নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ০২ জানুয়ারী, ২০১৯
বর্তমান সরকারের কাছে বাংলাদেশের সাধারন মানুষের প্রত্যাশার পারদ ১০৫ ডিগ্রী ছুঁই ছুঁই। অন্যদিকে বাংলাদেশের দুই একটা পত্রিকা আবার দেশকে ১৯৭১ পূর্ববর্তী সময়ের শেকলে বাঁধার পাঁয়তারা করছে। অপ্টিক্যাল ফাইবারের ঠিকাদারী না পেয়ে যে পত্রিকা গ্রুপ জাপান সরকারের সঙ্গে কলম যুদ্ধে নেমেছিল তারা জাপানের প্রশংসা করছে, আর বলছে জাপান এই সরকারের প্রতি কতটুকু অখুশি। পৃথ্বী জুড়ে কোন কোন পত্রিকা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কতটুকু সমালোচনা করেছে তা ছেঁকে তুলে এনে নিউজ, ভিউজে হাই লাইট করছে বলতে গেলে ঘন্টায় ঘন্টায়। তাই সাবধান না হওয়ার কোন কারণ নেই, অযথা তৃপ্তির ঢেঁকুর তুললেই সরকারের চরম সর্বনাশ হতে পারে।
বাংলাদেশের উন্নয়নের ছোঁয়া আর ছায়া দিতে হবে গ্রামের মানুষকে, যাদের পরোক্ষ করের টাকায় হয় দেশের তাবৎ উন্নয়ন। একারণেই আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, তাঁর সরকার প্রতিটি গ্রামে শহরের সব সুযোগ সুবিধা দিতে চায়। প্রতিটি গ্রামই হবে এক-একটি উন্নত শহর, যা ছিল জাতির পিতার স্বপ্ন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনার দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এটাকে তাঁদের নির্বাচনী ইশতেহারে এক নম্বর তালিকায় নিয়ে এসেছেন। এটা জন্য লোকাল লেভেল প্ল্যানিং বা বটম আপ প্ল্যানিং দরকার তা যেন ভুলে না যান পরিকল্পনাকারীগন সেটাই কাম্য। সারা বছর নগরীর আয়েশি জীবন যাপন করে হয়ে ওঠা গ্রাম উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ বা রুরাল ডেভলপমেন্ট এক্সপার্টদের বদলে বঙ্গবন্ধুর মত করে সত্যিকার পেশাজীবীদের দিয়েই সংশ্লিষ্ট খাতের উন্নয়নে পরিকল্পনা নিতে হবে। এমন কোথাও যেন ফ্লাড শেল্টার না হয় যা বন্যার পানিতে ডুবে যায়, গ্রাম উন্নয়নের সার্বিক কর্মকাণ্ডের ইমেজ ক্ষুন্ন না হয়। এমন বিলের মাঝ দিয়ে যেন রাস্তা না হয় যার ফলে নতুন এলাকার মানুষ জলাবদ্ধতার শিকার হয়ে ক্ষুদ্র ঋণের হায়েনাদের শিকারে পরিণত না হয়। এবার খুব হিসেব করেই পা ফেলতে হবে সরকারকে।
সাধারণ ক্ষমায় বঙ্গবন্ধু যাদের মাফ করেন নি, আর দালাল আইনে যারা গ্রেফতার হয়ে জেলে ছিল, শাস্তি পেয়েছিল সেইসব রাজাকার, আল বদর, আল শামস ও তাদের আওলাদদের তালিকা তৈরী করা আশু করণীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এদের সাথে নানাভাবে যুক্ত হয়েছে কিছু নব্য রাজাকার। তাদের আওলাদরা দেশে আর বিদেশের মাটিতে বসে নানাভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় করছে কুৎসা রটনা। তারা সরকারের বিরোধীতার নামে করছে দেশের বিরোধিতা। এখনি এদের চহ্নিত করা জরুরী। সেটা শুরু হতে পারে আগামী উপজেলা নির্বাচনের আগে বা পরেই। এক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়া একটা ভাইটাল রোল প্লে করতে পারে। একই সাথে দালাল আইনে সাজাপ্রাপ্তদের আওলাদরা সরকারী চাকরিতে ঘাপ্টি মেরে থেকে নানা সময়ে সরকারের তথা দেশের উন্নয়নের পরিকল্পনা আর তার বাস্তবায়নে করছে বিরোধিতা বা তৈরী করছে নানান জটিলতা। এদের চিহ্নিত করে সরকারি চাকরী থেকে এদের অপসারণ জরুরী। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন দাতা সংস্থায়ও তারা ঢুকে পড়েছে, সেখানে বসে তারা নানাভাবে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে জটিলতা তৈরী করছে পদ্মা সেতুর মত করে। সেগুলো চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেওয়া আর সরকারী চাকুরীতে রাজাকারের আওলাদদের নিয়োগ বন্ধ করার ব্যবস্থা নেয়া ফরজ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
উন্নয়নের ট্রেনে চেপে বসা বাংলাদেশকে পিছু টেনে রাখতে চায় অনেকেই, তাদের নিজের আর গোষ্ঠী স্বার্থে। কারণ বিদ্যমান আইনে তাদের অনেকের, বিশেষ করে সরকারী চাকুরেদের ক্ষমতা অপরিসীম। রুলস অব বিজিনেস ১৯৯৬ (রিভাইজড ২০১২)আর সিচিবালয় নির্দেশিকা ২০১৪ তে প্রয়োজনীয় সংশোধন আনা খুব জরুরী। যাতে মন্ত্রী আর সচিবদের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য আসে। সচিব একাই মন্ত্রণালয়ের একাউন্টিং চীফ আবার প্রশাসনিক প্রধান। এতে সচিব হয়ে পড়েন দায়িত্ব ভারাক্রান্ত। কিছু ভার কমিয়ে কিছু ক্ষমতা মন্ত্রীদের হাতে দেওয়া দরকার। তা না হলে জনগনের চাহিদা মোতাবেক কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন সম্ভব নয়। জনগনের চাহিদা বুঝতে জনপ্রতিনিধির মত লাগবে, কারণ তারা জনগনের সাথে থাকেন। একইভাবে নগর সরকারের কনসেপ্ট নিয়ে আবার নতুন করে ভাববার সময় এসেছে। স্থানীয় সরকার শক্তিশালী না হলে উন্নয়ন বাধাগ্রস্থ হবে, রাজস্ব আয় বাড়ানো যাবে না, ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত হয়ে পড়েছে, পড়বে আরও বেশি।
উন্নয়ন কর্মকাণ্ড আর প্রকল্পে দুর্নীতি বন্ধ করার জন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত দপ্তরের সদর দপ্তর থেকে জেলা অফিস পর্যন্ত জঞ্জাল সাফাই কাজ শুরু করা জরুরী হয়ে পড়েছে।এটা করা গেলে বছরে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব ঘরে আসবে। তবে সব কাজ এক সাথে না করে একটা একটা করে শুরু করতে হবে। এই রাজস্ব বাড়লে সরকারী চাকুরেরদের সুযোগ সুবিধা আরো বাড়ানো যাবে।
বেসরকারী চাকুরীজীবী বা ব্যবসায়ীদের দেয় ট্যাক্সের পরিমানের ভিত্তিতে তাঁদের অবসরকালীন সুবিধার রাষ্ট্রীয় গ্যারান্টি দিতে হবে রাষ্ট্রকেই। আর তা করা গেলে দেশের বেসরকারী খাতে এগুবে বুলেট ট্রেনের গতিতে; তখন রাষ্ট্রযন্ত্রসমুহ হবে রেগুলেটরী বডি মাত্র।
