নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯
বিএনপির পুনর্গঠনে ড. কামাল হোসেনের পরামর্শ চান তারেক রহমান। ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে আজ আবার টেলিফোনে কথা বলেছেন লন্ডনে পালাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া। তিনি আজ বাংলাদেশ সময় বিকেলে লন্ডন থেকে ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে টেলিফোনে এ বিষয়ে আলাপ করেন। আজ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের গনশুনানি ছিল বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট মিলনায়তনে। এই গনশুনানিতে সভাপতিত্ব করেন ড. কামাল হোসেন। এই গনশুনানির পরপরই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের টেলিফোনে ফোন করেন তারেক জিয়া। তখন ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে তিনি কথা বলেন।
একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, ড. কামাল হোসেনকে তারেক বিএনপিকে পুনর্গঠন এবং বিএনপির মধ্যকার বিরোধ মিমাংসার জন্য মধ্যস্থতা করার দায়িত্ব দিয়েছেন। তিনি বিএনপির নেতৃবৃন্দদের নিয়ে বসে পরামর্শ দেওয়ার অনুরোধ করেছেন। তারেক জিয়া ড. কামাল হোসেনকে বলেন, আপনি এখন বিএনপির অভিবাবক। আপনার হাতেই বিএনপিকে ন্যস্ত করলাম। আপনি যেভাবে ভালো বোঝেন, সেভাবেই বিএনপিকে গুছিয়ে তুলুন। ড. কামাল হোসেন বলেছেন, তিনি বিএনপির সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে খুব শীগগিরই বসবেন। বসে বিএনপি যেন সংগঠন হিসেবে শক্তিশালি হয়, সে বিষয়টি তিনি দেখবেন। এছাড়াও ড. কামাল হোসেনকে বেগম খালেদা জিয়ার মামলার ব্যাপারে পরামর্শ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন তারেক জিয়া। ড. কামাল হোসেন অবশ্য এ ব্যাপারে কোন ইতিবাচক সাড়া দেননি। তিনি বলেছেন, যে আইনজীবিরা আছেন তারা মামলা দেখছেন। বিষয়টি আদালতের নয়, বিষয়টি রাজনৈতিক। কাজেই, এই সমস্যার সমাধান রাজনৈতিকভাবেই করতে হবে। ড. কামাল হোসেন অবিলম্বে তারেক জিয়াকে জামাতের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়ার আহ্বান জানান। তারেক জিয়া এতে নীতিগতভাবে রাজি হয়েছেন বলেও একাধিক দায়িত্বিশীল সূত্র নিশ্চিত করেছেন।
বিএনপি এবং ড. কামাল হোসেনের ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন, তারেক জিয়ার টেলিফোনের মূল বিষয়টি ছিল বিএনপিতে সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন ইস্যুতে যে মতবিরোধ হচ্ছে। বিএনপির নেতারা একে অন্যের সঙ্গে কথা বলছেন না, সেজন্য বিএনপি একটি ভাঙ্গনের মুখোমুখি দাড়িয়েছে। ড. কামাল হোসেনের মাধ্যমে তারেক জিয়া চাইছে এই ভাঙ্গন ঠেকাতে। এর মাধ্যমে কার্যত ড. কামাল হোসেন বিএনপির অঘোষিত নেতায় পরিণত হলেন।
উল্লেখ্য যে, ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের আগে ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে কথা বলেছিলেন তারেক। তখন তারেক পিতার সমতুল্য বলে তুলনা করে ড. কামালের নেতৃত্বেই নির্বাচন করার অঙ্গিকার করেছিলেন। পরবর্তীতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারেই বিএনপি নির্বাচন করে এবং সেই নির্বাচনে বিএনপির ভরাডুবি হয়। যদিও ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে ঐক্যর পরও জামাতকে ২২ টি আসনে প্রতীক ছেড়ে দেয় বিএনপি। এটা নিয়ে তীব্র সমলোচনা হয়। নির্বাচনের পরে ড. কামাল হোসেন তারেক জিয়াকে জামাত ছাড়ার শর্ত আরোপ করেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এখন জামাতের মধ্যে যে টানাপোড়ন চলছে, এই প্রেক্ষিতে হয়তো খুব শীগগিরই বিএনপি আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়ে জামাতের থেকে নিজেদের আলাদা ঘোষণা দিবে। একই সঙ্গে ড. কামাল হোসেন চেয়েছেন, ২০ দল বিলুপ্ত করে একটি মাত্র মোর্চা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মাধ্যমে আন্দোলন এবং কর্মসূচীকে এগিয়ে নেওয়ার ব্যাপারেও তারেক জিয়া ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছেন।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তকে
উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে উপজেলার বিএনপিপন্থি দুই প্রার্থীকে
শোকজ করা হয়েছে।
বিএনপি থেকে শোকজ করা দুই প্রার্থী হলেন, চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী
উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর
রহমান তুষার (কাপ পিরিচ প্রতীক) ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসা (চশমা প্রতীক)।
গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র অফিসিয়াল
প্যাডে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর
নোটিশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৫ এপ্রিল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির
সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিএনপি নেতা হিসেবে
আপনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। নির্বাচনে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার এহেন মনোবৃত্তি সম্পূর্ণরূপে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং দলের
প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা।
দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে জালিয়াতির নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য
আপনার বিরুদ্ধে কেন দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা
হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যকোনো মাধ্যমে পত্র প্রাপ্তির কিংবা ফোনে অবহিত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার
মধ্যে যথাযথ কারণ দর্শিয়ে একটি লিখিত জবাব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় বরাবর
নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাচনে
চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়নের সাবেক
চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান তুষার বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলীয়ভাবে কারণ
দর্শানোর নোটিশ হাতে পেয়েছি। যথাযথ সময়ে আমি নোটিশের জবাবও দেব। তবে ৮ মে উপজেলা পরিষদ
নির্বাচনে আমি জনগণের চাপে পড়ে প্রার্থী হয়েছি। দলীয় সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, জনগণের
ভালোবাসা, দোয়া ও সমর্থন নিয়ে শেষ পর্যন্ত আমি নির্বাচনী মাঠে থাকব। আমি টানা ১৯ বছর
বয়ড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবা করেছি। যার ফলে পুরো উপজেলায় আমার
একটা অবস্থান রয়েছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ আমাকে ভালোবাসে। তাদের ভালোবাসা ও দোয়া
নিয়েই আমি আগামীতে পথ চলতে চাই। আশা করি, এ নির্বাচনে আপামর জনগণ আমার পাশে থাকবে এবং
নির্বাচনে ভালো কিছু হবে, ইনশাআল্লাহ।
তবে বিএনপিপন্থি ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসাকে একাধিকবার মুঠোফোনে
কল দিলেও রিসিভ হয়নি।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।