ইনসাইড পলিটিক্স

এমপিদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ১০ নিষেধাজ্ঞা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭:৫৯ পিএম, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯


Thumbnail

শুধু মন্ত্রীরাই নন, এমপিরাও প্রধানমন্ত্রীর নজরদারির আওতায় এসেছেন। আওয়ামী লীগের টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকারের যেন কোন ভাবমূর্তি নষ্ট না হয়, সাধারণ মানুষের কাছে যেন সরকার এবং দল বিতর্কিত না হয়, এ জন্য শুরু থেকেই সতর্ক প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের পর প্রথম বৈঠকে তিনি বলেছিলেন, মন্ত্রীরা কঠোর নজরদারির মধ্যে আছে। তবে শুধু মন্ত্রীরা নন, এবার কঠোর নজরদারির মধ্যে আনা হচ্ছে এমপিদেরও।

গত ১০ বছরে সরকার পরিচালনার অভিজ্ঞতা থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মনে করছেন, শুধু মন্ত্রীদের স্বচ্ছতা, সততা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করলেই হবে না। এমপিদেরও স্বচ্ছতা, সততা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিপুল সংখ্যক এমপি হয়েছেন। একজন এমপির কারণে পুরো দলের ভাবমূর্তির বদনাম হতে পারে বলে প্রধানমন্ত্রী তার ঘনিষ্ঠদের বলেছেন। এজন্য এমপিরা এবার অন্যান্য সময়ের চেয়ে বেশি কঠোর নজরদারির মধ্যে থাকবেন।

আওয়ামী লীগের নির্বাচিত এমপিদের জন্য ১০টি বিষয়ে সুস্পষ্ট কঠোরতা ও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হচ্ছে।

(১) টেন্ডারে হস্তক্ষেপ: স্থানীয় পর্যায়ে টেন্ডার বা সরকারী কাজে অযাচিতভাবে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না এমপিরা। প্রায়ই ক্ষেত্রে দেখা যায়, কাকে টেন্ডার দেয়া হবে, কাকে দেয়া হবে না সেগুলোতে হস্তক্ষেপ করেন এমপিরা। এর ফলে প্রকৃত ব্যবসায়ীরা টেন্ডার পান না এবং উন্নয়ন কাজ ব্যাহত হয়।

(২) সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর অর্থ: আওয়ামী লীগের আমলে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আকার বড় হয়েছে। এর পরিধিও বৃদ্ধি পেয়েছে। বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা, ‍মুক্তিযোদ্ধা ভাতাসহ বিভিন্ন রকম সামাজিক সহায়তা বা অতি দরিদ্র মানুষকে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে আনা হচ্ছে। বিগত ১০ বছরে আওয়ামী লীগের সরকার পরিচালনার অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর অর্থ ও সহায়তা অনেক সময় এমপিদের হস্তক্ষেপের কারণে সঠিক লোকের কাছে যায় না। প্রকৃত দরিদ্র, বিধবা বা বয়স্ককে না দিয়ে টাকা এমপিদের পছন্দের লোকদের দেয়া হয়। এর ফলে এলাকায় আওয়ামী লীগের বদনাম হয় এবং দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি এবার কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। এমপিদের ইতিমধ্যে জানিয়ে দেয়া হয়েছে, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর অর্থ যেন প্রকৃত উপকারভোগীরা পায়। পক্ষপাতহীনভাবে বিষয়টি তদারকি নিশ্চিত করতেও বলা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে।

(৩) উন্নয়ন কাজে হস্তক্ষেপ: স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, যোগাযোগ মন্ত্রণালয় বা অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে প্রায় সময়ই অযাচিত হস্তক্ষেপ করেন স্থানীয় এমপিরা। এমপিরা ঢাকা এসে সচিবালয়ে গিয়ে নিজেদের সুবিধামতো উন্নয়ন পরিকল্পনায় ও প্রকল্পে হস্তক্ষেপ করেন। গত বছর দেখা গেছে, একটি রাস্তার মাস্টারপ্ল্যান স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে এসে পরিবর্তন করে নিয়ে গেছেন যেন এমপির বাসার পাশ দিয়ে রাস্তা যায়। উন্নয়নের এমন মাস্টারপ্ল্যানে হরহামেশাই হস্তক্ষেপের ঘটনা ঘটে। একনেকের সভায় এ বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, গুটিকয়েক নেতার সুবিধার জন্য কোন উন্নয়ন পরিকল্পনার মাস্টারপ্ল্যানে পরিবর্তন করা হবে না।

