নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১০ জানুয়ারী, ২০১৯
বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী এবং বিএনপির থিংক ট্যাংকরা মনে করছেন, ‘৭৫ এরপর আওয়ামী লীগ যে রকম প্রতিকূল রাজনৈতিক পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিল, এখন বিএনপি তেমনি একটি পরিস্থিতির মোকাবেলা করছে।’ তারা মনে করেন, ‘আওয়ামী লীগ ৭৫ এর ১৫ আগস্টের পর এর চেয়েও খারাপ পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিল। কিন্তু তারা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বিএনপিও ঘুরে দাঁড়াতে পারে সেটা সম্ভব। কিন্তু সে জন্য প্রয়োজন যথাযথ নেতৃত্ব।’ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা এবং গণস্বাস্থ্যের ট্রাষ্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী মনে করেন, ‘বিএনপিতে প্রয়োজন শেখ হাসিনার মতো নেতৃত্ব। যিনি কঠোর পরিশ্রম করে দলকে প্রস্তুত করতে পারবেন।’ তিনি মনে করেন, ‘বিএনপির জনসমর্থন আছে। জনপ্রিয়তাও আছে। কিন্তু এই জনসমর্থণকে কাজে লাগাতে পারছে না দলটি।’ ডা. জাফরুল্লাহ মনে করেন, ‘বিএনপির পরিনতি কখনোই মুসলিম লীগের মতো হবে না। কারণ বিএনপির একটি ভোট ব্যাংক আছে।’
বিএনপির বর্তমান অবস্থাকে ‘সংকটজনক’ মনে করলেও এ থেকে উত্তরণ সম্ভব বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. এমাজ উদ্দিন আহমেদ। অধ্যাপক এমাজ উদ্দিন মনে করেন, ‘সরকার বিএনপিকে নি:শেষ করার মিশন নিচ্ছে। বর্তমান সরকারের এটাই প্রধান এজেন্ডা। আওয়ামী লীগ চায়না বিএনপি নামে কোন রাজনৈতিক দল থাকুক।‘ এই রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বলেন, ‘সঠিক নেতৃত্ব এবং নীতি আদর্শে অটল থাকলেই কেবল এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ সম্ভব। আদর্শের প্রশ্নে ছাড় দিলে বিএনপি বিলীন হয়ে যাবে।‘ তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমান যে রাজনীতি করতেন, বিএনপির নেতাদের সেই রাজনীতি করতে হবে। ড্রইং রুমে বসে বড় বড় কথা বলে লাভ হবে না। টেলিভিশনে টকশো করেও ফায়দা নেই। বিএনপিকে তৃণমূলের মানুষের কাছে যেতে হবে। তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে হবে, তাঁদের সাহস দিতে হবে এবং সংগঠিত করতে হবে।‘ তিনি বলেন, ‘বিএনপিকে সংগঠিত করতে হবে তৃণমূল থেকে।‘
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. মাহাবুব উল্লাহ বলেন, ‘বিএনপিকে বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ ঘটাতে পারে জনগনকে সম্পৃক্ত করেই। জনগন অন্যায়ের প্রতিবাদ করছে না এজন্য যে বিএনপি নেতারা জনগনের কাছে যাচ্ছেন না। জনগনের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পরেছেন।’ ড. মাহাবুব উল্লাহ মনে করেন,‘ এখন বিএনপির উচিত প্রচুর জনসংযোগ করা। জনগনের বার্তাটা ধারণ করা।’ তিনি মনে করেন,‘বিএনপির সমর্থন আছে, কিন্তু সেটাকে সংগঠিত করার ক্ষেত্রে ঘাটতি রয়েছে। এই সমর্থনকে সংগঠিত করতে হবে।’ নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপিপন্থী একজন বুদ্ধিজীবি বলেন,‘ জিয়া এবং বেগম জিয়ার যে নেতৃত্বগুন ছিলো তারেক জিয়ার তা নেই। জিয়া এবং বেগম জিয়া দলের বাইরে সাধারণ মানুষের কাছে বিপুলভাবে জনপ্রিয় ছিলেন। তাঁদের সৎ ইমেজ ছিল। কিন্তু তারেক জিয়া দলের মধ্যেই জনপ্রিয়। দলের বাইরে তার ইমেজ সংকট রয়েছে। পিতা বা মায়ের মতো সৎ ইমেজ নেই তার। বরং দলের বাইরে সাধারণ লোকজন তাকে ‘দুর্নীতিবাজ’ মনে করে। ‘ এই বুদ্ধিজীবি মনে করেন,‘নতুন নেতৃত্ব আনতে হবে বিএনপির উত্তরনের জন্য। তারেক জিয়াকে দিয়ে নতুন জাগরণ সম্ভব নয়। আবার জিয়া পরিবারের বাইরে কোন নেতৃত্ব গ্রহণযোগ্য হবে না। এত বিএনপি বিভক্তির পথে যাবে। জিয়া পরিবারের মধ্যে থেকেই স্বচ্ছ ইমেজের নেতৃত্ব খুঁজে বের করাটাই এখন বিএনপির বড় চ্যালেঞ্জ।’
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।
আওয়ামী লীগ দলগতভাবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট এবং কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলায় মন্ত্রী, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাই ব্রাদার বা স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না। যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।