নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৮
নোয়াখালী জেলায় নির্বাচনী আসন ৬টি। এই জেলায় মোট ভোটার ২১ লাখ ৪৮ হাজার ৬২১। এর মধ্যে নারী ভোটার ১০ লাখ ৫১ হাজার ৭০০। আর পুরুষ ভোটার ১০ লাখ ৯৬ হাজার ৯২১ জন। এই জেলার অধিকাংশ এলাকাতেই বিএনপির একক আধিপত্য রয়েছে। সার্বিক রাজনৈতিক অবস্থা পর্যালোচনা করে বাংলা ইনসাইডার প্রেডিক্ট করছে এই জেলার ৬টি আসনের সবগুলোই ধানের শীষের দখলে যাবে।
নোয়াখালী-১ (চাটখিল এবং সোনাইমুড়ী উপজেলার অংশবিশেষ)
নোয়াখালী-১ আসনটি ধানের শীষের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। ১৯৯১ সাল থেকে টানা চার মেয়াদে বিএনপি এখান থেকে জয় পেয়েছিল। ২০০৮ সালে বিএনপির ভরাডুবির নির্বাচনেও এই আসনটি ধানের শীষের হাতছাড়া হয়নি। এখানে এবার নৌকার প্রার্থী বর্তমান সাংসদ এইচ এম ইব্রাহীম। আর ধানের শীষ নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মাহবুব উদ্দিন খোকন। খোকন এই এলাকায় অত্যন্ত জনপ্রিয়। ২০০৮ সালে তিনি এইচ এম ইব্রাহীমকে পরাজিত করে এই আসনের সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবারও এই আসনে তিনিই ফেভারিট।
নোয়াখালী-২ (সেনবাগ এবং সোনাইমুড়ি উপজেলার অংশবিশেষ)
এই আসনে ধানের শীষের প্রার্থী জয়নুল আবদিন ফারুক। তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের মোরশেদ আলম। এই আসনটিও বিএনপি অধ্যুষিত এলাকা। ১৯৯১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত প্রতিটি নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থী এখান থেকে জয় পেয়েছেন। জয়নুল আবদিন ফারুকও এই এলাকার অত্যন্ত জনপ্রিয় নেতা। এর আগে চারবার নির্বাচনে অংশ নিয়ে প্রতিটিতেই তিনি সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন। এবারও এর ব্যতিক্রম ঘটবে না বলেই মনে করছে বাংলা ইনসাইডার।
নোয়াখালী-৩ (বেগমগঞ্জ উপজেলা)
এই আসনটিতেও বর্তমান এমপি আওয়ামী লীগের হলেও এই এলাকায় বিএনপির একক আধিপত্য রয়েছে। নোয়াখালীর ১ ও ২নং আসনের মতো এই এখানেও ১৯৯১ থেকে ২০০৮ এর নির্বাচনগুলোতে ধানের শীষের একাধিপত্য ছিল। এবার এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মামুনুর রশিদ। আর বিএনপির প্রার্থী বরকত উল্লাহ বুলু। মামুনুর রশিদ ২০১৪ সালের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার নির্বাচন ছাড়া আর কখনোই সাংসদ নির্বাচিত হতে পারেননি। অন্যদিকে বরকত উল্লাহ বুলু বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের একজন। এর আগে তিনটি নির্বাচনে অংশ নিয়ে প্রতিটিতেই জয় পেয়েছেন তিনি। ধানের শীষের জনপ্রিয় এই নেতাকে মামুনুর রশিদ হারাতে পারবেন না বলেই প্রেডিক্ট করছি আমরা।
নোয়াখালী-৪ (সুবর্নচর এবং নোয়াখালী সদর উপজেলা)
এই আসনের বর্তমান এমপি আওয়ামী লীগের একরামুল করিমের বিরুদ্ধে লড়ছেন ধানের শীষের মো. শাহজাহান। একরামুল করিম এখানকার গত দুই মেয়াদের সাংসদ হলেও এই এলাকায় বিএনপির প্রভাবই বেশি। মো. শাহজাহান এখানে ১৯৯১ থেকে ২০০১ পর্যন্ত টানা তিনটি নির্বাচনে জয় পান। তবে ২০০৮ সালে তাকে হারিয়ে দেন আওয়ামী লীগের একরামুল করিম। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই এলাকায় একরামুল করিমের পক্ষে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এদিক থেকে ধানের শীষ পিছিয়ে থাকলেও জয়ের সম্ভাবনায় তারা এগিয়ে।
নোয়াখালী-৫ (কোম্পানীগঞ্জ এবং কবিরহাট উপজেলা)
এই আসনের দুই প্রতিপক্ষ হলেন আওয়ামী লীগের ওবায়দুল কাদের এবং বিএনপির মওদুদ আহমেদ। এরা দুজনই নিজ নিজ দলের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের নেতা। জয় পেতে এরা দুজনই মরিয়া। এ নিয়ে পঞ্চমবারের মতো মুখোমুখি হচ্ছেন তারা। এরা আগের চারবারের লড়াইয়ে তারা দুইবার করে জয় পেয়েছেন। এবার এখানে মওদুদেরই জয়ের সম্ভাবনা বেশি বলে মনে করছি আমরা। কারণ গত ১০ বছরে তিনি বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হয়েছেন। এ কারণে এলাকাবাসীর সহানুভূতি পাচ্ছেন তিনি। এছাড়া বংশমর্যাদা ও পারিবারিক অবস্থানের কারণে এই এলাকায় তাঁর বাড়তি প্রভাব এবং জনপ্রিয়তা রয়েছে। এটা তাকে নির্বাচনী যুদ্ধে এগিয়ে রাখছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া উপজেলা)
এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আয়েশা ফেরদাউস। এবারের নির্বাচনে এই অঞ্চলের আসনগুলোর মধ্যে একমাত্র নারী প্রার্থী তিনি। তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির ফজলুল আজিম। ফজলুল আজিম এই এলাকায় অত্যন্ত প্রভাবশালী। এর আগে ১৯৯৬ ও ২০০৮ সালে দুইবার নির্বাচনে অংশ নিয়ে প্রতিবারই জয় পেয়েছেন তিনি। এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবারও এই এলাকায় তারই জয়ের পাল্লা ভারী।
বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি/এমআর
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।
আওয়ামী লীগ দলগতভাবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট এবং কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলায় মন্ত্রী, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাই ব্রাদার বা স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না। যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।