নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ৩১ জানুয়ারী, ২০১৯
উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়ন বাণিজ্য করা হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ব্যাপারে কঠোর বার্তা দিয়েছেন। উপজেলা নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগ মনোনয়ন প্রক্রিয়া শুরু করেছে। প্রত্যেকটা স্থানীয় কমিটিকে নির্বাচনের জন্য চেয়ারম্যান পদে তিনজনের নাম প্রস্তাব করতে বলা হয়েছে। স্থানীয় কমিটি খুব শিগগিরই এই তিন ব্যাক্তির নাম আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন কমিটির কাছে পাঠাবে। আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র গুলো বলছে, পাশাপাশি আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার একটি বিশেষ টিম সারাদেশে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য জনপ্রিয়তার ভিত্তিতে প্রার্থীদের তালিকা তৈরী এবং মাঠ জরিপ করছে। মাঠ জরিপের ভিত্তিতে তারাও তিনটি করে তালিকা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে হস্তান্তর করবে। এখন স্থানীয় কমিটি যে তিনজন ব্যাক্তির নাম পাঠাবে ও আওয়ামী লীগের মাঠ জরিপে যে তিনজনের নাম উঠে আসবে, যদি তাতে গড়মিল থাকে। তাহলে এটা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় একটা টিম তৃতীয়পক্ষ হিসেবে যাচাই বাছাই ও তদন্ত করবে। তদন্ত করার পর যদি দেখা যায় স্থানীয় কমিটি ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ কোন পক্ষপাতিত্বমূলকভাবে বা মনোনয়ন বাণিজ্য করে কিংবা অন্য কোন বিশেষ উদ্যেশ্যে এমন তিনজনের নাম দিয়েছে যে তিনজন জনপ্রিয় নন, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, উপজেলা নির্বাচনের ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো বিবেচনা করা হবে তা চুড়ান্ত করা হয়েছে। এ বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে:
১. উপজেলা নির্বাচনে যে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশি, তাকে অন্তত বারো বছর আওয়ামী লীগ করতে হবে।
২. যিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী তার কোন নিকটাত্নীয় বা স্ত্রী জাতীয় সংসদের সদস্য হতে পারবে না।
৩. তার বিরুদ্ধে কোন দুর্নীতি, ঋণ খেলাপি বা সন্ত্রাস কিংবা জঙ্গিবাদের মামলা থাকা চলবে না।
৪.তিনি অতীতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন বা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হয়েছেন। এরকম কোন ব্যাক্তি মনোনয়ন পাবেন না।
আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো বলছে যে, ভাইস চেয়ারম্যান এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের ব্যাপারে আওয়ামী লীগ উদারনীতি গ্রহণ করবে। সেখানে কোন দলীয়ভাবে মনোনয়ন দেওয়া হবে না। এটা উন্মুক্ত থাকবে। যে নির্বাচন করতে চাইবে স্বতন্ত্রভাবে নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচন করতে পারবে। কিন্তু উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনের ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ এমন প্রার্থী বাছাই করতে চায়; যে প্রার্থী ত্যাগী, পরীক্ষীত এবং দলের জন্য কাজ করেছেন এবং যিনি নির্বাচনে জয়ী হবেন। আওয়ামী লীগ মনে করছে, উপজেলা নির্বাচনে প্রচুর স্বতন্ত্রপ্রার্থী দাঁড়াবে। তাই এক্ষেত্রে শুধুমাত্র নৌকা মার্কা দিলেই জয় হবে এমন ধারনার কোন কারণ নেই। বিএনপি যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ নাও করে তবুও নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। তাই আওয়ামী লীগ প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে অন্য যেকোন সময়ের চেয়ে বেশি সতর্কতা অবলম্বন করছে। আওয়ামী লীগের একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা বলেছেন যে, স্থানীয় নির্বাচনে যেটা সবচেয়ে বড় আতঙ্ক, সেটা হলো মনোনয়ন বাণিজ্য। তিনি বলেন, আমরা জাতীয় নির্বাচনে মনোনয়ন বাণিজ্য সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করেছি। যেটা সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় উদ্যোগের কারণে। এছাড়াও বিজ্ঞানসম্মত গবেষণা এবং মাঠ জরিপের মাধ্যমে। একই বিষয়টি করা হচ্ছে উপজলা নির্বাচনের ক্ষেত্রেও। এখানে যেন তৃনমূল থেকে কোন মনোনয়ন বাণিজ্য না হয়, সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখা হচ্ছে। ওই নেতা আরও বলেন যে, বিগত ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা এবং উপজেলা নির্বাচনে বহু মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। এবার যেন সেই অভিযোগ না উঠে সে ব্যাপারে আওয়ামী লীগ সতর্ক।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।