নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯
তারেক রহমানকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসনের পদ থেকে বাদ দিয়েছে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের অনুপস্থিতিতে আজ দলের স্থায়ী কমিটির এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় খন্দকার মোশাররফ হোসেনের বাসায়। বৈঠকে স্থায়ী কমিটির পাঁচজন সদস্য উপস্থিত ছিলেন বলেন একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। এ বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, দলের আপাতত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের প্রয়োজন নেই। বেগম খালেদা জিয়া জেলে থাকলেও তিনি যে দল পরিচালনা করতে পারবেন না, এরকম কোন বিধান বিএনপির গঠনতন্ত্রে নেই। কাজেই, বেগম খালেদা জিয়াই চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। আপাতত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কোন প্রয়োজনীয়তা নেই বলে বৈঠকে অভিমত ব্যক্ত করা হয়। বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, দলের পুন:গঠন এবং স্থায়ী কমিটির সদস্যদের যে শুন্য পদ রয়েছে তা পূরণ এবং নতুন মহাসচিবের ব্যাপারে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কথা বলবেন। যেহেতু খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতের আপাতত অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না, এইজন্য স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। নাইকো দুর্নীতি মামলায় বেগম খালেদা জিয়া হাজিরা দিতে গেলে, তখন মওদুদ দলের সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে কথা বলবেন। সেখানে বেগম খালেদা জিয়া যাকে মহাসচিব হিসেবে মনোনিত করবেন এবং যাদেরকে স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে মনোনিত করবেন, তাদেরকে স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং মহাসচিব হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হবে।
বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি পর্যন্ত দলের কাউন্সিল দরকার নেই এবং বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশনা অনুযায়ী দল চলবে। ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, বেগম খালেদা জিয়ার মামলাগুলো এখন দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য সরকার উদ্যোগ নিয়েছে। সেজন্য কোর্টে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে নিয়মিত সাক্ষাৎ করা হবে এবং সেখানে রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে।
বিএনপির একাধিক সূত্র বলছে যে, তারেক জিয়ার ওপর ক্ষোভ এবং অনাস্থা থেকেই বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের পরই তারেকের বিরুদ্ধে মনোনয়ন বাণিজ্য, দলের বিভক্তি সৃষ্টি এবং দলের মধ্যে নানা সমস্যা তৈরীর অভিযোগ উত্থাপন হয়েছিল। সম্প্রতি দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের কাছে তিনি ইমেইল বার্তা পাঠান। যেখানে বলা হয়, হয় তারা কাজ করবেন নয় পথ ছেড়ে দিবেন। এই বার্তার পরে দলের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় এবং দলের শীর্ষ নেতারা যেমন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, মির্জা আব্বাস, ড, মঈন খানরা তারেক জিয়ার নেতৃত্ব মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায়। যদিও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এখনো তারেক জিয়ার পক্ষে বলে জানা গেছে। তিনি লন্ডনে গিয়েছিলেন তারেক জিয়ার সাক্ষাতের জন্য। লন্ডনে যখন তারেক জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের বৈঠক হয়েছে, সেই সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের এই বৈঠক তাৎপর্য বহন করে। এর মধ্য দিয়ে বিএনপিতে বিভক্তি আরও প্রকট হয়ে উঠলো বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করছেন।
এই বৈঠকে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, বিএনপির কোন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পদ নেই। কাজেই এই সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে বিএনপি মূলত তারেক জিয়ার প্রতি অনাস্থা জ্ঞাপন করলো। এরফলে খালেদা জিয়ার নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হলো। বিএনপিতে সিনিয়র নেতারা কেউই তারেক জিয়ার নেতৃত্ব মেনে নিতে পারছিলেন না। তারা মনে করেন, বেগম খালেদা জিয়ার গ্রেপ্তারের পর ঝুঁকি নিয়ে হলেও তারেক জিয়ার দেশে আসা উচিত ছিল। বিদেশে থেকে তিনি যেমন একের পর এক নির্দেশ এবং আদেশ দেন, সেগুলো দলের জন্য বুমেরাং হয়ে উঠছে। তবে বিএনপিতে এখনো তারেক জিয়ার পক্ষে একটা বিরাট শক্তি রয়েছে। যারা নতুন তৃনমুল এবং অপেক্ষাকৃত তরুণ। এই শক্তিটা স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত কিভাবে নিবেন, সেটাই দেখার বিষয়। এরফলে বিএনপিতে বিভক্তি আরেকধাপ এগিয়ে গেল বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করছে।
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।
আওয়ামী লীগ দলগতভাবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট এবং কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলায় মন্ত্রী, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাই ব্রাদার বা স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না। যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।