নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:০০ পিএম, ১৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯
আওয়ামী লীগ টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর একটি দ্বিমুখী চাপে পড়েছে যুদ্ধাপরাধীদের সংগঠন জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ। প্রথমত; জাতীয় সংসদে জামাতকে নিষিদ্ধ করার বিষয়টি এসেছে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘জামাতকে নিষিদ্ধ করবার জন্য কোর্টে ইতোমধ্যে একটা মামলা রয়ে গেছে। সেটা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সেখানে বোধহয় আমরা কোনো কিছু করতে পারি না।’ এর প্রেক্ষিতে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল বিষয়ে করা আপিলের শুনানির জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
দ্বিতীয়ত; জামাতের মিত্র দল বিএনপি থেকে তাদের আলাদা করার জন্য একটি আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, যুক্তরাজ্য বারবার বিএনপির উপর রীতিমতো চাপ সৃষ্টি করছে যেন জামাতকে বিএনপি থেকে আলাদা করা হয়। এর প্রেক্ষিতে বিএনপির মধ্যেও একটি পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। জামাতকে তারা একসময় সম্পদ মনে করলেও এখন অনেকটা দায় হয়ে দেখা দিয়েছে।
এদিকে জামাতের নিবন্ধন বাতিল হওয়ায়, সাংগঠনিক ক্ষমতা বাড়ানো বা নিজস্ব প্রতীক নিয়ে নির্বাচনের অধিকার হারিয়েছে। অনিবন্ধিত দল হিসেবে জামাত অনেকটা নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দলেরই মতো। এমন পরিস্থিতিতে সংগঠনটি যদি নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়ে যায়, তাহলে তাদের বিশাল কর্মী ও সম্পদ নিয়ে ঝামেলায় পড়বে। সেজন্য ‘নতুন বোতলে পুরনো মদ’ ঢালার কৌশল নিয়েছে জামাত। তারা জামাতকে বিলুপ্ত ঘোষণা করে নতুন নামে, নতুন মোড়কে আত্মপ্রকাশের চেষ্টা করছে। সেখানে তাদের সকল সম্পদ, দায়, দেনা, কর্মীবাহিনী বহাল রাখবে। বেশ কিছু কারণে তারা নতুন মোড়কে আবির্ভূত হতে চায়। যদি তাদের নিষিদ্ধ করা হয় তাহলে, তাদের বিপুল সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হয়ে যাবে। সেগুলো তারা রক্ষা করতে চায়। জামাতকে নিয়ে দেশ ও আন্তর্জাতিক মহলে নানা নেতিবাচক মন্তব্য রয়েছে। সেগুলো থেকে তারা মুক্তি পেতে চায়। জামাতের পূর্বপুরুষদের যুদ্ধাপরাধসহ নানারকম অপকর্মের কলঙ্ক থেকে নিজেদের মুক্ত রাখতে চায়। জামাত কর্মীরা চাকরিসহ বিভিন্ন জায়গায় সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। তাদের সুরক্ষা করতে চায় সংগঠনটি। এছাড়া জামাত যুদ্ধাপরাধীদের সংগঠন হওয়ার সাধারণ মানুষের কাছে সবসময় একটি নেতিবাচক অবস্থানে থাকে।
এসব কারণে জামাত নিজেদের নাম বদল করে নতুন করে আসতে চায়। নাম পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সাংগঠনিকভাবে কিছু পরিবর্তন আনা হলেও তাদের নেতৃত্ব ও লক্ষ্য একই থাকবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এরই প্রক্রিয়াস্বরূপ সম্প্রতি জামাতের বৈঠকে সংগঠনটি বিলুপ্ত করে নতুন নামের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। নাম পরিবর্তনকে ত্বরান্বিত করার কৌশল হিসেবেই দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক পদত্যাগ করেছেন এবং সামনে শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে আরও পদত্যাগের ঘোষণা আসতে পারে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এর ধারাবাহিকতায় একসময় সংগঠনটি বিলুপ্তির ঘোষণা আসতে পারে।
অচেনা শত্রু সবসময়ই চেনা শত্রুর চেয়ে বিপজ্জনক হয়। জামাতকে সবাই চিনলেও তারা নতুন নামে আবির্ভূত হলেও পাকিস্তানের মিত্র ও যুদ্ধাপরাধীদের সংগঠনটি আরও বিপজ্জনক হবে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে এবং জামাত সেই কৌশলে এগুচ্ছে বলেই প্রতীয়মান।
বাংলা ইনসাইডার/এমআর
মন্তব্য করুন
বেগম খালেদা জিয়া শামীম ইস্কান্দার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপি ড. মঈন খান
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বিএনপি
মন্তব্য করুন
বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার জন্য নতুন করে তৎপরতা শুরু করেছে তার পরিবারের সদস্যরা। বিশেষ করে বেগম জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার ইতোমধ্যে বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার জন্য সরকারের বিভিন্ন মহলের সঙ্গে নতুন করে যোগাযোগ শুরু করেছেন। বেগম জিয়া আর ভবিষ্যতে রাজনীতি করবেন না, রাজনীতি থেকে অবসর নেবেন এ রকম একটি বক্তব্য সামনে নিয়ে আসছেন শামীম ইস্কান্দার।
আওয়ামী লীগের তৃণমূল ক্রমশ ভেঙ্গে পড়ছে। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের তৃণমূল সংগঠিত করা এবং বিভেদ-বিভক্তির দূর করার জন্য যে ডাক দেওয়া হয়েছিল তারপর একটু পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছিল বলে বটে। কিন্তু এখন আবার উপজেলা নির্বাচনের প্রাক্কালে সারাদেশে তৃণমূল বিভক্ত হয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগের তৃণমূলকে সামাল দেওয়াই এখন কঠিন হয়ে পড়ছে। একদিকে নির্বাচন কেন্দ্রীক বিরোধ অন্যদিকে দলের চেইন অব কমান্ড ভেঙ্গে যাওয়া আর কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তদারকির অভাবে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ এখন সবচেয়ে সঙ্কটের মুখে পড়েছেন বলেই মনে করছেন আওয়ামী লীগের নেতারাই।
অবশেষে জিয়া পরিবার মুক্ত হচ্ছে বিএনপি। বিএনপির রাজনীতিতে একটি বড় ধরনের পরিবর্তনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। তবে ঠিক কবে, কখন, কীভাবে এ পরিবর্তন হবে সে সম্পর্কে কেউ কোন সুনির্দিষ্ট ধারণা দিতে পারেনি। তবে বেগম খালেদা জিয়া বিএনপিতে পরিবর্তনের ব্যাপারে সবুজ সংকেত দিয়েছেন।
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২৪-২৫ নির্বাচনে বিএনপি প্যানেল থেকে নির্বাচিত হলেও দায়িত্বভার না নিতে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন সহ চার আইনজীবীকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। তবে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে এমন ইঙ্গিত দেন বিএনপিপন্থি এ আইনজীবী নেতা।