নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ এএম, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৮
২৯৯ আসনের বেসরকারী প্রাপ্ত ফলাফলে আওয়ামী লীগ পেয়েছে ২৫৯টি আসন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি প্রধান বিরোধী দল হিসেবেও আর্বিভূত হতে পারেনি। মাত্র ৭টি আসন পেয়ে তৃতীয় বৃহত্তম দল হয়েছে বিএনপি। অন্য দিকে ২০টি আসন পেয়ে দ্বিতীয় বারের মতো বিরোধী দলের মর্যাদা পেল পথ হারানো জাতীয় পার্টি। সাধারণ চোখে এই ফলাফল অপ্রত্যাশিত, অবিশ্বাস্য। দীর্ঘ ১২ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকলেও বিএনপির জনপ্রিয়তা এত কম না। যে কোন পরিস্থিতির নির্বাচনেও বিএনপি জাতীয় পার্টির চেয়েও খারাপ করবে, এটা বিশ্বাস করা কঠিন। নির্বাচনের আগেও যদি এমন ফলাফলের ইঙ্গিত কেউ দিত তাহলে তাকে ‘পাগল’ হিসেবেই সম্বোধন করা হতো। অথচ নির্বাচনের বাস্তবতা হলো এটাই। প্রশ্ন উঠতেই পারে কেন এই অবিশ্বাস্য ফলাফল? এর কারন হতে পারে যে কোন এক বা একাধিক। কিছু কারন একটু বিশ্লেষণ করা যেতে পারে।
প্রথমত, নির্বাচনে আসলেই অসম্ভব রকম কারচুপি হয়েছে। সেটা বিএনপি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বলার চেষ্টা করছে যে, এটি আসলে নির্বাচন হয়নি। আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা যে যেখানে যেভাবে পেরেছে ‘ভোট লুট’ করেছে। প্রশাসন এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে ব্যবহার করে দিশেহারাভাবে নৌকায় ভোট দিয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, কারচুপি হলেও কি এভাবে জেতা যায়? বিশেষ করে বিএনপির ভোট ব্যাংক বলে পরিচিত বগুড়া, লক্ষ্মীপুর, ফেনীর মত এলাকাগুলোতে শুধু কারচুপি করে এমন ব্যবধানে জয় অসম্ভব। তাই নির্বাচনের এই অবিশ্বাস্য ফলাফল শুধুমাত্র কারচুপিজনিত নয়। তাছাড়া নির্বাচনে গণমাধ্যম, দেশী বিদেশী পর্যবেক্ষকরা পর্যবেক্ষণ করেছে। এত বড় ব্যবধানের জয়ের জন্য কারচুপির যে মন্ত্র দরকার হতো তা করলে ছানি পড়া চোখেও ধরা পড়তো।
দ্বিতীয়ত, আসলেই বিএনপি থেকে জনগণ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। জনগণ বিএনপিকে ঘৃণা ভরে প্রত্যাখান করেছে। বিএনপির পরিনতি মুসলিম লীগের মতই হতে যাচ্ছে। কিন্তু এরকম ধারণার কোন যুক্তিসঙ্গত ভিত্তি খুঁজে পাওয়া যায় না। দেশে ২৫ থেকে ২৭ভাগ ভোটার অন্ধ বিএনপি’র সমর্থক। বিএনপি বিভিন্ন আসনে যে লজ্জাজনক ভোট পেয়েছে তা বিএনপির ভোট ব্যাংকের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
তৃতীয়ত, বিএনপি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ, হাস্যকর এবং অবাস্তব প্রমাণ করতে এমনটা করেছে। বিএনপির নেতা-কর্মীরা ভোট দেয়নি। ভোটে যায়নি। নির্বাচনী প্রচারণায় বিএনপির অধিকাংশ প্রার্থী ছিলেন নিস্পৃহ। তাহলে কি এটাই ছিল বিএনপির পরিকল্পনা? এমন একটা নির্বাচন করবে যা জাতির কাছে ‘অবিশ্বাস্য’ এবং ‘অবাস্তব’ প্রতিয়মান হয়। এ জন্যই দেখা গেছে যে, জামাত আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনকে বর্জন করেছে। বিএনপি কি তাহলে নিজের নাক কেটে অন্যের যাত্রা ভঙ্গের নীতি নিয়েছিল? তারাই কি চেয়েছিল এরকম একটি ফলাফল হোক, যে ফলাফলে আওয়ামী লীগও একটু লজ্জা পাবে, আর সাধারণ মানুষ মুখ টিপে হাসবে?
বাংলা ইনসাইডার/এমএস/বিকে
মন্তব্য করুন
ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি সভাপতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বেগম খালেদা জিয়া শামীম ইস্কান্দার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার জন্য নতুন করে তৎপরতা শুরু করেছে তার পরিবারের সদস্যরা। বিশেষ করে বেগম জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার ইতোমধ্যে বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার জন্য সরকারের বিভিন্ন মহলের সঙ্গে নতুন করে যোগাযোগ শুরু করেছেন। বেগম জিয়া আর ভবিষ্যতে রাজনীতি করবেন না, রাজনীতি থেকে অবসর নেবেন এ রকম একটি বক্তব্য সামনে নিয়ে আসছেন শামীম ইস্কান্দার।
আওয়ামী লীগের তৃণমূল ক্রমশ ভেঙ্গে পড়ছে। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের তৃণমূল সংগঠিত করা এবং বিভেদ-বিভক্তির দূর করার জন্য যে ডাক দেওয়া হয়েছিল তারপর একটু পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছিল বলে বটে। কিন্তু এখন আবার উপজেলা নির্বাচনের প্রাক্কালে সারাদেশে তৃণমূল বিভক্ত হয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগের তৃণমূলকে সামাল দেওয়াই এখন কঠিন হয়ে পড়ছে। একদিকে নির্বাচন কেন্দ্রীক বিরোধ অন্যদিকে দলের চেইন অব কমান্ড ভেঙ্গে যাওয়া আর কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তদারকির অভাবে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ এখন সবচেয়ে সঙ্কটের মুখে পড়েছেন বলেই মনে করছেন আওয়ামী লীগের নেতারাই।