নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ০৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯
রাজনৈতিক বক্তব্যে তাঁরা আলোচিত নন। তাঁদের কোন রাজনৈতিক কর্মকান্ডেও দেখা যায় না। গণমাধ্যমের পাতায় তাঁদের তেমন কোন আলোচনা নেই। তাঁরা কি কাজ করে তা নিয়েও অনেক মানুষ অন্ধকারে থাকে। কিন্তু তাঁরা সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। তাঁরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে নিবিড় হয়ে কাজ করেন। বলা হয় যে, তাঁদের কথা কম কাজ বেশি। প্রধানমন্ত্রীর বিশ্বস্ত যে টিম, সেই টিমের সদস্য তাঁরা। এরা সরকারের অন্যতম নীতি নির্ধারক। অন্যান্য রাজনীতিবিদরা যেমন বক্তৃতা-বিবৃতির রাজনীতি করেন। যেকোন বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। কথায় কথায় বক্তৃতা দেন। এদের কাজের ধরণ সেরকম নয়। বরং এদের নিজেদের যে দায়িত্ব, সেই দায়িত্ব নিভৃতে নীরবে পালন করে থাকেন।
এরকম কয়েকজন হলেন:
মেজর জেনারেল (অব:) তারিক আহমেদ সিদ্দিক: প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা। গত দশবছরে ১ টি মাত্র সংবাদ সম্মেলন করেছেন তিনি। তাকে হাতে গোনা দুয়েকটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে দেখা গেছে। তবে সামরিক কোন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার উপস্থিতি টেলিভিশনের পর্দায় চোখে পড়ে। তিনি খুব বেশি রাজনীতিবিদদের সঙ্গে মেশেন না। কথাও বলেন না। গণমাধ্যমের সামনে কোন বিষয় নিয়ে তার আলাপচারিতাও দেখা যায় না। টেলিভিশনে তার বক্তৃতা বিবৃতিও শোনা যায় না। প্রধানমন্ত্রীর একজন একান্ত বিশ্বস্ত নিষ্ঠাবান ব্যক্তি হিসেবে তাঁর পরিচিতি আছে। তিনি সরকারের সামরিক বিষয়গুলোর ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীকে পরামর্শ দেন।
ড. গওহর রিজভী: তাঁর উপদেষ্টা হওয়াটাই ছিল একটা বিস্ময়। উপদেষ্টা হওয়ার আগে তিনি ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি প্রথম বাঙালি যিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তার আগে তিনি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনাও করেছিলেন। ড. গওহর রিজভী কিছুদিন কথাবার্তা বললেও গত দুই বছরে তিনি মনব্রত অবলম্বন করছেন। কোন বিষয়ে তাকে খুব একটা কথা বলতে দেখা যায় না। তবে বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীর বিশ্বস্ত পরামর্শ দাতা হিসেবে তার স্বীকৃতি রয়েছে। তিনিও কাজ করেন গোপনে নীরবে নীভৃতে। জনসম্মুখে বা বক্তৃতা বিবৃতিতে তাকে খুব একটা দেখা যায় না।
ড. মশিউর রহমান: প্রধানমন্ত্রীর অর্থ বিষয়ক উপদেষ্টা তিনি। একটা সময়ে ড. মশিউর রহমান নানা বিষয় নিয়ে কথাবার্তা বলতেন। তাকে গণমাধ্যম কিংবা টকশোতেও উপস্থিত থাকতে দেখা যেত। কিন্তু পদ্মা সেতু নিয়ে বিতর্ক হওয়ার পর থেকে তিনি গণমাধ্যমের আড়ালে চলে গেছেন। এখন তিনি নীরবেই কাজ করেন। বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া খবরে জানা যায় যে, প্রধানমন্ত্রীর অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তিনি পরামর্শ দেন। অর্থনৈতিক বিষয়ের চাইতেও তিনি প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ভাষণ , বক্তৃতা, বিবৃতি দেওয়ার ক্ষেত্রে তথ্য যোগান বলেও জানা যায়। মশিউর রহমান নীতি পরিকল্পনা এবং অর্থনৈতিক কর্মসূচী প্রণয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তিনি যেমন গণমাধ্যমে অনুপস্থিত তেমনি তাকে কোন অনুষ্ঠান বা সভা সমিতিতেও দেখা যায় না।
ইয়াফেস ওসমান: তিনি টানা তিন মেয়াদে মন্ত্রী হয়ে রেকর্ড গড়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের কোন গুরুত্বপূর্ণ নেতা বা সদস্যও নন। ২০০৮ সালে তিনি প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর তাকে পূর্ণ মন্ত্রীর মর্যাদা দেওয়া হয়। এবারও যখন মন্ত্রিসভা থেকে অধিকাংশ পুরনো মন্ত্রীকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তখনও ইয়াফেস ওসমান দায়িত্ব পালন করছেন। এই তিন মেয়াদে ইয়াফেস ওসমান কোন টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে আসেননি। কোন টকশোতে আসেননি। তাকে শুধু দেখা যায় বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি বিষয়ক যে সম্মেলনগুলো হয় তাতে। মন্ত্রণালয়ের যে আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠানগুলো হয় তাতে বক্তব্য দেন। গণমাধ্যমে তাঁর উপস্থিতি একেবারে নেই বলেলেই চলে। তবে মন্ত্রণালয়ে তিনি নিয়মিত উপস্থিত হন। ৯ থেকে ৫ টা অফিস করেন। মন্ত্রণালয়ে তাঁর কোন বদনাম নেই। তিনি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়কে একটি দুর্নীতিমুক্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন বলে জানা গেছে।
রাজনীতি মানেই যখন কথার যুদ্ধ। রাজনীতি মানেই যখন তর্কযুদ্ধ। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য বাকবিতন্ডা করাই যখন রাজনীতির প্রধান কাজ হিসেবে আমাদের সামনে প্রতিস্থাপিত হচ্ছে। সেই সময়ে এই ক’জন ব্যক্তি বিরল দৃষ্টান্ত, কথা না বলেও শুধু কাজ দিয়েই দেশের এবং রাজনীতির মঙ্গল করা যায়।
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া তারেক জিয়া বিএনপি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল
মন্তব্য করুন
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন শাজাহান খান
মন্তব্য করুন
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাদের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা বিএনপি পরামর্শ দিয়ে আসছেন এমন গুঞ্জন দীর্ঘদিনের। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কখনও মুখ খুলেননি বিএনপির কেউই। তবে এবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি জানিয়েছেন বিএনপি থেকে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়াকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে দল ভাবছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে দলের এমন ভাবনার কথা জানান বিএনপির এই নেতা।
উপজেলা নির্বাচন থেকে কঠোর অবস্থান থেকে ইউটার্ন নিলো বিএনপি। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আপাতত যারা উপজেলা নির্বাচন করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে সব কিছু নির্ভর করবে নির্বাচনের ফলাফলের ওপর। যারা পরাজিত হবে তাদের ওপর নেমে আসবে শাস্তির খড়গ। আর যারা বিজয়ী হবেন তাদের বিষয়টি উপেক্ষা করা হবে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে ফেঁসে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান। তবে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেও নীতিমালার কারণে বেঁচে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন এবং যারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।