ইনসাইড পলিটিক্স

তারকা প্রার্থীর অবস্থান কী?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৮


Thumbnail

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন কিনেছিলেন বেশ কয়েকজন তারকা। তবে এর মধ্যে মনোনয়ন পেয়েছেন হাতে গোনা কয়েকজন। তাদের খবর জানানো হয়েছে:

আকবর হোসেন পাঠান ফারুক

দল: আওয়ামী লীগ প্রতীক: নৌকা

আসন নং: ১৯০

আসন: ঢাকা-১৭ (ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ড- ১৫,১৮,১৯ ও ২০ এবং ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট এলাকা)

মোট ভোটার: ৩,১৩,৯৯৮

মোট প্রার্থী: ১০

প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বি: আন্দালিভ রহমান(জাতীয় পার্টি-বিজেপি) প্রতীক: ধানের শীষ, এইচ এম এরশাদ (জাতীয় পার্টি) প্রতীক: লাঙল

কৈশোরে দেখেছেন, মিশেছেন বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে। সেই কিশোরবেলা থেকেই বঙ্গবন্ধু তার নায়ক, আদর্শ, লিডার! তার উৎসাহেই রাজনীতিতে আসা। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধু খুন হবার পর থেকে আর কোনোদিন ১৫ আগস্ট নিজের জন্মদিন পালন করেন না। নায়ক ফারুক স্কুলজীবন থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। ১৯৬৬ সালে ছয় দফা আন্দোলনে যোগ দেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্নেহভাজন ছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাকে চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য অনুপ্রাণিত করেছিলেন।

গাজীপুর-৫ আসন থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবেন বলে মনোনয়ন কিনেছিলেন। তবে সেখানে নারী ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি থাকায় তাকে ঢাকায় মনোনয়ন দেওয়া হয়। ঢাকা-১৭ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেয়া হয়। এর মধ্যে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদেরকেও মনোনয়ন দেয়া হবে বলে কথা উঠে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ফারুকই ওই এলাকার নৌকার মাঝি হন।

ফারুক বলেন,‘ ত্রিশ বছর ধরেই স্বপ্ন দেখেছি আওয়ামী লীগের হয়ে নির্বাচন করব। কিন্তু নানা কারণে হয়ে উঠেনি। এবার মনোনয়ন পেয়েছি। আর এমন এক আসনে বঙ্গবন্ধু কন্যা নেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন যা আমার ত্রিশ বছরের আক্ষেপ মুছে দিলো এক নিমিষেই। ঢাকা-১৭ আসনটি আমার জন্য স্বপ্নের, বিশেষ উপহারের। আমি আবেগী মানুষ। নেত্রীর এই অসামান্য উপহারে কৃতজ্ঞতায় আমার চোখে বারবার পানি এসেছে। তিনি আমাকে দেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি আসনে প্রার্থী করেছেন। ভোটে নির্বাচিত হয়ে আমি এই উপহার ও বিশেষ আস্থার প্রতিদান দিতে চাই।’

মানুষের মাঝে গিয়ে কী দেখছেন?‘সবাই শুধু বলেছেন, আমরা এবার নৌকা চাই। উৎসব করে নৌকার ইলেকশন করতে চাই। মানুষ আমাকে ভালবাসে জানতাম, কিন্তু সর্বস্তরের মানুষ এত কাছের ভাবে তা বুঝিনি। আমি তাদের সঙ্গে কথা বলে আবেগী হয়ে যাই।’

চিত্রনায়ক, পরিচালক, প্রযোজক- একাধিক পরিচয়ে তিনি পরিচিত। সব ছাপিয়ে ভক্তদের কাছে তার বড় পরিচয় তিনি ‘মিয়া ভাই’।

তার হাত ধরে ১৮ বছর পর গুলশান-বনানীতে নৌকা মার্কা ফিরলো। এই আসন থেকে অতীতে নির্বাচন করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ। ২০১৪ সালের বিএনপিবিহীন নির্বাচনে বিএনএফের আবুল কালাম আজাদ আসনটি থেকে নির্বাচিত হন, সেবার আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থী ছিল না এই আসনে।

