নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১৫ জানুয়ারী, ২০১৯
নির্বাচনে বিপুল বিজয়ের পর আওয়ামী লীগ সংগঠনের দিকে মনযোগী হয়েছে। টানা ক্ষমতায় থাকার জেরে সংগঠন যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হয়, সাংগঠনিক ভাবে দল যেন দুর্বল না হয় সে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। আর এজন্য আওয়ামী লীগ তাঁর সংগঠনকে নতুন আঙ্গিকে সাজানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে। নির্বাচনের পরই আওয়ামী লীগের প্রথম লক্ষ্য হলো দলের অঙ্গ সংগঠন এবং সহযোগী সংগঠনগুলোকে পুন:গঠন করা, তাদের সম্মেলন আয়োজন করা। নির্বাচনের কিছুদিন আগে ছাত্রলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরেই যুবলীগ এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ বেশকিছু অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় না। পর্যায়ক্রমে এসব সহযোগী এবং অঙ্গ সংগঠনের সম্মেলন করে নতুন নেতৃত্বের হাতে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের সূত্রে বলা হযেছে, দীর্ঘদিন সম্মেলন হয় না এমন সংগঠনগুলো দ্রুত সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণের জন্য বলা হয়েছে। আগামী অক্টোবরে আওয়ামী লীগ তার কেন্দ্রীয় জাতীয় কাউন্সিল করতে চায়। সেটা সামনে রেখে তার আগেই অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনগুলোর সম্মেলন করা হবে বলে আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে। এছাড়াও খুব শিগগিরই পর্যায়ক্রমে জেলা এবং উপজেলা পর্যায়েও আওয়ামী লীগের অসমাপ্ত সম্মেলনগুলো শেষ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সম্মেলন এবং কাউন্সিলের পাশাপাশি আওয়ামী লীগে যোগদানের ব্যাপারেও কঠোর নিয়মনীতি চালু হচ্ছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দলের কার্যনির্বাহী কমিটির যৌথসভায় বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ বিপুল বিজয় পেয়েছে। এখন আওয়ামী লীগে যোগদানের হিড়িক পড়বে। অনেক সুবিধাবাদী আওয়ামী লীগে এসে বদনাম করতে চাইবে। স্যাবোটাজ করানোর জন্যও অনেকে আওয়ামী লীগে যোগ দিতে চাইবে। এ ব্যপারে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।’ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকের অনুমতি ছাড়া স্থানীয় পর্যায়ে আওয়ামী লীগে যোগদান করা যাবে না বলে ইতিমধ্যেই নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বিগত সময়ে স্থানীয়ভাবে বিএনপি- জামাত থেকে বহুলোককে আওয়ামী লীগে নেয়া হয়েছিল। এখন অনুমতি ছাড়া এ ধরনের যোগদান করা যাবে না। এছাড়াও, ২০০৮-এর পর বিএনপি জামাত থেকে যারা আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি তাদের তালিকা চেয়েছেন। ঐ তালিকা প্রাপ্তির পর তারা দলে যোগ দিয়ে কি কি কাজ করেছে তা গোয়েন্দা তদন্ত করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন যে, দলের কেউ সংগঠনের বদনাম করলে তার বিরুদ্ধে দ্রুত সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে হবে।
এছাড়াও দলের সাধারণ সম্পাদকসহ নেতাদের নিয়মিত দলীয় কার্যালয়ে বসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী তাঁর ধানমন্ডিস্থ কার্যালয় এবং বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ’এ দলীয় কার্যালয়ে ভিডিও নেটওয়ার্কিংয়ের আওতায় এনেছেন। মোবাইল ফোনে তিনি সভাপতির কার্যালয় এবং দলীয় কার্যালয়ে কি হচ্ছে তা দেখেন। মাঝে মধ্যে নেতাকর্মীদের নির্দেশনাও দেন। দলীয় কার্যালয়ে রুটিন করে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং সাংগঠনিক সম্পাদকদের নিয়মিত যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। দলের সাধারণ সম্পাদক এখন দলীয় কার্যালয়ে নিয়মিত যাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা জন সম্পৃক্ত সংগঠন হিসেবে দলকে আরও বিকশিত করতে চাই। সে জন্যই আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নির্দেশে সংগঠনকে আরো শক্তিশালী করার উদ্যোগ নিয়েছি।’
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।