(৪) নিয়োগ বাণিজ্য: গত ১০ বছরে এমপিদের বিরুদ্ধে একটি বড় অভিযোগ ছিল নিয়োগ বাণিজ্য। নতুন সরকারের আমলে প্রথমেই প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন। নিয়োগের ব্যাপারে এমপিদের পক্ষ থেকে কোন ডিও লেটার দেয়া যাবে না। যদি কেউ দেয় তাহলে সেই প্রার্থীকেই অযোগ্য বিবেচনা করা হবে।

(৫) থানা পুলিশে জামিন ও মামলায় তদবির: মন্ত্রী-এমপিরা তাদের নির্বাচনী এলাকায় থানার উপর খবরদারি করেন এবং বিভিন্ন মামলার জামিনে হস্তক্ষেপ করেন। গত ১০ বছরে দেখা গেছে, এমপির পক্ষের লোক না হওয়ায় অনেক ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীরা থানায় মামলা করতে গিয়ে নানা রকম হয়রানির শিকার হন। আবার অনেক এমপি হস্তক্ষেপ করে প্রকৃত আসামীর জামিন পেতে সহায়তা করেছেন এমন অভিযোগও প্রধানমন্ত্রীর কানে এসেছে। এবার এ ব্যাপারে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

(৬) অন্য দল থেকে লোক ভেড়ানো: গত ১০ বছরে বিশেষ করে ২০১৪ সালের পর থেকে অন্য দল থেকে বিশেষ করে জামাত-বিএনপি থেকে নিজেদের দলের লোক ভেড়ানো এমপিদের জন্য ছিল এক ধরনের রোগ। এবার নির্বাচনের আগেই প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন। সরকার গঠনের পর সংসদীয় প্রথম বৈঠকেই তিনি এ ব্যাপারে এমপিদের উপর নিষেদাজ্ঞা আরোপ করেছেন।

(৭) গ্রুপ তৈরি ও দলীয় কোন্দল: গত ১০ বছরের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, এমপিরা যখনই নির্বাচিত হন, তখনই নিজেদের একটি বলয় তৈরি করার চেষ্টা করেন এবং এর ফলে দলের মধ্যে কোন্দল সৃষ্টি হয়। এবার দলীয় কোন্দল সৃষ্টির বিপক্ষে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের আগেই কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর নজরদারি আরও বেড়েছে বলে জানা গেছে।

(৮) স্থানীয় প্রশাসনে রদবদল: বিগত দুই মেয়াদে দেখা গেছে এমপিরা তাদের পছন্দমতো স্থানীয় প্রশাসন ঢেলে সাজান এবং তারা ঢাকায় এসে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বা পুলিশ সদর দপ্তরে তদবিরও করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, এসপি বা ওসি পদে এমপিরা সবসময় তাদের পছন্দের ব্যক্তিতে বেছে নেন। এবার এটি সম্পূর্ণ রূপে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। স্থানীয় প্রশাসনে কেন্দ্রীয়ভাবে স্বচ্ছতার ভিত্তিতে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া কোন এমপি কাউকে পরিবর্তনের জন্য সুপারিশ করতে পারবেন না।

(৯) ক্ষমতা ও প্রভাব খাটিয়ে ব্যবসায়-বাণিজ্য: অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, অনেকে এমপি হওয়ার পর তাদের ক্ষমতা ও প্রভাব খাটিয়ে নানা রকম ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন ও সেগুলোর প্রসার ঘটান। ব্যবসায় বাণিজ্য করতে অসুবিধা নেই। কিন্তু এমন কিছু করা যাবে না যাতে করে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়। যে কাজের জন্য যোগ্য নয়, সে কাজ যেন কোন এমপি না পান, সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন।

(১০) মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ: মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোন যোগাযোগ করা যাবে না। টানা তৃতীয়মেয়াদে সরকারে এসে প্রধানমন্ত্রী যে মূল লক্ষ্যগুলো স্থির করেছেন তার মধ্যে অন্যতম হলো মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ। যেটা দ্বিতীয় মেয়াদের শেষ প্রান্তেই শুরু হয়েছিল। স্থানীয় কোন এমপি যেন প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মাদক ব্যবসায়ীর সঙ্গে কোন সম্পর্ক বা পৃষ্ঠপোষকতা না করেন সে বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