আসাদুজ্জামান নূর

দল: আওয়ামী লীগ প্রতীক: নৌকা

আসন নং: ১৩

মোট ভোটার: ৩,১১,৬৯৯

নীলফামারী-২: নীলফামারী সদর উপজেলা

প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বি : মনিরুজ্জামান মন্টু (বিএনপি প্রতীক) প্রতীক: ধানের শীষ

সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সফল ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূর রাজনীতির মঞ্চেও সফল। নীলফামারী-২ (সদর উপজেলা) আসন থেকে তিনি পরপর তিনবার সংসদ সদস্য হয়েছেন আওয়ামী লীগের টিকিটে। ১৯৬২ সালে স্বৈরাচারী আইয়ূব খানের বিরুদ্ধে সকল আন্দোলনে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন আসাদুজ্জামন নূর। পরবর্তীতে তিনি ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংস্কৃতিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। আসাদুজ্জামান নূর মুক্তিযুদ্ধে ৬ নং সেক্টরে যুদ্ধ করেন। ১৯৯০ সালে স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ, স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলন এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে সক্রিয় সংস্কৃতিকর্মী আসাদুজ্জামান নূর ১৯৯৭ সালের দিকে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যোগ দেন। সক্রিয় হন নীলফামারীর রাজনীতিতে। ২০০১ সালে প্রথম তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বিরোধী দলের সংসদ সদস্য হয়েও ব্যাপক জনসম্পৃক্ততার কারণে তিনি অপ্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনেও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পান সংস্কৃতিমন্ত্রীর।

তাঁর প্রচেষ্টায় ২০০০ সালে নীলফামারীতে প্রতিষ্ঠিত হয় উত্তরা ইপিজেড। সেই ইপিজেডে বর্তমানে কর্মসংস্থান হয়েছে ৩২ হাজার মানুষের। বিএনপি-জামায়াত জোট আমলে গুরুত্বহীন হয়ে পড়া ইপিজেডটির উন্নয়ন ধরে রেখেছিলেন ব্যক্তিগত উদ্যোগে। বর্তমান সরকারের ১০ বছরে এই শিল্প অঞ্চলটির ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে তাঁর হাত ধরে। আগামী দুই বছরের মধ্যে সেখানে ৫০ হাজার মানুষ কাজ করতে পারবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

আসনটি থেকে টানা তিন বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। এসময় বলেন, ‘২০০১ এবং ২০০৮ সালের নির্বাচনে আমি বলেছিলাম এলাকার উন্নয়নের জন্য নৌকা মার্কাায় ভোট দিন। নীলফামারীর উন্নয়ন হয়েছে, প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে আশাতীত। এবার উন্নত নীলফামারী গড়ার জন্য দলমত নির্বিশেষে নৌকা মার্কায় ভোট দিন।’

দশ বছরে এলাকার অনেক উন্নয়নের কথায় তিনি বলেন, ‘২০০১ সালে শেখ হাসিনার প্রতিষ্ঠিত উত্তরা ইপিজেডে ৩২ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। মেডিকেল কলেজ, কারিগড়ি ও যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, নাসিং ইনিস্টিটিউট, উন্নয়ন হয়েছে ডায়াবেটিকসহ বিভিন্ন হাসপাতালের, শিক্ষা, সংস্কৃতিসহ খেলাধুলার উন্নয়ন হয়েছে, নির্মিত হয়েছে আধুনিক স্টেডিয়াম। সড়ক ও রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হয়েছে। শিল্প এবং কৃষিক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়নে এলাকা থেকে দূর হয়েছে এক সময়ের মঙ্গা। এখন দরকার পরিকল্পিত এবং উন্নত নীলফামারী গড়া।’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব পেডিয়াট্রিক নিউরোডিজঅর্ডার অ্যান্ড অটিজমের প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক শাহীন আখতার সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের সহধর্মিণী। এলাকার মানুষের সেবায় তাঁর সঙ্গে এগিয়ে এসেছেন ডা. শাহীন। এই শিশু নিউরোলজিস্ট ও শিশু বিকাশ বিশেষজ্ঞ নীলফামারী সদর উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নে পর্যায়ক্রমে ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্পের আয়োজন করে আসছেন। বিনা মূল্যে চিকিৎসা পরামর্শ এবং রোগীদের ওষুধ দেওয়া হয় ওই ক্যাম্পে। সহধর্মিণী অধ্যাপক শাহীন আখতারের এই কার্যক্রম আরো জনপ্রিয় করে তুলেছে আসাদুজ্জামান নূরকে।

