নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৮
নির্বাচনের দিন (৩০ ডিসেম্বর) সকালে ভোট দিলেন ড. কামাল। দুপুরে গণমাধ্যমের সামনে এলেন সৌম্য-শান্ত ভঙ্গিতে। বললেন নির্বাচনের শুরু থেকেই মিনিটে মিনিটে ফোন পাচ্ছিলেন। আশা করছিলেন এই বোধহয় একটা ফোন পাবেন। যেটাতে তিনি শুনবেন যে, নির্বাচন ভালো হচ্ছে। কিন্তু এরকম একটিও ফোন তিনি পাননি বলে অনুযোগ করলেন। ক’দিন আগেই নির্বাচন কমিশনে যে মারমুখী ড. কামাল ছিলেন, কাল দুপুরে তার লেশমাত্র ছিল না তাঁর চেহারায়। রাত ৮টায় সংবাদ সম্মেলন করার কথা ছিল সেটাও বাতিল করলেন। রাতে বৈঠক করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে। ঐ বৈঠকে তিনি সাফ জানিয়ে দেন যে, হরতাল অবরোধের মতো কোনো সহিংস এবং আক্রমণাত্মক কর্মসূচির মধ্যে তিনি নেই। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, ড. কামাল আপাতত বিশ্রামে যাওয়ার অভিপ্রায়ও জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিবকে।
ড. কামাল হোসেনের আচার আচরণে যেন মনে হচ্ছে তাঁর দায়িত্ব শেষ। ‘মিশন কমপ্লিট’ কিংবা ‘অপারেশন সাকসেসফুল’। ড. কামাল হোসেনের ঘনিষ্ঠসূত্রগুলো বলছে, আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই বিদেশে যাচ্ছেন। কিছুদিন ধরেই তাঁর শরীরের উপর দিয়ে ধকল গেছে। ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহেই তাঁর চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নির্বাচনের জন্য তিনি যাননি। ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের জন্য ‘অবিশ্বাস্য’ এই ফলাফলের পরও কেন শান্ত, স্নিগ্ধ ড. কামাল হোসেন? বিএনপির অনেক নেতা এখন বলছেন, ড. কামাল হোসেন আসলে সরকারের এজেন্ট। বিএনপিকে নির্বাচনে আনার দায়িত্ব নিয়েই ড. কামাল হোসেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করেছিলেন।
অনেক বিএনপি নেতা আরেকটু আগ বাড়িয়ে বলেন, ভারতের এজেন্ট হিসেবেই ড. কামাল মিশনে নেমেছিলেন। তিনি নিজে নির্বাচন করলেন না। সারাটা সময় বললেন, ভোট বর্জন করবো না। এর অর্থ কী? বিএনপির একজন নেতা বলেন, ‘আওয়ামী লীগের জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন।’ এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্যই তাঁরা ভারতের মাধ্যমে ড. কামাল হোসেনকে ভাড়া করে। ড. কামাল হোসেনের একমাত্র দায়িত্ব ছিল বিএনপিকে নির্বাচনে আনা এবং শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে রাখা। ক্ষমতার জন্য নয়, ড. কামাল হোসেন ভারতের অনুরোধে এই দায়িত্ব নিয়েছিলেন। ড. কামালের এই দায়িত্ব গ্রহণের পিছনে কলকাঠি নেড়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের পর বিএনপিতে এখন জোরেসোরেই ড. কামাল হোসেনের ভূমিকা নিয়ে কথা হচ্ছে। বিএনপির অনেক নেতাই বলছেন, ‘ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে যাওয়ার সিদ্ধান্তটাই ছিল ভুল। জামাতের সঙ্গে যেমন কখনো আওয়ামী লীগের ঐক্য হবে না, ঠিক তেমনি সাবেক আওয়ামী লীগারদের সঙ্গেও বিএনপির ঐক্য হতে পারেনা। ড. কামালের সঙ্গে ঐক্য তার সত্যতা প্রমাণ করল।
বাংলা ইনসাইডার/এমআর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বিএনপি বিদ্রোহ উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
ঢাকার বনানীর বাসায় ফেরার পথে গাড়িচালক
আনসার আলীসহ ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল নিখোঁজ হন বিএনপির তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট
জেলা বিএনপির সভাপতি এম ইলিয়াস আলী। এক যুগ পার হলেও ইলিয়াস আলী জীবিত না মৃত সে খবর
কেউ দিতে পারেনি দীর্ঘ এই সময়ে।
তবে সিলেটের বিএনপি নেতারা মনে করেন,
ইলিয়াস সরকারের হেফাজতে অক্ষতই আছেন। তাকে ফিরে পেতে কেবল সরকারের সদিচ্ছার প্রয়োজন।
নিখোঁজের ১২ বছর পূর্তিতে তাকে ফিরে পেতে গতকাল নানা কর্মসূচি পালন করেছে সিলেট বিএনপি
ও অঙ্গ সংগঠন। ইলিয়াস আলী ‘নিখোঁজ’র পর সিলেটে গঠন করা হয় ‘ইলিয়াস মুক্তি সংগ্রাম
পরিষদ’। এ বছর ‘ইলিয়াস মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ’র কোনো কর্মসূচি না থাকলেও সমাবেশ, স্মারকলিপি
প্রদান এবং দোয়া ও মিলাদ মাহফিল করেছে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠন। এক যুগেও ইলিয়াসের সন্ধান
না মিললেও হাল ছাড়েননি বিএনপি নেতারা।
তাদের ধারণা, ইলিয়াস আলী এখনো জীবিত
আছেন। ইলিয়াসের অবস্থান সম্পর্কে সরকার জ্ঞাত আছে। কিন্তু সরকারের সদিচ্ছার অভাবে ইলিয়াস
আলীর সন্ধান মিলছে না। ইলিয়াস আলী নিখোঁজের এক যুগপূর্তির দিন গতকাল জেলা প্রশাসকের
মাধ্যমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে সিলেট বিএনপি। এ ছাড়া বাদ আসর জেলা
বিএনপির উদ্যোগে হজরত শাহজালাল (রহ.) দরগাহ মসজিদে ইলিয়াস আলীর সন্ধান কামনায় দোয়া
ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এ ছাড়া ইলিয়াসকে ফিরে পেতে বাদ জোহর একই মসজিদে দোয়া ও
মিলাদের আয়োজন করে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল। স্মারকলিপি প্রদানের আগে গতকাল দুপুরে জেলা
প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করে বিএনপি।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, দীর্ঘ ১২ বছর
ধরে ইলিয়াস আলী ফেরার অপেক্ষায় আছেন সিলেটবাসী। ইলিয়াসের জনপ্রিয়তায় আতঙ্কিত হয়ে সরকার
তাকে গুম করেছে।
ইলিয়াস নিখোঁজ প্রসঙ্গে জেলা বিএনপির
সিনিয়র সহসভাপতি অ্যাডভোকেট আশিক উদ্দিন বলেন, ইলিয়াস আলীর সন্ধান পেতে তার সহধর্মিণী
হাই কোর্টে রিট করেছিলেন। কিন্তু সরকারের অদৃশ্য হস্তক্ষেপে এক যুগেও সেই রিটের শুনানি
হয়নি। এতে প্রমাণিত হয় ইলিয়াস নিখোঁজের পেছনে সরকার জড়িত।
মন্তব্য করুন
খন্দকার মোশাররফ হোসেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জন বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন