নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯
পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়াকে লন্ডনে চার ঘন্টাব্যাপি জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। যুক্তরাজ্যে পররাষ্ট্র দপ্তরের বিভিন্ন সূত্র বলছে যে, তারেক জিয়াকে বাংলাদেশে ফেরানোর প্রক্রিয়া হিসেবেই এই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার দণ্ডিত তারেক জিয়াকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য আবেদন করেছে এবং এ নিয়ে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য পররাষ্ট্র দপ্তরের কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র দপ্তর আশা করছে যে, তারেক জিয়াকে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া অনেকদুর অগ্রগতি হয়েছে। যেকোনো সময় তারেক জিয়াকে দেশে ফিরিয়ে দেয়ার ব্যাপারে হয়তো ইতিবাচক সম্মতি পাওয়া যাবে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল তারেক জিয়াকে হোম ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তারা চারঘন্টাব্যাপী জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এই জিজ্ঞাসাবাদে মূলত চারটি বিষয় উঠে এসেছে।
প্রথমত, লন্ডনে তারেক জিয়া কীভাবে চলছেন। টাকার উৎস, কোথা থেকে পেয়েছেন? ২০০৭ সালে তারেক জিয়া যুক্তরাজ্য সফরে যান এবং ২০০৭ সাল থেকে এখন পর্যন্ত তিনি লন্ডনে অবস্থান করছেন। এই লন্ডনে অবস্থানকালে তাঁর জ্ঞাত আয়ের কোনো উৎস নেই। কিন্তু তিনি যেকোনো উচ্চবিত্তের চেয়েও বিলাসী জীবনযাপন করছেন। ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দপ্তর জানতে চেয়েছে যে, একজন রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী কীভাবে এত বিলাসবহুল জীবনযাপন করেন এবং তাঁর টাকার উৎস জানতে চান। জবাবে তারেক কি বলেছেন সে ব্যাপারে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে লন্ডনে যারা থাকেন তাঁরা জানেন যে তারেকের বৈধ কোনো টাকার উৎস নেই।
দ্বিতীয়ত, যে বিষয়টি তারেকের কাছে জানতে চেয়েছে তা হলো, তারেক কেনো রাজনৈতিক তৎপরতায় জড়িয়ে পড়েছে। গত ছয় সাতমাস তারেক জিয়া বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রত্যক্ষভাবে জড়িয়ে পড়েছে। তিনি স্কাইপের মাধ্যমে যোগাযোগ করছেন। এমনকি মনোনয়ন বোর্ডের সভায়ও তিনি স্কাইপের মাধ্যমে সভাপতিত্ব করেছেন। নির্বাচনের পরও তিনি বিভিন্ন নেতার সঙ্গে টেলিফোনে এবং স্কাইপে কথা বলছেন। মূলত বেগম খালেদা জিয়া গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে তারেক জিয়ার নেতৃত্বেই বিএনপি চলছে। একজন রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী কীভাবে অন্যদেশের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ে, অন্যদেশের রাজনৈতিক তৎপরতায় ভূমিকা রাখে সেটা নিয়ে ব্রিটিশ হোম ডিপার্টমেন্ট প্রশ্ন তুলেছে।
তৃতীয়ত, বাংলাদেশ যে তারেককে ফিরিয়ে আনার জন্য আবেদন করেছে, সে আবেদনে সুস্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে যে, জঙ্গি সংগঠনগুলোর সঙ্গে তারেক জিয়ার সম্পর্ক রয়েছে। এ ব্যাপারে কিছু তথ্য প্রমাণ বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরে দেওয়া হয়েছে। সে ব্যাপারেও হোম ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তারা তারেককে জিজ্ঞাসা করেছে যে, জঙ্গি সংগঠনগুলোর সঙ্গে তাঁর কি ধরণের সম্পর্ক এবং এদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের গভীরতা কতটকু?
চতুর্থত, চতুর্থ যে ব্যাপারটি হোম ডিপার্টমেন্ট জানতে চেয়েছে, পাকিস্তান দূতাবাসের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক কি? এ ব্যাপারে যুক্তরাজ্য হোম ডিপার্টমেন্টের কাছে একাধিক তথ্য আছে যে, লন্ডনে অবস্থানরত পাকিস্তান দূতাবাসের সঙ্গে তারেক জিয়ার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাঁর নিয়মিত যোগাযোগ আছে এবং একাধিক বৈঠকের তথ্য তাঁদের কাছে উপস্থিত রয়েছে। বাংলাদেশের একজন নাগরিক যিনি রাজনৈতিক আশ্রয়ে লন্ডনে আছেন তিনি পাকিস্তান দূতাবাসের সঙ্গে কী বিষয়ে এত গভীর সম্পর্ক করেন সে ব্যাপারে হোম ডিপার্টমেন্ট জানতে চেয়েছে।
একাধিক সূত্র বলছে যে, তারেক জিয়াকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসার জন্য এটা হলো দ্বিতীয় ধাপ। এই জিজ্ঞাসাবাদের পর যদি তারেক জিয়ার বক্তব্যগুলো ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তাদের কাছে সন্তোষজনক না হয় তাহলে তাঁকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসার আনুষ্ঠানিক তৎপরতা শুরু হবে বলে জানা গেছে।
বাংলা ইনসাইডার/এসআর
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া তারেক জিয়া বিএনপি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল
মন্তব্য করুন
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন শাজাহান খান
মন্তব্য করুন
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাদের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা বিএনপি পরামর্শ দিয়ে আসছেন এমন গুঞ্জন দীর্ঘদিনের। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কখনও মুখ খুলেননি বিএনপির কেউই। তবে এবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি জানিয়েছেন বিএনপি থেকে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়াকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে দল ভাবছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে দলের এমন ভাবনার কথা জানান বিএনপির এই নেতা।
উপজেলা নির্বাচন থেকে কঠোর অবস্থান থেকে ইউটার্ন নিলো বিএনপি। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আপাতত যারা উপজেলা নির্বাচন করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে সব কিছু নির্ভর করবে নির্বাচনের ফলাফলের ওপর। যারা পরাজিত হবে তাদের ওপর নেমে আসবে শাস্তির খড়গ। আর যারা বিজয়ী হবেন তাদের বিষয়টি উপেক্ষা করা হবে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে ফেঁসে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান। তবে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেও নীতিমালার কারণে বেঁচে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন এবং যারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।