নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৮
নির্বাচনে জোয়ার তুলতে পারেনি বিএনপি। ভোট বিপ্লবের কথা বললেও ভোট বিপ্লবের মতো পরিস্থিতিও সৃষ্টি করতে পারেনি ঐক্যফ্রন্ট এবং বিএনপি নেতৃবৃন্দ। পুরো নির্বাচনি প্রক্রিয়ায় তাঁরা শুধু একের পর এক অভিযোগই করে গেছে। নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ- এসব অভিযোগ করেও বিএনপি সাধারণ মানুষকে উজ্জীবিত করতে পারেনি। সাধারণ মানুষ বিএনপির নালিশের সঙ্গে একাত্ম হতে পারেনি। এটাই সম্ভবত বিএনপির নির্বাচনী প্রচারণায় সবচেয়ে ব্যর্থতা। বিএনপি যে ‘ভোট বিপ্লব’ এবং জনজোয়ার এর প্রত্যাশা করেছিল, তা ব্যর্থ হয়েছে। একই সঙ্গে ব্যর্থ হয়েছে আন্তর্জাতিক সমর্থনের প্রত্যাশাও। কেন বিএনপি ব্যর্থ হলো? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মোটা দাগে ৫টি কারণ খুঁজে পেয়েছে। এগুলো হলো-
১. জনগণকে সম্পৃক্ত করতে না পারা: নির্বাচনী প্রচারণায় বিএনপি জনগণকে সম্পৃক্ত করতে পারেনি। বিএনপি বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য নির্বাচন করছে বলে ঘোষণা করে। কিন্তু বেগম জিয়া মুক্তি পেলে জনগণের কি লাভ হবে তা বিএনপি বোঝাতে পারেনি।
২. তারেক জিয়ার সম্পৃক্ততা: এই নির্বাচনে বিএনপির সবচেয়ে বড় দুর্বলতা ছিল তারেক জিয়া। তারেক জিয়া দেশে এবং বিদেশে বিতর্কিত। লন্ডনে পলাতক এই বিএনপি নেতাকে বলা হয় দুর্নিতীর বরপুত্র। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারতে তাঁর ব্যাপারে আপত্তি আছে। ভারত সরাসরি তারেককে দূরে রাখার পরামর্শ দিয়েছিলো বিএনপির নেতৃবৃন্দকে। বিএনপি নেতারা আশ্বাসও দিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁরা কথা রাখতে পারেনি। এ কারণেই আন্তর্জাতিক মহল বিএনপির ওপর আস্থা রাখতে পারেনি।
৩. জামাতের সঙ্গে সম্পৃক্ততা: এবারের নির্বাচনে বিএনপি যেন জামাত পুনর্বাসনের দায়িত্ব নিয়েছিল। জামাতের ২২ জন প্রার্থীকে ধানের শীষ প্রতীক দেওয়া হয়। যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক এবার প্রকাশ্য হয়ে পড়ে। অথচ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের প্রধান শর্তই ছিল জামাত বিএনপির সঙ্গে থাকবে না। এ কারণে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকমহল জামাত থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।
৪. প্রশাসন এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে হুমকি: নির্বাচনের শুরু থেকে বিএনপি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট পুলিশ এবং সিভিল প্রশাসনকে হুমকি, ধমকি দিয়েছে। এটা প্রশাসনের মধ্যে একটা বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। অনেকের মধ্যেই এরকম ধারণা সৃষ্টি হয়েছে যে বিএনপি বা ঐক্যফ্রন্ট ক্ষমতায় এলে প্রশাসনের ওপর খড়গ নেমে আসবে। এ কারণেই প্রশাসন এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কখনোই বিএনপি-ফ্রন্টকে আস্থায় নিতে পারেনি।
৫. অতীত ভুলের জন্য ক্ষমা না চাওয়া: পুরো নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় বিএনপি একবারও অতীত কৃতকর্মের জন্য দুঃখ প্রকাশ বা ক্ষমা প্রার্থনা করেনি। বিশেষ করে ২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপির হাওয়া ভবনকেন্দ্রিক দুর্নীতি, সন্ত্রাস এবং জঙ্গীবাদের সঙ্গে সম্পর্কের জন্য বিএনপি একবারও জনগণের কাছে ক্ষমা চায়নি।
এই ৫ কারণেই মূলত বিএনপি নির্বাচনে জোয়ার তুলতে পারেনি।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচ
মন্তব্য করুন
ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি সভাপতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বেগম খালেদা জিয়া শামীম ইস্কান্দার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার জন্য নতুন করে তৎপরতা শুরু করেছে তার পরিবারের সদস্যরা। বিশেষ করে বেগম জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার ইতোমধ্যে বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার জন্য সরকারের বিভিন্ন মহলের সঙ্গে নতুন করে যোগাযোগ শুরু করেছেন। বেগম জিয়া আর ভবিষ্যতে রাজনীতি করবেন না, রাজনীতি থেকে অবসর নেবেন এ রকম একটি বক্তব্য সামনে নিয়ে আসছেন শামীম ইস্কান্দার।
আওয়ামী লীগের তৃণমূল ক্রমশ ভেঙ্গে পড়ছে। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের তৃণমূল সংগঠিত করা এবং বিভেদ-বিভক্তির দূর করার জন্য যে ডাক দেওয়া হয়েছিল তারপর একটু পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছিল বলে বটে। কিন্তু এখন আবার উপজেলা নির্বাচনের প্রাক্কালে সারাদেশে তৃণমূল বিভক্ত হয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগের তৃণমূলকে সামাল দেওয়াই এখন কঠিন হয়ে পড়ছে। একদিকে নির্বাচন কেন্দ্রীক বিরোধ অন্যদিকে দলের চেইন অব কমান্ড ভেঙ্গে যাওয়া আর কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তদারকির অভাবে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ এখন সবচেয়ে সঙ্কটের মুখে পড়েছেন বলেই মনে করছেন আওয়ামী লীগের নেতারাই।