নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এখন স্বর্ণসময়। রাজকন্যা আর অর্ধেক রাজত্বের মতোই তিনি দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সেতুমন্ত্রী। সিনিয়রদের সাইডলাইনে বসিয়ে তিনিই এখন কার্যতঃ দলের দ্বিতীয় ব্যক্তি। দলের সভাপতির সঙ্গেও তার বোঝাপড়া ভালো। দলে তিনি প্রচুর সময় দেন। তাই তরুণ নেতারা তাকে নিয়ে খুশিই। মন্ত্রণালয়ে ঘুষ, দুর্নীতির মধ্যে নেই, এজন্য মন্ত্রণালয়েও তার সুনাম। মন্ত্রিত্ব এবং রাজনীতিকে তিনি ওরাল স্যালাইনের মতোই মিশিয়ে ফেলেছেন। প্রশাসনিক সভাতেও তিনি সাংবাদিকদের পেলে বিএনপির বা প্রতিপক্ষ রাজনীতির বিরুদ্ধে ঠাট্টা মশকরা ভালোই করেন। আওয়ামী লীগের কোন সাধারণ সম্পাদক এমন সুখের সময় কাটিয়েছেন, ইতিহাস হাতড়ে তার সন্ধান পাওয়া যায় না। কিন্তু সুখের সময় সম্ভবত কারোরই বেশিক্ষণ থাকে না। ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধেও প্রতিপক্ষ তৈরি হচ্ছে। প্রতিপক্ষরা কাউন্সিলের আগে আঁটসাঁট ভাবেই নামছেন। ত্রিমুখী শত্রুর মোকাবেলা করেই ওবায়দুল কাদেরকে সামনে এগুতে হবে। দিন যতোই যাচ্ছে ওবায়দুল কাদেরের প্রতিপক্ষরা প্রকাশ্য হচ্ছে। কারা তারা?
১. সিনিয়র নেতারা: আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা এখন একটা বিষয়ে একমত, সেটা হলো কাদেরকে থামাও। ওবায়দুল কাদেরের উপর প্রথমে ছিলো অভিমান। এখন তা বিরক্তিতে পর্যবসিত হয়েছে। দু’একজন সিনিয়র নেতার সঙ্গে কথা বলে বোঝা গেছে, তারা ওবায়দুল কাদের সবকিছুতেই বাড়াবাড়ি করছেন বলে মনে করছেন। এই নেতাদের আওয়ামী লীগে শক্ত ভিত্তি আছে। আছে অনুগত কর্মী এবং নেতা। এদের ক্রমশঃ একাট্টা করা হচ্ছে কাদেরের বিরুদ্ধে। কাউন্সিলে ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে বড় শো ডাউনের কথা কান পাতলেই শোনা যায়।
২. ১৪ দলের শরীকরা: ১৪ দলের শরীকরা আগে আড়ালে আবডালে ওবায়দুল কাদেরের সমালোচনা করতেন। এখন প্রকাশ্যেই করেন। ১৪ দলের সব শরীকই মনে করেন,‘কাদেরের কারসাজি’তেই ১৪ দল নিষ্ক্রিয়। ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন তো বলেছেন, ‘ওবায়দুল কাদেরের কথায় তো ১৪ দল চলবে না।’ জাসদের একজন নেতা বলেছেন,’১৪ দল ভাঙে তাহলে সেজন্য দায়ী থাকবেন একজন ওবায়দুল কাদের।’ ১৪ দলের এই ওবায়দুল কাদের বিরোধী অবস্থান, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের জন্য এক চ্যালেঞ্জ বৈকি। যখনই আওয়ামী লীগের ১৪ দলকে দরকার হবে, তখনই শরীকরা কাদের হটাও এর শর্ত যে দেবে তা নিশ্চিত।
৩. তৃণমূলে অসন্তোষ: আওয়ামী লীগের তৃণমূলের অনেক নেতা কর্মীর অভিযোগ ওবায়দুল কাদের স্থানীয় নেতাকর্মীদের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করেন। বাজে ব্যবহার গালাগালিও করেন। বিশেষ করে এই মেয়াদের পর ওবায়দুল কাদের অনেক বেশী কর্তৃত্ববাদী এমন অভিযোগ প্রায়ই ইদানিং শোনা যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের তৃণমূল খুব মারাত্মক শক্তি। দলের সভাপতি তাদের যথেষ্ট মূল্যায়ন করেন। তাই ক্ষুব্ধ তৃণমূল যদি দলের সভাপতিকে সাধারণ সম্পাদক সম্পর্কে অভিযোগ করে, তাহলে ওবায়দুল কাদেরের শক্ত ভিত নরম হতে সময় লাগবে না।
আওয়ামী লীগের মধ্যে একটা কথা প্রায়ই শোনা যায়, বেশি উজ্জ্বল হলে ম্লান হতেও সময় লাগে না। ওবায়দুল কাদেরের কি সেই ম্লান হওয়ার সময় এসে গেছে?
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।