দলের নেতাকর্মীরা জানায়, আসাদুজ্জামান নূর থাকায় দলে চাঁদাবাজ নেই, সন্ত্রাস বলে নেই কিছু। তাঁর সরলতা এবং মানুষের সঙ্গে মেশার ক্ষমতা সম্মোহিত করছে সবাইকে।

প্রত্যক্ষ কোনো ব্যর্থতা নেই আসাদুজ্জামান নূরের রাজনীতিতে। সফলতার ভারে অনেক পরোক্ষ ব্যর্থতাও ম্লান হয়ে গেছে। নেতাকর্মীদের মতে, এমন ব্যর্থতার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো গত জেলা পরিষদের নির্বাচন। জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের কোন্দলে হেরেছে দলীয় প্রার্থী। এর আগেও এমন কোন্দল দেখা গেছে পৌরসভার নির্বাচনে। সে নির্বাচনে দলের প্রার্থী মেয়র নির্বাচিত হলেও পক্ষে বিপক্ষে নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রকাশ্যে বিভক্তি ছিল। পরবর্তী সময়ে এই বিভেদের অবসানও ঘটেছে তাঁরই হস্তক্ষেপে। নেতাকর্মীরা মনে করে—এসব বিপর্যয় এড়ানো যেত আসাদুজ্জামান নূরের তাৎক্ষণিক হস্তক্ষেপে।

মাসুদ পারভেজ

দল: জাতীয় পার্টি প্রতীক: লাঙল

আসন: বরিশাল-২ (উজিরপুর এবং বানারীপাড়া উপজেলা)

আসন নং: ১২০

মোট ভোটার: ৩,০২,৫৭১

মোট প্রার্থী: ৭

প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বি: সরদার সরফুদ্দিন আহমেদ (বিএনপি) প্রতীক: ধানের শীষ, শাহে আলম (আওয়ামী লীগ) প্রতীক: নৌকা

চলচ্চিত্রের ড্যাশিং হিরো খ্যাত মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা। ৭০ ও ৮০-এর দশকে ঢাকাই সিনেমার পর্দা কাঁপিয়েছেন দাপটের সঙ্গে। প্রযোজক হয়ে উপহার দিয়েছেন জনপ্রিয় ছবি। তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম ও মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্রের প্রযোজক। এবার রাজনীতির মাঠে জনপ্রিয় হিরো তার কারিশমা দেখাবেন। জাতীয় পার্টির টিকিটে সংসদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। তাকে বরিশাল-২ (উজিরপুর-বানারীপাড়া) আসনে নির্বাচন করার জন্য দলের পক্ষ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। সোহেল রানা বলেন, নিজেকে দেশের সেবায় সর্বদা ব্রত রাখার চেষ্টা করেছি। ছাত্র অবস্থা থেকেই রাজনীতি করে আসছি। মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছি। এবার সংসদ সদস্য হিসেবে দেশ ও জনগণের সেবা করার প্রত্যয় নিয়ে সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে যাচ্ছি। দেশের উন্নয়নে নিবেদিতপ্রাণ হয়ে কাজ করব, এটাই আমার অন্যতম অঙ্গীকার। আমি দেশবাসীর দোয়া ও সহযোগিতা চাই। যাতে প্রকৃত অর্থে দেশ ও জনগণের মঙ্গলে কাজ করতে পারি।’

