নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ০৮ জানুয়ারী, ২০১৯
নির্বাচনের পর থেকেই বিএনপির অধিকাংশ নেতা নিখোঁজ। তাঁদের কোন দলীয় কর্মকাণ্ডে পাওয়া যাচ্ছে না। দলের কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগও বন্ধ করে দিয়েছেন তাঁরা। বাড়িতে শুয়ে বসেই দিন কাটছে অনেকের। বিএনপির নেতারা বলছেন, নির্বাচনে বিপর্যয়ের হতাশার কারণেই তাঁরা আপাতত নিজেদের গুটিয়ে রেখেছেন। সময়ই সব ঠিক করে দিবে। তবে বিএনপির অন্য একটি সূত্র বলছে, দলের মহাসচিবের সঙ্গে দূরত্বের কারণে, দলের কর্মসূচির সঙ্গে দ্বিমত থাকায় অনেক নেতা নিষ্ক্রিয় হয়ে আছেন। দলের বড় একটি অংশ মহাসচিবের বিরুদ্ধে অনাস্থা জানিয়ে দলীয় কার্যক্রম থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য জেনারেল (অব.) মাহাবুবুর রহমান দীর্ঘ দিন দলীয় কর্মসূচীতে অনুপস্থিত। তিনি এবার নির্বাচনও করেননি। নানা বিষয়েই তার সঙ্গে দলের মত পার্থক্য সেই ওয়ান ইলেভেন থেকে। তারপরও দলের মহাসচিব তার নিকটাত্মীয় হবার কারণে তিনি কিছুদিন সক্রিয় ছিলেন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে সব কিছু থেকেই তিনি আড়ালে। জেনারেল মাহাবুবের ঘনিষ্ঠরা বলছেন, এসব রাজনীতি তাঁর পছন্দ নয় জন্যই তিনি এখন অবসর জীবন কাটাচ্ছেন।
কদিন আগ পর্যন্তও সরব ছিলেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ। কিন্তু নির্বাচনের পর থেকে দলের অধিকাংশ কর্মসূচীতে তিনি অনুপস্থিত। দলের মধ্যে কান পাতলেই শোনা যায় যে মহাসচিবের সঙ্গে তাঁর বিরোধ এখন প্রকাশ্য। দু’জনের মুখ দেখাদেখি বন্ধ। ব্যারিস্টার মওদুদ শেষ পর্যন্ত নির্বাচন বর্জন চেয়েছিলেন। এতে সায় দেননি ফখরুল। বিভিন্ন জনের কাছে তিনি মির্জা ফখরুলের অশালীন ভাষায় গালাগালিও করেছেন। নির্বাচনের পর পরই তিনি ঘোষণা করেছেন, ফখরুল মহাসচিবের পদ ছাড়লেই তিনি সক্রিয় হবেন।
ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া দীর্ঘদিন ধরেই রাজনীতিতে সরব নন। এটা মুলত: অসুস্থতা জনিত কারণে। কিন্তু এবার তিনি এবং তার স্ত্রী কাউকেই মনোনয়ন না দেয়ায় ‘হতবাক’ ব্যারিস্টার রফিক। এই ঘটনায় তিনি প্রচণ্ড কষ্ট পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন তাঁর ঘনিষ্ঠরা। এরপর আবার ঘরে ঢুকেছেন। অভিমানেই তিনি নিজেকে আড়াল করেছেন বলে তার ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায় তাঁর সবগুলোরই বিপক্ষে ছিলেন। ড. কামালদের সঙ্গে ঐক্যকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেছিলেন ‘শয়তানের সঙ্গে ঐক্য’। নির্বাচনের ব্যাপারেও তাঁর অবস্থান ছিল নেতিবাচক। তারপরও নির্বাচন করেন। সহিংসতায় আক্রান্ত হন। এখন তিনি নিখোঁজ। দলীয় কর্মকাণ্ডে থাকছেন না। তাঁর ঘনিষ্ঠরা বলছেন, ভুল সিদ্ধান্তের জন্য ক্ষুব্ধ গয়েশ্বর নিজেকে দূরে রেখেছেন। তবে শিগগিরই তিনি সচল হবেন বলে তাঁর রাজনৈতিক শীষ্যরা জানিয়েছেন।
বিএনপির কর্মকাণ্ডে দেখা যাচ্ছে না স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার এবং ড. খন্দকার মোশারফ হোসেনকেও। তবে দলের মহাসচিবের সঙ্গে বিরোধে নয়। তাদের সমস্যা শারীরিক বলে দাবি করছেন তাদের ঘনিষ্ঠরা। শুধু এসব প্রবীণ নেতারা নন। শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, আমান উল্লাহ আমান, মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের মতো নেতারাও নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছেন। এরা সবাই দলের মহাসচিবের প্রতি অনাস্থা জানিয়েছেন বলে দলের একাধিক সূত্র জানিয়েছে। দলে অবসরে যাওয়া নেতার সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে।
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।
আওয়ামী লীগ দলগতভাবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট এবং কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলায় মন্ত্রী, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাই ব্রাদার বা স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না। যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।