নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ১৭ জানুয়ারী, ২০১৯
আগামী মার্চে অনুষ্ঠেয় উপজেলা নির্বাচনে বর্তমান চেয়ারম্যানদের অধিকাংশই মনোনয়ন পাচ্ছেন না। উপজেলা নির্বাচন নিয়ে মাঠ জরিপে অধিকাংশ বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান সম্পর্কে নেতিবাচক তথ্য উঠে এসেছে। সর্বশেষ উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৪ সালে। ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৯ মে পর্যন্ত মোট ছয় ধাপে ৪৭১ টি উপজেলার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। দলীয় প্রতীকে না হলেও , ঐ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২৩৩ টি চেয়ারম্যান পদে, ১৬৬ টি পদে বিএনপি, ৩৬ টিতে জামাত, জাতীয় পার্টি ২ টিতে এবং স্বতন্ত্ররা ২০ টিতে জয়ী হয়। পরবর্তীতে বিএনপির ১৬৬ জনের মধ্যে ৬২ জন আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান পদ বহাল রাখেন। ৭২ জন উপজেলা চেয়ারম্যানকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে নানা অভিযোগে বরখাস্ত করে। ২৮ জন এখনো দায়িত্ব পালন করছেন। ৩৬ জন জামাতের মধ্যে ৬ জন উপজেলা চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগে যোগ দেন। বাকি ৩০ জনকে মামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগে বরখাস্ত করা হয়। এই মুহূর্তে উপজেলা চেয়ারম্যানের মধ্যে ৩১১ জন আওয়ামী লীগের।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের মাঠ জরিপে দেখা গেছে, দুই তৃতীয়াংশ উপজেলা চেয়ারম্যানই তার নির্বাচনী এলাকায় জনপ্রিয়তা হারিয়েছেন। এদের অনেকেই এলাকায় অবাঞ্ছিত। অনেকের সঙ্গেই স্থানীয় আওয়ামী লীগের দ্বন্দ্ব রয়েছে। বিশেষ করে উপজেলা চেয়ারম্যান হওয়ার পর যারা আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন, তাদের অধিকাংশই দলের জন্য ‘ক্ষতিকর’ বিবেচিত হচ্ছে। আওয়ামী লীগের মাঠ জরিপে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যানের দুই-তৃতীয়াংশ এবার নির্বাচনে দাঁড়ালে জয়ী হতে পারবে না বলে মত দেওয়া হয়েছে। মাঠ জরিপে নতুন এবং এলাকায় জনপ্রিয়দের উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে মনোনয়ন দেয়ার পক্ষে মত দেওয়া হয়েছে। জরিপে বলা হয়েছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হবার জন্য যারা এলাকায় কাজ করেছেন, যাদের পরিচ্ছন্ন ইমেজ রয়েছে, তাদের অগ্রাধিকার দেয়া যেতে পারে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মাঠ জরিপে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে ৩ থেকে ৫ জনের একটি সংশ্লিষ্ট তালিকা করা হয়েছে। এই তালিকায় বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যানদের ২১৮ জনেরই নাম নেই। আবার বিগত উপজেলা পরিষদে ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন এমন অন্তত ৮৮ জনের নাম নতুন তালিকায় রয়েছে।
আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সংসদ সদস্যদের সঙ্গে যেন উপজেলা চেয়ারম্যানদের দ্বন্দ্ব না হয় সে বিষয়টি এবার মনোনয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হবে। বিগত সময়ে এমপি এবং উপজেলা চেয়ারম্যানদের ক্ষমতার দ্বন্দ্ব ছিলো সরকারের জন্য বড় মাথা ব্যাথার কারণ। এ কারণে অনেক স্থানেই উন্নয়ন কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। এই দ্বন্দ্বে দলের সাংগঠনিক শক্তিও ক্ষয় হয়েছে বলে জানা গেছে। আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, এবার মনোনয়নের ক্ষেত্রে দলের দীর্ঘদিনের নেতা-কর্মী, এলাকায় জনপ্রিয় এবং পরিচ্ছন্ন ইমেজের অধিকারীদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, নির্বাচন কমিশন আগামী মার্চ থেকে ৫ ধাপে ৪৯২টি উপজেলায় নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। আওয়ামী লীগ ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে, জোটগত নয়, বরং দলগতভাবে এই নির্বাচন করবে আওয়ামী লীগ। মাঠ জরিপের ভিত্তিতেই উপজেলায় প্রার্থীতা চূড়ান্ত করার কাজে নেতৃত্ব দেবেন প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।
আওয়ামী লীগ দলগতভাবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট এবং কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলায় মন্ত্রী, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাই ব্রাদার বা স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না। যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।