এই নির্দেশনাগুলো যদি কোন এমপি অমান্য করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো জানিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী টানা তৃতীয় মেয়াদে চাচ্ছেন একটি স্বচ্ছ ও ক্লিন ইমেজের সংসদীয় দল।, যারা দেশের উন্নয়নের লক্ষ্যে নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নের জন্য কাজ করবে। এ ব্যাপারে ন্যূনতম ছাড় দিতে তিনি রাজি নন।  

বাংলা ইনসাইডার/এমআর



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

খালেদা-তারেককে বাদ দেয়ার কথা ভাবছে বিএনপি

প্রকাশ: ১০:১৮ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাদের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা বিএনপি পরামর্শ দিয়ে আসছেন এমন গুঞ্জন দীর্ঘদিনের। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কখনও মুখ খুলেননি বিএনপির কেউই। তবে এবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি জানিয়েছেন বিএনপি থেকে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়াকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে দল ভাবছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে দলের এমন ভাবনার কথা জানান বিএনপির এই নেতা।

সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে বাদ দিয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারি কিনা- সেই বিকল্প চিন্তা আমাদের মধ্যে আছে। 

তিনি আরও বলেন, প্রয়োজনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের পক্ষ থেকে একটি কমিটি বা বডি বাছাই করা হবে যারা তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত দিবে। বিষয়টিকে আরও পরিষ্কার করে তুলে ধারার জন্য আলাল বলেন, এরকম কমিটি বা বডির চিন্তা-ভাবনা আছে। হয়তো ওই দুইজনের (খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান) পক্ষ থেকেই বলা হতে পারে- চূড়ান্ত পর্যায়ে গেলে অপশন এ-বি-সি থাকবে। এই নির্দিষ্ট পাঁচজন বা এই বডি মিলে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত দিয়ে দিবে।

উল্লেখ্য, বিভিন্ন সময় পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকদের সাথে বিএনপির বৈঠকে দলটির ভবিষ্যত পরিকল্পনা কিংবা আন্দোলন-সংগ্রাম নিয়ে কোন কিছু জানতে চাইলে বেশির ভাগ সময় কোন সদুত্তর দিতে পারেন না বিএনপির শীর্ষ নেতারা। এক্ষেত্রে তারা বলেন যে, তারা (বিএনপি) লন্ডনের (তারেক জিয়া) সঙ্গে কথা বলে পরে তাদেরকে (কূটনীতিক) জানাবেন। এ রকম বাস্তবতায় কূটনীতিকরা দলের নেতৃত্ব থেকে বিএনপির এই শীর্ষ দুই নেতাকে বাদ দেয়া যায় কিনা সে ব্যাপারে পরামর্শ দিয়েছে বিভিন্ন সময়। এখন দেখার বিষয় শেষ পর্যন্ত বিএনপিতে কি সিদ্ধান্ত আসে।

খালেদা জিয়া   তারেক জিয়া   বিএনপি   সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

পদ্মশ্রী পদক পাওয়ায় শুভেচ্ছা জানাতে বন্যার বাসায় সস্ত্রীক নানক

প্রকাশ: ০৯:২৮ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘পদ্মশ্রী’ পদকে ভূষিত হওয়ায় দেশের খ্যাতনামা রবীন্দ্র সংগীতশিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে শুভেচ্ছা জানান আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক। সঙ্গে ছিলেন তার সহধর্মিনী অ্যাডভোকেট সৈয়দা আরজুমান বানু নারগিস।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বন্যার মোহাম্মদপুরের বাসায় গিয়ে তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান নানক ও তার স্ত্রী। এ সময় ঢাকা ১৩ আসনের স্থানীয় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ এবং অন্যান্য অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
  
শুভেচ্ছাকালে পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, সংগীত অঙ্গনে বন্যার এই অর্জন বাংলাদেশের অর্জন। তার এই অর্জন আমাদের। সংগীত অঙ্গনে বন্যার এই অর্জন আগামী প্রজন্মের কাছে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। 

উল্লেখ্য, গত সোমবার (২২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় দিল্লিতে ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর হাত থেকে দেশটির চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘পদ্মশ্রী’ পদক গ্রহণ করেন রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা।

রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা   জাহাঙ্গীর কবির নানক  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