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্যের ৪১৪৭ টাকার বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছিল। মনোনয়নপত্র বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে আপিল করেছিলেন সোহেল রানা। নির্বাচন কমিশনে (ইসি) করা আপিলে প্রার্থিতা ফিরে পেলেন এ নায়ক।

রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা

দল: বিএনপি প্রতীক: ধানের শীষ

প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বি: মোহাম্মদ নাসিম (আওয়ামী লীগ) প্রতীক: নৌকা

সিরাজগঞ্জ-১: কাজিপুর এবং সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার নিম্নলিখিত ইউনিয়ন সমূহঃ মেছড়া, রতনকান্দি, বাগবাটি, ছোনগাছা ও বহুলি

আসন নং: ৬২

মোট ভোটার: ৩,৪৫,৬৭৬

কনকচাঁপা সিরাজগঞ্জের কাজীপুর গ্রামের বাসিন্দা। ২০১৩ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলে (বিএনপি) যোগ দিয়েছেন সংগীতশিল্পী রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা। বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে দলে যোগ দেন তিনি। স্বামী সুরকার মইনুল ইসলামকে নিয়ে তিন নির্বাচনী প্রচারণায় মাঠে নেমেছেন।

ভোট প্রার্থনার সময় কনকচাঁপা অভিযোগ করেছেন, ‘প্রচারণায় সরাসরি বাধা না দেওয়া হলেও মুঠোফোনে হুমকির সম্মুখীন হতে হয়েছে। তারপরও আমার মতো করেই প্রচারণা চালাতে হবে। আমার ভরসা সাধারণ মানুষ। আমি মানুষের ভালোবাসা পাচ্ছি। আমার বিশ্বাস, ভোটাররা যদি কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার সুযোগ পান, তাহলে আমি ভালো ফলাফল করব। জয়ের ব্যাপারে আমি আশাবাদী।’

নির্বাচনে অংশ নিতে চান কেন? কনকচাঁপা বললেন, ‘ছোটবেলা থেকে মাকে সমাজসেবা করতে দেখেছি। মানুষের প্রতি ভালোবাসা, অসহায়ের পক্ষে কথা বলা-এগুলো ছিল মায়ের অভ্যাস। তাঁর আদর্শেই বড় হয়েছি। যখন পেশাদার শিল্পী হয়েছি, তখন থেকেই অসহায়ের পাশে আছি। সমাজের সব অসংগতির বিরুদ্ধে আমার কঠোর অবস্থান। একজন সফল শিল্পী হয়েও কখনো আমার বিত্তকে মধ্যবিত্ত থেকে উচ্চবিত্তে পরিবর্তন করিনি। আমার মানসিক শক্তি, শারীরিক শক্তি সবই বর্তমান। আমি একজন সাহসী মানুষ বটে। আর মানুষের পাশে দাঁড়াতে বড় প্ল্যাটফর্ম দরকার। আমি মনে করি, নির্বাচন সেই প্ল্যাটফর্ম।’

নির্বাচনে অংশগ্রহন নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি পঞ্চাশের ঘরের একজন মানুষ। এই বয়সেই গানের জগতের সব পুরস্কার, মানুষের ভালোবাসা ও আশীর্বাদ পেয়েছি। নাতি-নাতনি, মেয়েজামাই, ছেলেবউদের দিয়ে সাজানো বেহেশতের বাগানের মতো আমার সংসার। কিন্তু এই জীবন ছেড়ে নির্বাচনের যুদ্ধে নেমেছি মানুষকে ভালোবেসে। কারণ, তাঁদের অপার ভালোবাসার বিনিময়ে অনেক বেশি ভালোবাসা উপহার দিতে চাই।’

তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী হবেন আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা মোহাম্মদ নাসিম। তিনি বর্তমান সরকারে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন।

