নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ০৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯
মহিলা সংরক্ষিত আসনে মনোনয়ন এবং উপজেলায় প্রথম ধাপে মনোনয়নে খুশী তৃণমূলের আওয়ামী লীগ। দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত ত্যাগী এবং দুঃসময়ে দলের জন্য যারা হাল ধরেছেন, এই দুই মনোনয়নে তারাই প্রাধান্য পেয়েছেন। দলের ভেতর উড়ে এসে জুড়ে বসা এবং হাইব্রিডদের রীতিমতো উচ্ছেদ করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা বলছেন ‘এটা আওয়ামী লীগের আরেকটি বিজয়।’ এর ফলে ত্যাগী কর্মীরা উৎসাহী হবে, তারা সংগঠনের জন্য কাজ করবে। এর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দুটি বার্তা দিয়েছেন:
প্রথমত; দলের জন্য কাজ করলে দল মূল্যায়ন করে। দ্বিতীয়ত; হঠাৎ এসেই আওয়ামী লীগের বড় নেতা হওয়া যায় না।
আওয়ামী লীগের তৃণমূলের একজন নেতা বলেছেন, গত দশ বছরে তৃণমূলে যেভাবে ভাড়াটে আওয়ামী লীগের উপদ্রপ শুরু হয়েছিল, সেখান থেকে আওয়ামী লীগ ঘুরে দাঁড়ালো। অবশ্য আওয়ামী লীগের রাজনীতির গতি প্রকৃতি নিয়ে যারা গবেষণা করেন, তারা মনে করেন, দলে ‘অতিথি পাখি’দের আগমন বন্ধের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল আগেই। গত বছর ছাত্রলীগের কমিটি গঠনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সভাপতি এই কার্যক্রম শুরু করেছিলেন। ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী তাদের তিন পুরুষের ঠিকুজী নিয়েছিলেন। যাদের নেতৃত্বে নেয়া হয়েছে তাদের বাপ-দাদারাও আওয়ামী লীগ করতেন। অন্যদল থেকে আসা বা হঠাৎ ছাত্রলীগ করা দের বাদ দিয়ে কমিটি গঠনের ফল পাচ্ছে আওয়ামী লীগ। ছাত্রলীগের বদনাম গত কয়েকমাসে অনেকটাই ঘুচেছে। ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজির অভিযোগ নেই। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে এই প্রক্রিয়া অনুসরন করা পুরোপরি সম্ভব হয়নি। কারণ বিএনপি নির্বাচন করায়, আওয়ামী লীগের প্রধান বিবেচ্য ছিলো কে জিতবে? তারপরও ঐ নির্বাচনের প্রার্থী তালিকাতেও সুবিধাবাদী, সদ্য আওয়ামী লীগে যোগদানকারীদের এড়িয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু মহিলা সংরক্ষিত আসনে নির্বাচনে সুবর্ণা মুস্তাফা এবং এ্যারোমা দত্ত ছাড়া সবাই দলের পোড় খাওয়া নেতাকর্মী। এদের অনেকেই তাদের জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের জন্য। সুবর্ণা মুস্তাফা সরাসরি আওয়ামী লীগ না করলেও সারাজীবনই মুক্ত চিন্তা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে ছিলেন দৃঢ়। এ্যারোমা দত্ত ও অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে দৃঢ় ব্যক্তিত্ব হিসেবেই পরিচিত। অনেকেই আশংকায় ছিলেন, এতো মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ভিড়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি আসল নকলের পার্থক্য চিনবেন কী করে? কিন্তু এই মনোনয়ন দিয়ে শেখ হাসিনা প্রমাণ করলেন, তিনি পাকা জহুরী।
মহিলা মনোনয়নের ১২ ঘণ্টা পরই ঘোষণা করা হলো, ৮৭টি উপজেলায় চেয়ারম্যানের মনোনয়ন। গতবার উপজেলা থেকে ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত ছিলো হাইব্রিডের ছড়াছড়ি। বিএনপি-জামাত থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েই উপজেলা চেয়ারম্যান বা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বনে গিয়েছিলেন অনেকে। কিন্তু এবার সেটা হয়নি। প্রথম তালিকা দেখে বোঝা গেল, যারা আওয়ামী লীগের থেকে উৎসারিত তাদেরই মূল্যায়ন করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের তৃণমূলে আবার ক্ষমতায় এলো সত্যিকারের আওয়ামী লীগ। এই দুই মনোনয়নকেই বলা হচ্ছে, ত্যাগী এবং পরীক্ষিতদের জন্য শেখ হাসিনার উপহার।
বাংলা ইনসাইডার/এমআর
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।
আওয়ামী লীগ দলগতভাবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট এবং কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলায় মন্ত্রী, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাই ব্রাদার বা স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না। যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।