নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ০৬ জানুয়ারী, ২০১৯
নতুন মন্ত্রিসভা নিয়ে অনেক প্রশ্নের মধ্যে একটি বড় প্রশ্ন উঠেছে- আওয়ামী লীগ একলা কেন? আজ সোমবার যে নতুন মন্ত্রিসভার নাম ঘোষণা করা হয়েছে তাতে জাতীয় পার্টি তো নেই, নেই ১৪ দলের অন্য শরিকরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি এনিয়ে চতুর্থ বারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছেন। কিন্তু কখনো তিনি একলা চলো নীতি নিয়ে সরকার গঠন করেননি। ১৯৯৬ সালে দীর্ঘ ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পায়। এ সময় আওয়ামী লীগ সভাপতি জাতীয় পার্টি এবং তৎকালীন জাসদ (রব)-কে নিয়ে মন্ত্রিসভা গঠন করেন। ঐ সময়ে প্রধানমন্ত্রীর ঐক্যমতের সরকার নীতি দেশে এবং বিদেশ প্রশংসা কুড়িয়েছিল। যদিও ঐ মন্ত্রিসভায় আমন্ত্রণ জানানোর পরও বিএনপি তাতে অংশগ্রহন করেনি। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ একাই দুই তৃতীয়াংশের বেশী সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও বিএনপি এবং জামাতকে বাদ দিয়ে সকলকে নিয়ে সরকার গঠন করে। ঐ মন্ত্রিসভায় প্রথমে জাতীয় পার্টি, পরে জাসদ (ইনু) কে নেয়া হয়। প্রথমে প্রত্যাখ্যান করলেও পরে ওয়ার্কাস পার্টির নেতা রাশেদ খান মেননও মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হন।
২০১৪ সালে ছিল সর্বদলীয় সরকার। ঐ সরকারে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টিও যোগ দেয়। জেপি, জাসদ (ইনু) এবং ওয়ার্কার্স পার্টির সমন্বয়ে সরকার আজ শেষ হচ্ছে। ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ মহাজোটগত ভাবে নির্বাচন করেনি। নির্বাচন করেছিল ১৪ দলগত ভাবে। বিএনপি এবং অন্যান্য বিরোধী দল নির্বাচন বর্জন করায় জাতীয় পার্টি আলাদা নির্বাচন করে, তাও নানা নাটকের জন্ম দিয়ে। কিন্তু এবার আওয়ামী লীগ মহাজোটগত ভাবেই নির্বাচন করে। যদিও নির্বাচনের পর জাতীয় পার্টি জানিয়ে দিয়েছে যে, তারা বিরোধী দল হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। মন্ত্রিসভায় জাতীয় পার্টি না থাকার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে। তাই সদ্য ঘোষিত মন্ত্রিসভায় জাতীয় পার্টির না থাকা ছিল অনুমিত। কিন্তু ১৪ দলের না থাকাটা অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের বিস্মিত করেছে। বিস্মিত হয়েছেন ১৪ দলের নেতারাও। আজ বিকেলে নতুন মন্ত্রিসভার নাম ঘোষিত হবার পর বিস্ময় প্রকাশ করেন ১৪ দলের অন্যতম শরীক ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি এবং বিদায়ী সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। তিনি বলেন, ১৪ দল কেন মন্ত্রিসভায় নেই আমি জানিনা। এনিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও তার বা জোটের কোন কথা হয়নি বলেও তিনি জানান। গত মন্ত্রিসভাতে ১৪ দলের তিনজন মন্ত্রী ছিলেন। কিন্তু এবার ১৪ দলকে কেন বাদ দেয়া হলো। অনেক সমালোচক বলে আওয়ামী লীগ যখন বিশাল বিজয় পায় তখনই দলটি একলা চলো নীতি গ্রহণ করে, দুঃসময়ের সাথীদের ভুলে যায়।
এবার বিএনপিকে একেবারে নাকানী চুবানী খাওয়ানোর পর আওয়ামী লীগ কি মনে করেছে যে তাঁর বন্ধু প্রয়োজন নেই? আওয়ামী লীগের এই উপেক্ষা নীতির কারণে বিভিন্ন সময় আওয়ামী লীগ তাঁর অনেক বন্ধু, শুভার্থী হারিয়েছেন বলে অনেকে মনে করছেন। যদিও আওয়ামী লীগের তরফ থেকে বলা হয়েছে, বিষয়টি তেমন না। এটা কেবল একটা ধাপ, কিছুদিনের মধ্যেই মন্ত্রিসভার দ্বিতীয় ধাপ ঘোষিত হবে, তখন নিশ্চয়ই ১৪ দলের শরিকদের মধ্যে থেকে মন্ত্রী নেওয়া হবে। তবে একটি সূত্র বলছে, ১৪ দলের থেকে মন্ত্রী হলেও হেভিওয়েটদের যেমন রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু বা আনোয়ার হোসেন মঞ্জুদের মন্ত্রী না করার সম্ভাবনাই বেশি। এর বদলে শিরিন আক্তার, ফজলে হোসেন বাদশার মতো নেতাদের মন্ত্রীসভায় অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।