নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯
আগামী ১১ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রলীগের প্রার্থী চূড়ান্ত করবেন প্রধানমন্ত্রী নিজেই। আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র এ কথা নিশ্চিত করেছে। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর একটি নিজস্ব টিম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জরিপের কাজ করছে। এই জরিপের কাজ আগামী দু’একদিনের মধ্যেই শেষ হবে। প্রধানমন্ত্রী দেশের বাইরে যাচ্ছেন। আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি তিনি দেশে ফিরবেন। ২১ ফেব্রুয়ারির পরপরই তিনি মনোনয়ন চূড়ান্ত করবেন বলে জানা গেছে।
একাধিক সূত্র বলছে, আওয়ামী লীগ মেধাবী, শিক্ষিত এবং জনপ্রিয় ছাত্রনেতাদের বিভিন্ন পদে মনোনয়নের জন্য বেছে নেবে। কারা কারা মনোনয়ন পেতে পারেন এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, জাহাঙ্গীর কবীর নানক, লিয়াকত শিকদারের মতো সাবেক ছাত্রনেতাদের তালিকা তৈরির নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। তারা ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীর সঙ্গে কথাবার্তা বলে একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রধানমন্ত্রীর কাছে দিয়েছেন। এই তালিকার ভিত্তিতে মাঠ জরিপের কাজ শুরু হয়েছে। সংক্ষিপ্ত তালিকায় জায়গা পাওয়াদের মধ্যে কারা সাধারণ ছাত্রদের কাছে বেশি জনপ্রিয় সেটা বের আনার চেষ্টা করা হচ্ছে জরিপে।
প্রধানমন্ত্রী মূলত ৫টি বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে মনোনয়ন চূড়ান্ত করবেন বলে আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো বলছে।
১. ছাত্রলীগে অবদান ও উত্তরাধিকার: ছাত্রলীগের নেতা বা কর্মী হিসেবে একজন প্রার্থীর অবদান, দীর্ঘদিন ছাত্রলীগ করার অভিজ্ঞতা, ছাত্র রাজনীতিতে আসার ক্ষেত্রে তার পারিবারিক উত্তরাধিকার বিবেচনা করা হবে।
২. শিক্ষাগত অর্জন: মেধাবী শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে। ছাত্র হিসেবে তার ট্রাক রেকর্ড বা অতীতে বিভিন্ন ধাপে শিক্ষাগত সাফল্য পর্যালোচনা করা হবে।
৩. ক্লিন ইমেজ: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে কতটুকু ক্লিন ইমেজের অধিকারী। কোন বিতর্ক আছে কিনা সেটা নেতিবাচক হিসেবে দেখা হবে। ক্লিন ইমেজের ছাত্রনেতাদের প্রাধান্য দেয়া হবে।
৪. এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাক্টিভিটি: পড়াশোনার বাইরে তারা এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাক্টিভিটিতে কতটুকু সক্রিয় সেটা দেখা হবে। শিল্প-সাহিত্য, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড, খেলাধুলা প্রভৃতি ক্ষেত্রে যুক্ত থাকলে তাদেরকে প্রাধান্য দেয়া হবে।
৫. সাধারণ শিক্ষার্থীর সঙ্গে সম্পর্ক: শুধু রাজনৈতিক নেতাকর্মী নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীর সঙ্গে কেমন সম্পর্ক, সেটাও প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে বিবেচনা করা হবে।
আওয়ামী লীগের একজন দায়িত্বশীল নেতা বলেছেন, ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রলীগের মনোনয়ন চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি রূপরেখা তৈরি করছেন। সেই রূপরেখার ভিত্তিতেই কেন্দ্রীয় সংসদ ও হল সংসদের প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে।
জানা গেছে যে, প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন এবং ডাকসু নির্বাচনের কৌশল ও নির্দেশনা দেবেন। প্রধানমন্ত্রী নিজে ছাত্রলীগের প্রার্থীদের মনোনয়নের দায়িত্ব নেয়ায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা খুশি। তারা মনে করছে, এর মাধ্যমে সত্যিকারের নেতৃত্ব বেরিয়ে আসবে। ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাদের আদর্শিক সভাপতি হলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অন্য কারোর হাতে মনোনয়ন দেয়ার ভার দেয়ার চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর হাতে থাকাই শ্রেয় বলে তারা মনে করেন।
গত সপ্তাহে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতারা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। তারা প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছিলেন, ছাত্রলীগের মনোয়নের বিষয়টি যেন তিনি তদারকি করেন। তাদের অনুরোধের প্রেক্ষিতেই প্রধানমন্ত্রী তার কর্মব্যস্ততার মধ্যেই এই মনোনয়ন চূড়ান্তের কাজটি শুরু করেছেন।
উল্লেখ্য, আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি মনোনয়ন জমা দেয়ার শেষ তারিখ। আগামী ১১ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদগুলোর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলা ইনসাইডার/এমআর
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।
আওয়ামী লীগ দলগতভাবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট এবং কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলায় মন্ত্রী, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাই ব্রাদার বা স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না। যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।