নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ০৯ জানুয়ারী, ২০১৯
শুধু তারেক জিয়া একা নয়, বিএনপির ৪ নেতার বিরুদ্ধে মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। মনোনয়ন দেওয়ার নামে এরা দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে বিএনপির নেতাকর্মীরা এখন প্রকাশ্যে বলছেন। যে ৪ নেতার বিরুদ্ধে মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে তাদের মধ্যে রয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন এবং আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু। এরা প্রত্যেকেই মনোনয়ন প্রত্যাশীদের কাছ থেকে তারেক জিয়াকে দেয়ার কথা বলে এবং নির্বাচন পরিচালনা ফান্ডের জন্য টাকা নিয়েছেন।
বিএনপির সাবেক চিফ হুইপ বরিশালের একটি আসন থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে মনোনয়ন না দিয়ে ১০ কোটি টাকার বিনিময়ে মনোনয়ন দেওয়া হয় একজন সিংগাপুর প্রবাসীকে। এই টাকার একটি বড় অংশ দলীয় ফাণ্ড হিসেবে নেন মির্জা ফখরুল আলমগীর। কুমিল্লার একটি আসনে দলের স্থায়ী কমিটির একজন সদস্যকে মনোনয়ন না দিয়ে একজন ব্যবসায়ীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। সেখানেও ১০ কোটি টাকা মির্জা ফখরুল এবং খন্দকার মোশারফের মধ্যে ভাগ বাটোয়ারা হয় বলে বিএনপির একাধিক নেতা দাবি করেছেন। বিএনপির অনেক নেতাই বলছেন, চট্টগ্রামের আসনগুলোতে মনোনয়ন বাণিজ্য করেছেন স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি পার্টি ফান্ডের জন্য টাকা নিয়েছেন একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশীদের কাছ থেকে। বিএনপির একজন প্রার্থী বলেছেন, তাকে টেলিফোন করে আমীর খসরু ডেকে পাঠান। তারপর তাকে বলেন, দলের এখন দূরাবস্থা। পার্টি ফান্ডে টাকা প্রয়োজন। তোমার নমিনেশন আমি তারেককে বলে কনফার্ম করছি। পরে ঐ প্রার্থী দুই দফায় আমীর খসরুকে পাঁচ কোটি টাকা দেন। কিন্তু চূড়ান্ত মনোনয়নে ঐ প্রার্থী বাদ যান।
বৃহত্তর নোয়াখালী এবং খুলনা অঞ্চলের মনোনয়নের তদারকি করেন আবদুল আউয়াল মিন্টু। তিনিও বিভিন্ন প্রার্থীর কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। এদের অনেকেই শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত মনোনয়ন পায়নি। এখন তারা মিন্টুকে খুঁজছেন। কিন্তু আবদুল আউয়াল মিন্টু তাদের ফোন ধরছেন না বলে তারা অভিযোগ করছেন।
কুমিল্লা এবং ঢাকা অঞ্চলে মনোনয়ন বাণিজ্য করেছেন ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন। তবে, পরে ঢাকার আসনগুলোতে ভাগ বসান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ নিয়ে মির্জা ফখরুলের সঙ্গে ড. খন্দকার মোশারফের দ্বন্দ্ব হয় বলেও জানা যায়। রংপুর, রাজশাহী অঞ্চলের প্রার্থীদের কাছ থেকে গণ চাঁদাবাজি করেছেন ‘ক্লিন ইমেজের’ অধিকারী বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রংপুর অঞ্চলের একজন প্রার্থীকে ফোন করে ঢাকায় নিয়ে আসেন বিএনপি মহাসচিব। তাঁর কাছে পার্টি ফান্ডের জন্য টাকা চান। পরে ঐ প্রার্থী ৫ লাখ টাকা দিয়ে বাঁচেন। ঐ প্রার্থী বলছিলেন যে, আমার কাছে এক কোটি টাকা চেয়েছিলেন মহাসচিব। বলেছিলেন ‘সামনে গণজোয়ার হবে। লাখো মানুষ রাস্তায় নামবে। তুমিতো এমনিই জিতে যাবে।’ এই আশ্বাসে আমি আর নির্বাচনী প্রচারণাও করিনি। ভোট বিপ্লবের আশায় বসেছিলাম।
মনোনয়নে টাকা দিয়ে, নির্বাচনে হেরে ক্ষুব্ধরা এখন প্রকাশ্যেই বিএনপি নেতাদের অপকর্মের গল্প বলে বেড়াচ্ছেন।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।