তীব্র গরমের জন্য আওয়ামী লীগ দায়ী: মির্জা আব্বাস

প্রকাশ: ০৭:১৮ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

তীব্র গরমের জন্য আওয়ামী লীগ সরকারকে দায়ী করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি বলেছেন, আজকে দেশে ঋতু নেই। এখনকার মানুষজনও বলতে পারে না বাংলাদেশে কয়টি ঋতু। দেশটি পরিকল্পিতভাবে ধীরে ধীরে মরুকরণের দিকে যাচ্ছে। এর জন্য দায়ী সরকার।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীতে সাধারণ মানুষের মাঝে বোতলজাত সুপেয় খাবার পানি, স্যালাইন ও হিটস্ট্রোক থেকে বাঁচতে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন বিএনপির এ নেতা। জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন (জেডআরএফ) এ কর্মসূচির আয়োজন করে।

মির্জা আব্বাস বলেন, ১১শ’র বেশি নদী ছিল বাংলাদেশে। কিন্তু তিনশ’র মতো নদী নিখোঁজ হয়ে গেছে আওয়ামী ভূমি দস্যুদের কারণে। এই হলো দেশের অবস্থা। অন্যদিকে ঢাকা শহরকে ইট-কাঠ-পাথরে ভরে দেওয়া হয়েছে। গাছ দেখা যায় না। ঢাকার চারপাশে জলাশয়গুলো ভরাট হয়ে গেছে। সরকারের মদদপুষ্ট ভূমি দস্যুরা সেসব ভরাট ও দখল করেছে। ভূমি দস্যুদের সঙ্গে সরকারের তলে তলে যোগাযোগ আছে। রাজধানীকে কৃত্রিম মরুভূমি বানানো হয়েছে।

তিনি বলেন, দেশে তাপমাত্রা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিদিনই হিটস্ট্রোকে কোথাও না কোথাও মানুষ মারা যাচ্ছে। ঢাকা শহরও এর ব্যতিক্রম নয়। এ অবস্থায়ও সাধারণ মানুষকে সহায়তার জন্য জেডআরএফ পানি ও স্যালাইন বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে। কারণ, আমরা রাজনীতি করি সমাজের কল্যাণের জন্য।

তীব্র গরম   মির্জা আব্বাস   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপির ইউটার্ন

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

উপজেলা নির্বাচন থেকে কঠোর অবস্থান থেকে ইউটার্ন নিলো বিএনপি। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আপাতত যারা উপজেলা নির্বাচন করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে সব কিছু নির্ভর করবে নির্বাচনের ফলাফলের ওপর। যারা পরাজিত হবে তাদের ওপর নেমে আসবে শাস্তির খড়গ। আর যারা বিজয়ী হবেন তাদের বিষয়টি উপেক্ষা করা হবে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন যে, উপজেলা নির্বাচনটি দলীয় ভিত্তিতে হচ্ছে না। আওয়ামী লীগ দলীয় প্রতীক দিচ্ছেন না। কিন্তু আমাদের অবস্থান হলো খুব সুস্পষ্ট। আমরা এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাব না। এই নির্বাচন কমিশনের অধীনেও কোনো নির্বাচনে যাব না। তার মতে, এই কারণেই বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। 

তবে বিএনপির সিদ্ধান্তকে অগ্রাহ্য করে দুই শতাধিক বিএনপির প্রার্থী এখন নির্বাচনের মাঠে। প্রথম দফার নির্বাচনে বিএনপির ৬৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। তাদেরকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে বলা হলেও শেষ পর্যন্ত ৪ জন ছাড়া কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। এদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা অত্যন্ত সংহত বলেও জানা গেছে। আর এ কারণেই বিএনপি ইউটার্ন নিয়েছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত ছিলো যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হবেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কিন্তু মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনের পরেও বিএনপির পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কারও বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। বিএনপি এক্ষেত্রে অপেক্ষার নীতি গ্রহণ করেছে বলেই দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানিয়েছে।

তবে বিএনপির একজন সিনিয়র নেতা বলছেন যে, বিএনপি পুরো পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং উপযুক্ত সময় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ব্যাপারে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না বলেও ওই নেতা অভিমত ত্যক্ত করেছেন। 

বিএনপির আশা ছিলো স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্তের পর দ্বিতীয় এবং তৃতীয় দফায় হয়তো বিএনপির নেতারা নির্বাচনে প্রার্থী হবেন না। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে তার বিপরীত। প্রথম দফার চেয়ে দ্বিতীয় দফায় বিএনপির প্রার্থীর সংখ্যা বেশি এবং তৃতীয় দফাতেও আনুপাতিক হারে প্রার্থীর সংখ্যা বেড়েছে। এর কারণ হিসেবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, যে সমস্ত এলাকায় বিএনপির জনপ্রিয়তা বেশি এবং যে সমস্ত এলাকায় নেতারা যত বেশি জনবান্ধব তারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন। কারণ তারা মনে করছেন, সংগঠন রক্ষা করা এবং নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য এই নির্বাচনে অংশগ্রহণের কোনো বিকল্প নেই। আর এ কারণেই তারা দলীয় সিদ্ধান্তকে এখন তোয়াক্কা করছে না। 