মমতাজ বেগম

দল: আওয়ামী লীগ প্রতীক: নৌকা

মানিকগঞ্জ-২: সিঙ্গাইর, হরিরামপুর এবং মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার হাটিপাড়া, ভাড়ারিয়া ও পুটাইল ইউনিয়ন সমূহ

মোট ভোটার: ৪,০৬,১৯৫

মোট প্রার্থী: ৬

প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বি: মাঈনুল ইসলাম খান (বিএনপি) প্রতীক: ধানের শীষ

মানিকগঞ্জ-২ আসন (সিংগাইর-হরিরামপুর সদরের আংশিক) আসনের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই প্রচার প্রচারণায় সরব ও মাঠে চষে বেড়াচ্ছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম এমপি। তিনি সরকারের উন্নয়নের বার্তা জনগণের মধ্যে পৌঁছে দেয়ার জন্য নির্বাচনী প্রতিটি এলাকার পাড়া-মহল্লায় উঠান বৈঠক, কেন্দ্র মিটিং, পথসভা, গণসংযোগ, সভাসমাবেশ করে তৃণমূল ভোটারদের নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে নৌকা প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করছেন। এই আসনের বর্তমান সাংসদও মমতাজ বেগম। ২০০৮ সালে প্রথমে সংরক্ষিত আসনে, দ্বিতীয়বার ২০১৪ সালের নির্বাচনে এমপি হন তিনি।

হিরো আলম

বগুড়া-৪: কাহালু এবং নন্দীগ্রাম উপজেলা

আসন নং: ৩৯

মোট ভোটার: ৩,১২,০৮১

মোট প্রার্থী: ৭

প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বি: মোশারফ হোসেন (বিএনপি) প্রতীক: ধানের শীষ রেজাউল করিম তানসেন (জাসদ) প্রতীক: নৌকা

নির্বাচনের মৌসুমে জাতীয় পার্টির মনোনয়নপত্র তুলেও ব্যাপক সাড়া ফেলেন হিরো আলম। যদিও দলটি তাকে মনোনয়ন দেয়নি। পরবর্তী সময়ে তিনি বগুড়া-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র তুললে তা বাতিল করা হয়। জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের প্রথম দিনেই হিরো আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়। আপিল করলে নির্বাচন কমিশন শুনানির পর তা বাতিল করে। মনোনয়নপত্রে ভোটারের স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগ তুলে আপিলেও তার মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়েছিল। পরে নির্বাচন কমিশনে আপিল করলে সেখানেও তার মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করে। হিরো আলম আদালতে গেলে হাইকোর্টের নির্দেশে তাকে মনোনয়নপত্র ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। এ নিয়ে তিনি সংবাদ মাধ্যমে আসেন। হাইকোর্টের নির্দেশ পাওয়ার পর প্রতীক সিংহ তার হাতে তুলে দেওয়া হয়।

বগুড়া সদরের এরুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা হিরো আলম শৈশবে চানাচুর বিক্রি করতেন। পরে তিনি সিডি বিক্রি এবং ডিশ সংযোগের ব্যবসা করেন। নিজেই মিউজিক ভিডিও তৈরি করে ডিশ লাইনে সম্প্রচার শুরু করেন। এভাবে হিরো আলমের তৈরি মিউজিক ভিডিও এবং ইউটিউব সিনেমা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আলোচনায় আসেন। পরে ‘মার ছক্কা’ নামে একটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। বলিউড পরিচালক প্রভাত কুমারের ‘বিজু দ্য হিরো’ সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব পান। হিরো আলম দুইবার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও অংশ নিয়েছিলেন। সেখানে খুব অল্প ভোটের ব্যবধানে হেরে যান। পরবর্তীতে জাতীয় পর্যায়ের নির্বাচনে আসেন।


বাংলা ইনসাইডার/ এমআরএইচ



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপিতে গণ বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত

