নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯
৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের পর রাজনীতিবীদদের কদর কমে গেছে। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি কিংবা ১৪ দলের শরিকদের শীর্ষনেতাদের কাজ নেই। একরকম বেকার জীবন কাটাচ্ছেন তারা। নতুন সরকার গঠনের পর নির্বাসনে গেছে রাজনীতি। নতুন সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করেছে। নদী দখলের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে। চলছে ভেজাল বিরোধি অভিযান। সড়কে শৃংখলা ফিরিয়ে আনার জন্যও তৎপর হয়েছে নতুন সরকার। ৭ জানুয়ারি নতুন সরকারের মন্ত্রিসভায় হেভিওয়েট নেতারা নেই। মন্ত্রীরা ব্যস্ত দাপ্তরিক কাজে। হাতে গোনা দু-একজন মন্ত্রী ছাড়া রাজনৈতিক বিষয়ে মন্ত্রীদের তেমন আগ্রহ নেই। দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সেতুমন্ত্রী আর তথ্যমন্ত্রী গণমাধ্যমে কিছুটা রাজনীতিকে জিইয়ে রেখেছেন। সেটাও বিএনপির দু-একজনের কথার উল্টোপিঠের কথাই শুধু। দলের সিনিয়র নেতারা কর্মহীন, অলস, সংসদে যাচ্ছেন, নিজেদের মধ্যে গল্প গুজবেই সময় কাটাচ্ছেন। রাজনৈতিক বিষয়ে তাদের আগ্রহও কমে গেছে।
৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন বাংলাদেশের রাজনীতিকে বিরোধি দলশুন্য করেছে। একরকম জোর করেই মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টিকে বিরোধি দলে বসানো হয়েছে। বিরোধি দলের নেতা অসুস্থ। অন্যরাও ব্যস্ত নানা কাজে। রাজনীতির ছুটি এখন জাতীয় পার্টিতেও। রাজনীতি নিয়ে কোন উত্তাপ, উত্তেজনা নেই জাপায়।
এই নির্বাচনে সবচেয়ে বিপর্যস্ত দল হলো বিএনপি। নির্বাচনের পর অনেকেই আশংকা করেছিল বিএনপি হয়তো প্রতিবাদ করবে, আন্দোলন করবে। কিন্তু নির্বাচনের পর বিএনপির অধিকাংশ নেতাই কোমায় চলে গেছেন। তারা যেন ঘর থেকে বেরুতে লজ্জা পাচ্ছেন। এক মির্জা ফখরুল ইসলাম কিছুদিন কিছুটা চিৎকার চেচামেচি করে ক্লান্ত হয়ে সিঙ্গাপুর হয়ে লন্ডন গিয়েছিলেন। আজই তিনি দেশে ফিরলেন। বিএনপির একমাত্র মুখপাত্র হলেন দলের সিনিয়র যুগ্ন মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। কিন্তু তার বক্তব্য যতটা না রাজনৈতিক তার চেয়েও বেশি বিনোদন। তার কথাবার্তা রাজনীতিতে কোন গুরুত্ব বহন করে না।
জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টের রাজনীতি এখন সামুচা , সিঙ্গারায় বন্দি। ঐক্যফ্রন্টের সর্বশেষ বৈঠকে ১৫ মিনিট ধরে নেতারা সিঙ্গারায় স্বাদ কিভাবে এবং কেন কমে গেছে তা নিয়ে কথা বলেছেন। একে অন্যের স্বাস্থ্য নিয়ে কথাবার্তা বলেছেন। ঐক্যফ্রন্টের অধিকাংশ নেতাই পার্ট টাইম পলিটিশিয়ান। ড. কামাল হোসেন, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী কোর্টপাড়ায় থাকেন বেশিরভাগ সময়। নাগরিক ঐক্যের মান্না নিরুদ্দেশ। ঐক্যফ্রন্ট এখন একটা ক্লাবের মতো হয়েছে। নেতারা মাঝে মধ্যে আসেন, চা-নাস্তা খেয়ে চলে যান। বুড়ো বয়সের বিনোদন যাকে বলে।
জামাত এখন ব্যস্ত, আত্মশুদ্ধির পথ খুঁজতে। সেখানেও রাজনীতি বলতে কোন পদার্থ নেই। ১৪ দলের শরিকদের সময় কাটে সাক্ষাৎকার দিয়ে আর শুয়ে বসে।
একজন নেতা বলেছিলেন,‘ রাজনীতি এত নি:সঙ্গতায় কখন পরেছে কেউ মনেই করতে পারে না।’ রাজনীতি বিমুক্ত এই পরিবেশ কি গণতন্ত্রের জন্য বিপদ? এই প্রশ্ন অনেকের। রাজনীতি ছাড়া দেশে আমলাতন্ত্রের উথান ঘটে। গণতন্ত্রও সংকটে পরে। এজন্যই গণতন্ত্রে প্রয়োজন একটি শক্তিশালী বিরোধি দল। কিন্তু বাংলাদেশের রাজনীতি এখন নির্বাসনে। এটা গণতন্ত্রকামী মানুষের জন্য কিছুটা উদ্বেগের তো বটেই।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তকে
উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে উপজেলার বিএনপিপন্থি দুই প্রার্থীকে
শোকজ করা হয়েছে।
বিএনপি থেকে শোকজ করা দুই প্রার্থী হলেন, চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী
উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর
রহমান তুষার (কাপ পিরিচ প্রতীক) ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসা (চশমা প্রতীক)।
গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র অফিসিয়াল
প্যাডে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর
নোটিশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৫ এপ্রিল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির
সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিএনপি নেতা হিসেবে
আপনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। নির্বাচনে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার এহেন মনোবৃত্তি সম্পূর্ণরূপে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং দলের
প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা।
দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে জালিয়াতির নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য
আপনার বিরুদ্ধে কেন দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা
হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যকোনো মাধ্যমে পত্র প্রাপ্তির কিংবা ফোনে অবহিত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার
মধ্যে যথাযথ কারণ দর্শিয়ে একটি লিখিত জবাব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় বরাবর
নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাচনে
চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়নের সাবেক
চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান তুষার বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলীয়ভাবে কারণ
দর্শানোর নোটিশ হাতে পেয়েছি। যথাযথ সময়ে আমি নোটিশের জবাবও দেব। তবে ৮ মে উপজেলা পরিষদ
নির্বাচনে আমি জনগণের চাপে পড়ে প্রার্থী হয়েছি। দলীয় সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, জনগণের
ভালোবাসা, দোয়া ও সমর্থন নিয়ে শেষ পর্যন্ত আমি নির্বাচনী মাঠে থাকব। আমি টানা ১৯ বছর
বয়ড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবা করেছি। যার ফলে পুরো উপজেলায় আমার
একটা অবস্থান রয়েছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ আমাকে ভালোবাসে। তাদের ভালোবাসা ও দোয়া
নিয়েই আমি আগামীতে পথ চলতে চাই। আশা করি, এ নির্বাচনে আপামর জনগণ আমার পাশে থাকবে এবং
নির্বাচনে ভালো কিছু হবে, ইনশাআল্লাহ।
তবে বিএনপিপন্থি ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসাকে একাধিকবার মুঠোফোনে
কল দিলেও রিসিভ হয়নি।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।