোগ আছে। কিন্তু বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নিরপেক্ষভাবে সকল দায়িত্ব পালন করে বলে সাধারণ মানুষ মনে করে। সাধারন মানুষের কাছে সেনাবাহিনী এখন একটা নিরপেক্ষতার প্রতীক হিসেবে প্রতীয়মান হয়। রাজনীতিতে এখন একটি মহামূল্যবান প্রশ্ন হচ্ছে, সেনাবাহিনী যে মোতায়েন হচ্ছে, এটা কার পক্ষে যাবে এবং কার বিপক্ষে যাবে? অতীতের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে দেখা যাচ্ছে যে, এবার সেনাবাহিনী নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের আদলে। যদিও এখন নির্বাচন হচ্ছে দলীয় সরকারের আমলে। সেনাবাহিনী সিভিল প্রশাসনের অধীনে কাজ করে। এবং সিভিল প্রশাসন সেনাবাহিনীকে যে পরামর্শ এবং নির্দেশনা দেয়। সেমতেই সেনাবাহিনী কাজ করে। এবারের নির্বাচনেও সেনাবাহিনীকে কোন ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেয়া হয়নি, বরং সেনাবাহিনী স্ট্রাইকিং ফোর্সের দায়িত্ব পালন করছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা না দেয়া হলেও সেনাবাহিনী যে কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারবেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে, সিভিল প্রশাসনের পরামর্শ ব্যাতিরেকে সেনাবাহিনী এখানে কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারে না। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্বাবদায়ক সরকার যদি হয়।তাহলে সিভিল প্রশাসন সবসময় নিরপেক্ষ এবং তারা বিদায়ী সরকারের উপর চড়াও হয়। এ কারণেই সেনাবাহিনীকে সবসময় বিদায়ী সরকারের উপরে একটু অতিরিক্ত আগ্রাসী মনোভাব দেখা যায়। এবার সেটা হবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। কারণ সিভিল প্রশাসন কিভাবে নিদের্শনা দিবে, কিভাবে কাজ করবে এবং সিভিল প্রশাসন বিদায়ী ক্ষমতাসীনদের প্রতি আগ্রাসী মনোভাব গ্রহণ করবে। এমন ভাবার কোন অবকাশ নেই। তবে বিএনপি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা মনে করছেন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, পুলিশ প্রশাসন দলীয় লেজুড়ে পরিনত হয়েছে। সেক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর আগমনের ফলে বিএনপি নূন্যতম সাহস পাবে এবং মানুষ ভোট দিতে আগ্রহী হবে।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগও মনে করছে যে, বিএনপি- জামাত নির্বাচনের আগে যে নাশকতা ও নির্বাচন সুষ্ঠু না হওয়ার পায়তারা করছে। সেনাবাহিনী মোতায়েনের ফলে সেই ষড়যন্ত্র তারা করতে পারবে না।
সেনা মোতায়েনে দুই পক্ষই নির্বাচন কালীন সময়ে সেনা মোতায়েনকে পজিটিভ দেখছে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ মনে করছে যে, নির্বাচন বর্জনের যে নীল নকশা। সেই নীল নকশা বানচাল করতে সেনাবাহিনী মোতায়েন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সেক্ষেত্রে সেনাবাহিনী মোতায়েনের ফলে সাধারণ মানুষ ভোট দিতে যাবে এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ থাকবে বলে আওয়ামী লীগ মনে করছে।
মন্তব্য করুন
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোটে আগামী ৮ মে। গতকাল সোমবার (২২ এপ্রিল) ছিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। এদিন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা সরে দাঁড়ানোয় তিন উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ কয়েকজন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।
জানা গেছে, নোয়াখালীর হাতিয়া ও ফেনীর পরশুরাম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন। এ ছাড়া বান্দরবানে উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপে রোয়াংছড়ি উপজেলায় আওয়ামী লীগের সমর্থিত প্রার্থী চহ্লামং মারমা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হচ্ছেন। সোমবার ( ২২ এপ্রিল ) মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা সরে দাঁড়ানোয় তিন উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ বেশ কয়েকজন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।
হাতিয়া উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে তিনজন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। তাঁরা হলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলীর ছেলে আশিক আলী, স্ত্রী আয়েশা ফেরদাউস ও জাতীয় পার্টির নেতা মুশফিকুর রহমান। গতকাল আশিক আলী ছাড়া বাকি দুজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন। হাতিয়া উপজেলা পরিষদের বাকি দুটি পদে একজন করে প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন।
জানতে চাইলে মুশফিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর রাজনীতির হাতেখড়ি সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলীর হাতে। তিনি ওই পরিবারের একজন সদস্যের মতো। মাঝখানে কিছু ভুল–বোঝাবুঝির কারণে দূরত্ব থাকলেও তা ঘুচে গেছে। আশিক আলীর সমর্থনে তিনি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন।
স্থানীয় সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী বলেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা জোড় করাতে তাঁর ছেলে প্রার্থী হয়েছেন। দলের অন্য কেউ আগ্রহ দেখাননি। ছেলের প্রতিদ্বন্দ্বীরা নিজ থেকেই প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন।
ফেনীর পরশুরাম উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রার্থীর মধ্যে দুজন গতকাল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন। এতে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন কেবল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ফিরোজ আহমেদ মজুমদার। প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন উপজেলা পরিষদের তিনবারের চেয়ারম্যান ও পরশুরাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল উদ্দিন মজুমদার ও উপজেলার বক্সমাহমুদ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান আবুল হাসেম চৌধুরী।
ভাইস চেয়ারম্যান পদের চারজনের মধ্যে তিনজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন। বর্তমানে একক প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন পরশুরাম উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক নুর মোহাম্মদ শফিকুল হোসেন। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন ইকরামুল করিম মজুমদার, নজরুল ইসলাম ও আবদুল রসুল মজুমদার।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেত্রী শামসুন নাহার পাপিয়া। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন নিলুফা ইয়াসমিন।
এদিকে বান্দরবানে উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপে রোয়াংছড়ি উপজেলায় আওয়ামী লীগের সমর্থিত প্রার্থী চহ্লামং মারমা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। গতকাল চারজন প্রার্থীর মধ্যে তিনজন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করায় চহ্লামং মারমা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন বলে রিটার্নিং এস এম কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন জানিয়েছেন।
তবে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা চেয়ারম্যান প্রার্থীরা বলেছেন, আওয়ামী লীগ নেতাদের অনুরোধ ও প্রচ্ছন্ন চাপে তাঁরা প্রার্থিতা প্রত্যাহারে সম্মত হয়েছেন। রোয়াংছড়ি উপজেলা থেকে আওয়ামী লীগের তিনজন ও জনসংহতি সমিতির সাবেক এক নেতা চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। চারজনের মনোনয়নই রিটার্নিং কর্মকর্তা বৈধ ঘোষণা করেছিলেন। প্রার্থীরা নিজেদের মতো করে প্রস্তুতিও নিয়েছেন। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের পর প্রার্থীরা জানিয়েছেন, গতকাল প্রত্যাহারের শেষ দিনে হঠাৎ করে আওয়ামী লীগের নেতারা তৎপর হয়ে ওঠেন। প্রার্থিতা তুলে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করে এবং প্রচ্ছন্নভাবে চাপ দিতে থাকেন।
মন্তব্য করুন
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জুনাইদ আহমেদ পলক নাটোর তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জুনাইদ আহমেদ পলক টানা তিনবারের প্রতিমন্ত্রী। কিন্তু রাজনীতিতে তার পদ পদবী তেমন নেই। রাজনীতিতে এখনও তিনি তরুণ এবং পিছনের সারির নেতা হিসেবে পরিচিত। স্থানীয় পর্যায়ের নেতৃত্ব এবং প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে তিনি বিভিন্ন সময়ে সুনাম কুড়িয়েছেন। কখনও বিতর্কিত হয়েছেন। তবে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে তার পরীক্ষা হলো এবার এবং সেই পরীক্ষায় তিনি শুধু কৃতকার্যই হননি, এ প্লাস পেয়েছেন বলেও অনেকে মনে করছেন।
দীর্ঘ প্রায় ছয় মাস পর রাজপথের কর্মসূচি ঘোষণা তা আবার প্রত্যাহার করতে হলো ১৭ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপিকে। এবার প্রকৃতিও যেন বিএনপি সঙ্গে বৈরি আচরণ করলো। আগামী শুক্রবার বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ দলের কারাবন্দী নেতা কর্মীদের মুক্তির দাবিতে সমাবেশের ঘোষণা করেছিল দলটি। আর এই সমাবেশের ঘোষণা দেওয়ার মাধ্যমে আবার রাজপথে আন্দোলনের কর্মসূচি পুনরায় শুরু করতে যাচ্ছিল ক্ষমতার বাইরে থাকা এই রাজনৈতিক দলটি।