প্রকাশ: ১০:৩০ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। 

অবশ্য এসব প্রার্থীর অনেকে এটি ‘দলীয় নির্বাচন নয়’ বলে দাবি করছেন, আবার কেউ কেউ ‘জনগণ তাদের চাচ্ছে’– এমন অজুহাত দেখাচ্ছেন। এমনকি দল থেকে বহিষ্কার হতে পারেন– সেই ভয় উপেক্ষা করেই নিজেদের এ অবস্থান জানান দিচ্ছেন তারা। আবার অনেকের দলে কোনো পদপদবিও নেই। অনেকে বহিষ্কৃত। এর পরও যারা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন, তাদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিএনপি হাইকমান্ড। শিগগির এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হবে বলেও জানা গেছে।

বিএনপির সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এ সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না বিএনপি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের মতো দলের এমন সিদ্ধান্ত স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও বাস্তবায়ন করছে দলটি। এ জন্য দফায় দফায় তৃণমূল নেতাকর্মী ছাড়াও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গেও দফায় দফায় বৈঠক করেন নেতারা। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে নেতারা এই নির্বাচনে না যাওয়ার পক্ষে মত তুলে ধরেন। সেখানে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী ইচ্ছুকদের প্রথমে কাউন্সেলিং, নির্বাচনে না যাওয়ার আহ্বানের পাশাপাশি দলের কঠোর অবস্থানের বিষয়টি তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নেন নেতারা। এর পরও যারা সিদ্ধান্ত অমান্য করবেন, তাদের বিষয়ে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি আগেই উচ্চারণ করেছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা। 

এদিকে গত সোমবার রাতে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয়। সেখানে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারীদের বহিষ্কারের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়। তবে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী নেতারা বলছেন, স্থানীয় জনগণের চাপে তারা নির্বাচনে অংশ নিতে বাধ্য হয়েছেন। তাছাড়া যেহেতু এবার দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হচ্ছে না তাই তারা স্বতন্ত্র ভাবে নির্বাচন করছেন। আর তাই বহিষ্কারের বিষয়টি তারা আমলে নিচ্ছে না। তবে দল তাদের ব্যাপারে নমনীয় সিদ্ধান্ত নেবেন এমনটাও প্রত্যাশা নেতাকর্মীদের।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দিনাজপুর জেলার একটি উপজেলার বিএনপির প্রার্থী বলেন, মনোনয়নপত্র দাখিল করার পরে দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে নির্বাচনে না যাওয়ার। সে ক্ষেত্রে নির্বাচন করব, দল যদি কোনো সিদ্ধান্ত নেয় নেবে।

বিএনপি   গণ বহিষ্কার   উপজেলা নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ওবায়দুল কাদেরের পদত্যাগ চাওয়ায় থানায় জিডি

প্রকাশ: ০৮:৪০ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের পদত্যাগ চাওয়ায় যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগের সভাপতি মোহাম্মদ হানিফ ওরফে খোকন এ জিডি করেন।

জিডিতে বলা হয়েছে, গত ২০ এপ্রিল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ঈদ যাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। এই সংবাদ সম্মেলনে সাংগঠনটির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেছেন, ‘সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ২০ বছর যাবৎ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু তিনি পরিবহন সেক্টরে কোনো কাজ করেন নাই।’ 

একপর্যায়ে মোজাম্মেল হক চৌধুরী আরও বলেন, ‘যেহেতু আমাদের দেশে পদত্যাগের সংস্কৃতি নেই। সেহেতু মন্ত্রী ইচ্ছা করলে ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে পদত্যাগ করতে পারেন।’