অন্যদিকে বিএনপির শীর্ষ নেতারা অনুধাবন করছেন যে, উপজেলা নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্তটা অত্যন্ত কঠোর হয়েছে, আত্মঘাতী হয়েছে এবং এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা বিএনপির জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জিং হবে। বিশেষ করে কোন কোন উপজেলায় যদি বহিষ্কার করা হয় তাহলে ওই এলাকাটি বিএনপি শূন্য হয়ে যাবে। এ কারণেই বিএনপি এখন তাদের সিদ্ধান্তকে পুনঃমূল্যায়ন করছে। কেউ কেউ বলছেন যে, বিএনপি ইউটার্ন করেছে। তবে শেষ পর্যন্ত বিএনপির সব সিদ্ধান্ত আসে লন্ডন থেকে। বিএনপি নির্বাচনের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কি নেবে তা জানার এখতিয়ার বিএনপির ঢাকার কোন নেতার নেই। লন্ডন থেকে কি বাণী আসে তার অপেক্ষায় আছে বিএনপি।

বিএনপি   উপজেলা নির্বাচন   বহিষ্কার  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বেঁচে যাচ্ছেন রাজ্জাক, ফেঁসে যাচ্ছেন শাজাহান খান

প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে ফেঁসে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান। তবে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেও নীতিমালার কারণে বেঁচে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন এবং যারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উপজেলা নির্বাচনে কোন্দল বিভক্তি এবং আধিপত্য ঠেকাতে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুনির্দিষ্ট কিছু নির্দেশনা দিয়েছিলেন। এই নির্দেশনার মধ্যে সবচেয়ে বড় নির্দেশনা ছিল মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না। এ নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের কয়েক দফা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, নেতাকর্মীদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা একমাত্র প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ছাড়া কেউই মানেননি। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিষয়টি বরদাস্ত করা হবে না এবং আগামী ৩০ এপ্রিল দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।

আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে তার কঠোর মনোভাবের কথা ইতোমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন। এরকম একটি পরিস্থিতিতে আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের যারা সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। আর এরকম ব্যবস্থা যদি শেষ পর্যন্ত নেওয়া হয়, তাহলে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান বড় ধরনের ঝুঁকিতে পড়তে যাচ্ছেন। গতকাল তাকে এ ব্যাপারে ইঙ্গিতও দিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে শাজাহান খানকে ভর্ৎসনা করেছেন বলেও গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা গেছে।

অন্যদিকে ড. রাজ্জাক তার খালাতো ভাইকে প্রার্থী করলেও এই যাত্রায় তিনি বেঁচে যাচ্ছেন। কারণ আওয়ামী লীগ আত্মীয়স্বজনদের ব্যাপারে যে নীতিমালা গ্রহণ করেছে তাতে বলা হচ্ছে যে, যদি কোন স্বজন আগে উপজেলা চেয়ারম্যান থাকেন তবে তার প্রার্থী হতে কোনও অসুবিধা নেই। আগে উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে ছিলেন ড. রাজ্জাকের খালাতো ভাই। কাজেই এবার তিনি প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতি নীতির আওতায় পড়বেন না। আর এ কারণেই তার বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না বলেও জানা গেছে।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেছেন, যে সমস্ত প্রার্থীরা আগে থেকেই উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন তারা এবার প্রার্থী হবেন। এমনকি তারা কোন নেতার স্বজন হলেও প্রার্থী হতে অসুবিধা নেই। এই বিবেচনায় ড. রাজ্জাক এ যাত্রায় বেঁচে যাচ্ছেন।

তবে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতারা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী এই বিষয়গুলোকে ইতিবাচক ভাবে নেননি। হয়তো তিনি সরাসরি শাস্তির হাত থেকে বাঁচবেন, তবে তার রাজনৈতিক ভবিষ্যত এই সিদ্ধান্তে কতটা উজ্জ্বল হবে সেটি সময়ই বলে দেবে।

ড. আব্দুর রাজ্জাক   আওয়ামী লীগ   উপজেলা নির্বাচন   শাজাহান খান  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন