নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:০০ পিএম, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯
যতই দিন যাচ্ছে তারেক রহমানের উপর বিরক্তবোধ ততই বাড়ছে বিএনপির বিভিন্নস্তরের নেতা-কর্মীদের। দলকে সুনির্দিষ্ট দিক-নির্দেশনা সঠিকভাবে না দেয়ার কারণেই নেতা-কর্মীদের এ বিরক্তবোধ। একাধিক সূত্র জানায়, বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া কারান্তরীণ হওয়ার পরে বিএনপির দুঃসময়ে তারেক রহমান দলের নেতা-কর্মীদের কোনভাবেই সংগঠিত কিংবা নেতৃত্বে আশ্বস্ত করতে পারেননি। আর এতে করে যতই দিন যাচ্ছে নেতা-কর্মীদের কাছ থেকে তারেক মোহ কাটছে। ইতিমধ্যে তারেকের উপর চরম বিরক্তি প্রকাশ করে দল ছাড়ার কিংবা রাজনীতি থেকে দূরে থাকারও ঘোষণা দিয়েছেন বেশ ক’জন সিনিয়র নেতা। এদের মধ্যে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান অন্যতম। একাদশ জাতীয় সংসদ নিবাচনে তারেকের পরিকল্পনা চরমভাবে ভণ্ডুল হওয়াতে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরাও হতাশ এবং বিমর্ষ। বিএনপির অধিকাংশ নেতা-কর্মী মনে করেন তারেক রহমানকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে হবে। প্রবাসে বসে কোনভাবেই বিএনপির রাজনীতি টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়। তাই দ্রুত দেশে ফিরে মৃতপ্রায় দলটিকে পুনরুজ্জীবিত করার অনুরোধ জানিয়েছেন তৃণমুলের নেতা-কর্মীরা।
বেগম খালেদা জিয়া কারান্তরীণ হওয়ার পর বিএনপির নেতৃত্বে চরম অচলাবস্থা দেখা দেয়। দলের সিনিয়র কোন নেতাকেও মানছে না তৃণমূল। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নিজ থেকে নেতৃত্ব দেয়ার চেষ্টা করলেও দলের অতি উৎসাহী বিরোধিতাকারীদের কারণে মাঠে দাঁড়াতে পারছেন না তিনি। বর্তমান বাস্তবতায় যদি সহসাই লন্ডনে পলাতক তারেক দেশে না ফেরেন তাহলে জিয়াউর রহমানের নিজ হাতে গড়া দেশের অন্যতম এ বৃহৎ রাজনৈতিক দলটি ধীরে ধীরে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
এদিকে, বিএনপির রাজনীতির মূল নেতৃত্বে তারেক রহমানের ইমেজ সংকট থাকার বিষয়টিও ভাবিয়ে তুলছে দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের। প্রায় একযুগেরও বেশি সময় ধরে স্বেচ্ছা নির্বাসনে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন তারেক জিয়া। বর্তমানে সেখানে তিনি যুক্তরাজ্য সরকারের রাজনৈতিক আশ্রয়ে রয়েছেন। বর্তমানে দেশে অর্থ পাচারসহ সর্বমোট ১৩টি দুর্নীতির মামলা রয়েছে তারেক জিয়ার নামে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নিবাচনের আগে একাধিক দলীয় প্রার্থী যুক্তরাজ্যে হাজিরা দিয়ে মনোনয়ন বাগিয়ে নেয়ার জন্য তারেক রহমানকে বিপুল অর্থ উৎকোচ দেন যা নিয়ে পরবর্তী সময়ে দলের অভ্যন্তরে তোলপাড় হয়। নির্বাচনে ভূল পরিকল্পনায় বিএনপি চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়ে। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, আগে যেখানে তারেকের সান্নিধ্য পাওয়ার জন্য হন্যে হয়ে যারা যুক্তরাজ্যে ছুটতেন বতমানে সেখানে ভাটার টান এসেছে। তারেক রহমানের এবং তাঁর চারপশের সুবিধাভোগীদের বিতর্কিত কমকাণ্ডের কারণেই এখন অনেকের মধ্য থেকে ‘তারেক ক্রেজ’ কাটছে বলে জানা গেছে। প্রবাসের যারা এক সময় তারেক রহমানকে নিয়ে গর্ব করতেন কিংবা ফেসবুকে বিভিন্ন পোস্ট দিতেন তারাও হঠাৎ করে নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছেন।
তবে অধিকাংশরই মত, প্রবাসে পড়ে থেকে বড় বড় কথা বলে বিএনপিকে বাঁচানো যাবে না। তারেক রহমানকে দেশে ফিরেই বিএনপির হাল ধরতে হবে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে মালয়েশিয়া বিএনপির এক নেতা বাংলা ইনসাইডারকে জানান, যে নেতা মনোনয়ন দেন টাকার বিনিময়ে তার কাছ থেকে জনগণ কী রাজনীতি আশা করেন? জিয়ার আদর্শের রাজনীতি তারেক রহমানের মধ্যে ছিটেফোটা নেই বলেও তিনি মন্তব্য করেন। একই অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন অনেকেই।
বাংলা ইনসাইডার/এমআর
মন্তব্য করুন
ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি সভাপতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বেগম খালেদা জিয়া শামীম ইস্কান্দার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার জন্য নতুন করে তৎপরতা শুরু করেছে তার পরিবারের সদস্যরা। বিশেষ করে বেগম জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার ইতোমধ্যে বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার জন্য সরকারের বিভিন্ন মহলের সঙ্গে নতুন করে যোগাযোগ শুরু করেছেন। বেগম জিয়া আর ভবিষ্যতে রাজনীতি করবেন না, রাজনীতি থেকে অবসর নেবেন এ রকম একটি বক্তব্য সামনে নিয়ে আসছেন শামীম ইস্কান্দার।
আওয়ামী লীগের তৃণমূল ক্রমশ ভেঙ্গে পড়ছে। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের তৃণমূল সংগঠিত করা এবং বিভেদ-বিভক্তির দূর করার জন্য যে ডাক দেওয়া হয়েছিল তারপর একটু পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছিল বলে বটে। কিন্তু এখন আবার উপজেলা নির্বাচনের প্রাক্কালে সারাদেশে তৃণমূল বিভক্ত হয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগের তৃণমূলকে সামাল দেওয়াই এখন কঠিন হয়ে পড়ছে। একদিকে নির্বাচন কেন্দ্রীক বিরোধ অন্যদিকে দলের চেইন অব কমান্ড ভেঙ্গে যাওয়া আর কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তদারকির অভাবে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ এখন সবচেয়ে সঙ্কটের মুখে পড়েছেন বলেই মনে করছেন আওয়ামী লীগের নেতারাই।