জিডিতে শ্রমিক লীগের ওই নেতা আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি যাত্রীদের কল্যাণ করবে এটাই তাদের কাজ। কিন্তু সুপরিকল্পিতভাবে মোজাম্মেল হক চৌধুরী সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। এতে মন্ত্রীর সম্মান ক্ষুণ্ন হয়েছে। কারণ বর্তমান সরকার টানা চতুর্থবারের মতো রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আছেন। এখন সরকারের ক্ষমতা থাকার বয়স ১৫ বছর ৩ মাস। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী সেখানে ২০ বছর মন্ত্রী থাকেন কীভাবে? মোজাম্মেল হক চৌধুরী সুপরিকল্পিতভাবে মন্ত্রী ও সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করেছেন। এই মিথ্যাচারের বক্তব্যগুলো দেশের স্যাটেলাইট টেলিভিশনসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছে। তার এই মিথ্যা ও বানোয়াট বক্তব্যে সরকারের সুনাম ক্ষুণ্ন ও মন্ত্রীর মানহানি হয়েছে। তাই বিষয়টি ভবিষ্যতের জন্য জিডি করে রাখা একান্ত প্রয়োজন।’

ওবায়দুল কাদের  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

‘আপনি কখনোই কোনো কথা শোনেন না, এটা ঠিক না’

প্রকাশ: ০৭:৪০ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের। 

গতকাল সন্ধ্যার পর ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে দেখা করতে তার কক্ষে যান শাজাহান খান। এ সময় তার উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আপনি তো কথা শুনলেন না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তও মানলেন না।’

এ সময় সেখানে উপস্থিত কেন্দ্রীয় নেতারা তিরস্কার করেন শাজাহান খানকে।

জানা গেছে, শাজাহান খান এক পর্যায়ে দলের সাধারণ সম্পাদকের উদ্দেশে বলেন, রাজনীতির ধারাবাহিকতায় ছেলে আসিবুর রাজনীতিতে এসেছে। এ জন্যই সে প্রার্থী হয়েছে। জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী ও এমপির স্বজনের নির্বাচন না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। প্রতিউত্তরে শাজাহান খান বলেন, অনেকেরই নিকটাত্মীয় রাজনীতিতে আছেন।

ওবায়দুল কাদের এ সময় শাজাহান খানকে বলেন, ‘আপনি কখনোই কোনো কথা শোনেন না। এটা ঠিক না।’ এর জবাবে শাজাহান খান বলেন, ‘আপনার সিদ্ধান্ত দেরিতে জানিয়েছেন। আগে জানালে ভালো হতো।’ তখন ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সিদ্ধান্তটি আমার নয়। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) কোন সিদ্ধান্ত কখন দেবেন, সেটা কি আমাদের জিজ্ঞাসা করে দেবেন?’

শাজাহান খানের উচ্চস্বরে কথা বলা নিয়ে উপস্থিত নেতাকর্মীরা বিস্ময় প্রকাশ করেন। এ নিয়ে বিরক্ত হন ওবায়দুল কাদেরও। তিনি শাজাহান খানের উদ্দেশে বলেন, ‘এখানে দলের অনেক নেতাকর্মী রয়েছেন। এর পরও আপনি সবার সামনে এসব অপ্রিয় কথা কেন বলছেন?

এ সময় নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দুই সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, কার্যনির্বাহী সংসদের দুই সদস্য আনিসুর রহমান ও সাহাবুদ্দিন ফরাজী, মশিউর রহমান হুমায়ুন, মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী লোটন, বলরাম পোদ্দার এবং শাহজাদা মহিউদ্দিন।

ওবায়দুল কাদের   শাজাহান খান  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ভিডিও ভাইরাল হওয়া সেই চামেলীকে অব্যাহতি

প্রকাশ: ০৭:৩১ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর শৃঙ্খলার পরিপন্থি কর্মকাণ্ডের অভিযোগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ২০ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের নারী কাউন্সিলর ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য সৈয়দা রোকসানা ইসলাম চামেলীকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজের স্বাক্ষর করা এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়েছে, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ একটি সুসংগঠিত ও সুশৃঙ্খল সংগঠন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফী ও সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির গঠনতন্ত্রের ৪৭(৯) ধারা মোতাবেক ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য সৈয়দা রোকসানা ইসলাম চামেলীকে সংগঠনের শৃঙ্খলার পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার কারণে পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন।
 
এর আগে ওই নারী কাউন্সিলরের একটি নগ্ন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। কয়েকদিন ধরে নগর আওয়ামী লীগ ও কেন্দ্রীয় নেতাদের হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিওটি ঘুরপাক খায়। যা নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

আওয়ামী লীগ   ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন   রাজনীতি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ভুল কৌশলের মাশুল গুনছে আওয়ামী লীগ?