আমাদের উজ্জ্বল আগামীর জন্য চাই এক ঝাঁক মেধাবী, সুস্থ্য তরুন তরুনী, চাই মাদক মুক্ত সমাজ। মাদকের বিরুদ্ধে জির টলারেন্স মানে শুধু ক্রস ফায়ার না, তার পাশাপাশি শিক্ষার বিভিন্ন স্তরে মাদকের কূফল নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার মাধ্যমে সব্বাইকে সচেতন করে তোলা।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি বলেছিলেন যে, ভোটের সময় যেন বিএনপি থেকে আসা কাউকে ভোটের দায়িত্ব না দেওয়া হয়। জনগন আপনার কাছে থেকে আরেকটি কথাও শুনতে চান যে, বিভিন্ন দল থেকে আওয়ামী লীগে বা তার সহযোগী সংগঠনে আসারা যেন সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব না পায়। কারণ অরা সুযোগ পেলেই রণি হবে তা আপনি প্রমাণ পেয়েছেন। আওয়ামী লীগে বা তার সহযোগী সংগঠনে ঢুকে পড়া রাজাকার, চৈনিক বাম, কাওয়াদের চিহ্নিত করা খুব জরুরী হয়ে পড়েছে, তারা উপজেলা বা আগামীর ইউনিয়ন নির্বাচনে এসে নিজের চেহারা ধাকবে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের গেলাপে। সামনের উপজেলা নির্বাচন থেকে তাঁদের বাদ দেওয়া খুব জরুরী হয়ে পড়েছে আওয়ামী লীগের জন্য।
সব ধরণের লেনদেনে ন্যাশনাল আইডির ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে হবে। রাজস্ব আহরনে বিশেষ করে ভ্যাট সংগ্রহে দুর্নীতির লাগাম টানা নীতিগত সিদ্ধান্ত নিলে শুধু নগর জুড়ে লক্ষ লক্ষ তরুন তরুণীর চাকরীর সংস্থান করা যায়, অবসরপ্রাপ্ত দক্ষ জনশক্তির পরামর্শ নেওয়া যায়। ব্যাংকিং খাতের অনিয়মগুলো দূর করতে অনিয়মকারী লুটেরাদের বিরুদ্ধে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা সোশ্যাল মিডিয়াসহ নানা প্রচার মাধ্যমে প্রচার করতে হবে, ব্যাপক হারে। গুম, খুনের অভিযোগগুলোর ব্যাপারে সহিষ্ণুতার নীতি নিতে হবে, আওয়ামী লীগকে সুশাসনের একটা নজির সৃষ্টি করতে হবে।
সবচেয়ে বড় কথা হলো, গত দশ বছরে বাংলাদেশে যে উন্নয়নের ধারা সূচনা হয়েছে তা এগিয়ে নিতে হবে। একটা বিষয় মনে রাখতে হবে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পসহ মেগা প্রকল্পগুলোর কাজ আগামী পাঁচ বছরে যদি সম্পূর্ণ হয় তাহলে দেশ যেমন বহুদূর এগোবে তেমনি মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দলটি এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছবে। গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মিত হলে আমাদের অর্থনীতি টাট্টু ঘড়ায় সওয়ার হয়ে ছুটবে দ্রুততার সাথে।
এক ঝাঁক মেধাবী শিক্ষিত তরুন-তরুনী এবার এমপি হয়েছেন। সাথে আছেন অভিজ্ঞতার জারক রসে জারিত একদল ‘বয়স্ক তরুন-তরুনী’। রাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাময় আনার জন্য, অপরাধ ও দুর্নীতি দমনে, মানুষের মানবিক উন্নয়নের লক্ষ্যে নতুন আইন প্রণয়নে, প্রকল্প প্রণয়নে ও বাস্তবায়নেনেদের সম্মিলিত শক্তিকে কাজে লাগাতে হবে। সাবধান হয়ে এগুলে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তর তর করে উপরে ওঠা শুরু শুধু সময়ের ব্যাপার মাত্র।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।