প্রকাশ: ০৬:২৬ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আওয়ামী লীগের অতীতে নেয়া কিছু সিদ্ধান্ত বা ঘটনা এর জন্য দায়ী হতে পারে। উদাহরণ দিয়ে কেউ কেউ বলছেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে একাধিকবার দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছিল। কিন্তু পরে আবার তাকে দলে ফিরিয়ে আনা হয়। জাহাঙ্গীর আলমকে প্রথমবার বহিষ্কার করার পর যখন দলে ফিরিয়ে আনা হয় পরে দ্বিতীয়বার তিনি আবার একই ভুল করলেও তাকে সাধারণ ক্ষমা দিয়ে দলে ফেরত আনা হয়। বিষয়টি সে সময় আওয়ামী লীগের অনেক তৃণমূল নেতাকর্মীই ভালো ভাবে নেয়নি। 

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, মেয়র জাহাঙ্গীরের মতো একাধিক ঘটনা অতীতে আওয়ামী লীগে ঘটেছে। ফলে নেতাকর্মীদের মধ্যে এক ধরনের ধারণা তৈরি হয়েছে যে, প্রথমে দল তাদেরকে বহিষ্কার করলেও পরে তারা সাধারণ ক্ষমা পেয়ে আবার দলে ফেরত আসার সুযোগ পাবেন। আর সে কারণেই দলের নির্দেশনা থাকলেও সেটা অমান্য করে তারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি বলে মনে করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাছাড়া স্থানীয় রাজনীতিও নিয়ন্ত্রণ করে এমপিরা। সেখানে এমপিরাই যখন তাদের পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের মনোনয়ন দিচ্ছেন তাহলে তো কোন কথাই নাই। অতীতে আওয়ামী লীগ শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য কঠোর পদক্ষেপ নিলে দলের চেইন অব কমান্ড এভাবে ভেঙে পড়ত না। আওয়ামী লীগকে এখন ভুল কৌশলের মাশুল গুনছে হচ্ছে।

এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বাংলা ইনসাইডারকে বলেন, দলীয় নির্দেশনার পরও যেসব এমপি-মন্ত্রীর আত্মীয়স্বজনরা নিজেদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেননি, তাদের নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার সময় কিন্তু এখনো শেষ হয়ে যায়নি। আমরা বিশ্বাস করি, দলীয় নির্দেশনা মেনে তারা নিজেদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেবেন। তবে কেউ যদি শেষ পর্যন্ত দলীয় নির্দেশনা না মানেন তাহলে অবশ্যই দল তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। দলের নিয়মনীতি ও গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাদের (এমপি-মন্ত্রীদের আত্মীয়দের) বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এটাই আওয়ামী লীগের দলীয় সিদ্ধান্ত।

তিনি আরও বলেন, কেউ যদি জাহাঙ্গীর আলমের বিষয়টি থেকে অনুপ্রাণিত হন তাহলে তিনি ভুল করছেন। এরা অচিরেই রাজনীতিতে হারিয়ে যাবে। দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে বা গঠনতন্ত্র উপেক্ষা করে কেউই এখন পর্যন্ত রাজনীতির চরম শিখরে পৌঁছাতে পারেনি। বরং যিনি দলের প্রতি অবিচল থেকেছেন, দলের সিদ্ধান্তকে মান্য করেছেন, দলের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি তারা ধাপের ধাপে রাজনীতিতে উন্নতি করেছেন দেশের জন্য অবদান রাখতে পেরেছেন, জনগণের নেতাতে পরিণত হয়েছেন, রাজনীতিতে অমরত্ব লাভ করেছেন। 

আওয়ামী লীগ   উপজেলা নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন